জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ান ডে-তে নামার আগে ভারত অধিনায়ক বলেছিলেন, সিরিজটায় মজা করতে চান তাঁরা। বুধবার হারারের প্রথম ম্যাচ যে ভাবে জিতল তরুণ ক্যাপ্টেন কোহলির তরুণ টিম ইন্ডিয়া, তাতে মজা করারই কথা।
বিশেষ করে বিরাট কোহলির। ওয়ান ডে কেরিয়ারের পনেরো নম্বর সেঞ্চুরিটা এ দিন হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সেরে ফেললেন তিনি, নিজের ১০৯ নম্বর ম্যাচে। ছুঁয়ে ফেললেন বীরেন্দ্র সহবাগের ওয়ান ডে সেঞ্চুরির সংখ্যা। সহবাগের ১৫টা সেঞ্চুরি এসেছিল ২৫১ ম্যাচে। “জয় দিয়ে সফর শুরু করা সব সময়ই খুব ভাল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি আজ নিজের খেলা নিয়েও খুব খুশি। শুরুর দিকে বল একটু মুভ করছিল। তখন দরকার ছিল পার্সেন্টেজ ক্রিকেট খেলে স্ট্রাইক রোটেট করে পরের দিকে বড় শট খেলা,” ম্যাচের পরে বলেছেন ভারত অধিনায়ক এবং বুধবারের ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ১০৮ বলে তিনি করেন ১১৫, স্ট্রাইকরেট ১০৬.৪৮।
গত তিন বছরে ওয়ান ডে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে উঠে আসা কোহলি এর আগেও বহু বার রান তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন। তবে এ দিনের সেঞ্চুরি যে তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে সহজ সেঞ্চুরির মধ্যে থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকার কথা নয়। জিম্বাবোয়ের ২২৮ রান যে ভারত পাঁচ ওভার বাকি থাকতেই তুলে দিল, তার পিছনে রয়েছে স্বয়ং অধিনায়ক।
ভারতের হয়ে ওয়ান ডে অভিষেক ঘটানো অম্বাতি রায়ডুর (৬৩ নট আউট) সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ১৫৯ রান তোলেন কোহলি। |
তবে জয়ের জন্য পুরো কৃতিত্ব মোটেই নিজে নিতে চান না কোহলি। জিম্বাবোয়েকে ২২৮ রানে আটকে রাখার জন্য তিনি প্রশংসা করেছেন তাঁর টিমের তরুণ বোলিং বিভাগেরও। “প্রথম দিকে আমাদের বোলাররা খুব ভাল বল করেছে। সকালের দিকে বলটা ভালই মুভ করছিল। আর এখন নতুন নিয়মে দুটো নতুন বল নিয়ে খেলা হচ্ছে, তাই কোনও টিমকেই হালকা ভাবে নেওয়া যায় না,” বলছেন কোহলি। আর রায়ডু-প্রসঙ্গে ভারতীয় অধিনায়কের বক্তব্য, “অনেক দিন পরে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছে রায়ডু। আর প্রথম সুযোগটাকেই দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছে।”
আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলা রায়ডু মাঝে কয়েক বছর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি, কারণ তখন তিনি বিদ্রোহী আইসিএলে খেলতেন। অবশেষে ইন্ডিয়া ক্যাপ পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত রায়ডু, “আমার অপেক্ষাটা সত্যিই অনেক দিনের ছিল। কাল রাতে তো ঘুমোতেই পারিনি। মাথাটা একদম ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। তবে আজ আমার লক্ষ্য ছিল খেলাটা উপভোগ করা।”
হারারের নির্জীব পিচে সকালের দিকেই একমাত্র বোলাররা কিছু সাহায্য পেয়েছিলেন। ভারতের দুই ওপেনিং বোলার বিনয় কুমার (১-৫৭) এবং মহম্মদ সামি (১-৪৫) বল মুভও করাচ্ছিলেন। তখন জিম্বাবোয়ের দুই ওপেনারের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য ক্রিজে টিকে থাকা। যার জন্য ভাল রকম ধাক্কা খেল তাদের রানরেট। টিমের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করলেন সিকন্দর রাজা (৮২)। সিয়ালকোটে জন্ম নেওয়া এই ব্যাটসম্যান হারারের ক্রিকেট-দর্শকদের হতাশ করেননি।
জিম্বাবোয়ের টপ অর্ডারের উপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করেন ভারতীয় স্পিনাররাও। রবীন্দ্র জাডেজা তো ভাল ছন্দে ছিলেনই। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে গেলেন প্রায় দু’বছর পরে ওয়ান ডে খেলতে নামা অমিত মিশ্র (৩-৪৩)।
|
জিম্বাবোয়ে |
সিবান্দা এলবিডব্লিউ মিশ্র ৩৪
রাজা বো মিশ্র ৮২
উইলিয়ামস বো রায়না ১৫
মাসাকাদজা বো মিশ্র ১১
টেলর ক রায়না বো উনাদকট ১২
ওয়ালার বো সামি ২
চিগুম্বুরা নট আউট ৪৩
মুটমবডজি ক ধবন বো বিনয় ৮
উতসেয়া নট আউট ৮
অতিরিক্ত ১৩
মোট (৫০ ওভারে) ২২৮-৭।
পতন: ৭২, ১০৫, ১১৯, ১৬২, ১৬৬, ১৭৬, ২০৫।
বোলিং: বিনয় ৯-১-৫৭-১, সামি ১০-১-৪৫-১, উনাদকট ১০-১-৩৯-১,
জাডেজা ১০-৩-৩৩-০, মিশ্র ১০-১-৪৩-৩, রায়না ১-০-২-১। |
ভারত |
রোহিত ক টেলর বো চিগুম্বুরা ২০
ধবন ক ওয়ালার বো জার্ভিস ১৭
কোহলি ক সিবান্দা বো উতসেয়া ১১৫
রায়ডু নট আউট ৬৩
রায়না ক রাজা বো উতসেয়া ০
কার্তিক নট আউট ৮
অতিরিক্ত ৭
মোট (৪৪.৫ ওভারে) ২৩০-৪।
পতন: ২৬, ৫৭, ২১৬, ২১৬।
বোলিং: জার্ভিস ৮-০-৪০-১, চাতারা ৯-০-৩০-০,
চিগুম্বুরা ৫-০-৩০-১,
উতসেয়া ১০-০-৩৪-২,
মুটমবডজি ৭.৫-০-৬৫-০,
উইলিয়ামস ৩-০-১৮-০,
মাসাকাদজা ২-০-১২-০। |
|
|