শহরের একমাত্র বৈদ্যুতিক চুল্লিযুক্ত বীরভানপুর শ্মশান থেকে মাঝেমধ্যেই দুর্গন্ধ বেরোয় বলে অভিযোগ শ্মশানযাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, দুর্গন্ধে বাড়িতে টেকা দায় হয়ে যাচ্ছে। দাহ করতে এসেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, একটি বিশেষ দল পাঠিয়ে বিষয়টির খোঁজখবর করতে বলা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। |
নিয়মিত সাফাই হয় না বেওয়ারিশ লাশের গাড়ি। |
বীরভানপুরে দামোদরের পাড়ে আশিসনগর কলোনি ও বিদ্যাসাগর কলোনি লাগোয়া এলাকায় শহরের এই প্রধান শ্মশান ঘাটটি বহু পুরনো। আগে এটি জনবসতি থেকে বেশ দূরে ছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি বদলে যায়। কাঠের চিতার কালো ধোঁয়া ও মৃতদেহ পোড়ানোর গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারা শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি লাগানোর দাবি জানান। ২০০২ সালে পুরসভার পক্ষ থেকে শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বড় পাকা ভবনও নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বৈদ্যুতিক চুল্লি সরবরাহের বরাত নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। টেন্ডার ডেকে এক ঠিকাদারকে বরাত দেয় পুরসভা। কিন্তু অন্য আবেদনকারী তার বিরোধিতা করে আদালতে মামলা ঠুকে দেয়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুনরায় টেন্ডার ডাকা হয়। তারপরেও আরেক আবেদনকারী ফের হাইকোর্টে মামলা রুজু করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৫ সালে বিষয়টি মেটে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অফ স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম টাউনস’ প্রকল্পের অধীনে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি চুল্লির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। শ্মশান পরিচালন কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি চুল্লির একটি নিয়মিত ব্যবহার হয়। অন্যটি ‘আপতকালীন’ ব্যবস্থা হিসাবে রাখা থাকে।
বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হওয়ার পর থেকে মৃতদেহ পোড়ানোর বাজে গন্ধ আর পান না আশপাশের বাসিন্দারা। তবে গত কয়েকদিন ধরে শ্মশান থেকে মাঝে মাঝে দুর্গন্ধ ভেসে আসছে বলে অভিযোগ তাঁদের। বীরভানপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজু আঁকুড়ে বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে বিচ্ছিরি গন্ধ পাচ্ছি। মনে হয়, বেওয়ারিশ লাশ নিয়ে আসা পুরসভার গাড়িটি নিয়মিত পরিস্কার না করার জন্যই এমন বাজে গন্ধ ছড়াচ্ছে। শ্মশানের পাশ দিয়ে গেলেও গন্ধ পাওয়া যায়।” একই অভিযোগ তুলেছেন শ্মশানযাত্রীরাও। বি-জোনের বাসিন্দা বিধান চট্টোপাধ্যায় বহু দেহ দাহ করেছেন এই শ্মশানে। তিনি বলেন, “আগে বহুবার শ্মশানে এসেছি। কিন্তু দিন কয়েক আগে শ্মশানে গিয়ে দেখি, দুর্গন্ধে নাক জ্বালা করছে।” তিনি জানান, দাহ করার পরে পড়ে থাকা অবশেষ একটি বিশেষ খালে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়। বিশেষ পদ্ধতির সাহায্যে সেই অবশেষ প্রকৃতিতে মিশিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁর অনুমান, বর্ষায় দামোদর উপচে খালে জল ঢুকে যাওয়ার জন্যই বাজে গন্ধ ছড়াচ্ছে। |
শ্মশানের পাশে পড়ে আবর্জনা। |
তবে শ্মশান পরিচালন কমিটির সদস্য শ্যামল আচার্য জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে এই ধরণের কোনও অভিযোগ এখনও কেউ করেননি। তিনি বলেন, “শ্মশানযাত্রী বা স্থানীয় বাসিন্দারা কেউ কোনও সমস্যার কথা জানাননি। তবে যদি কোনও গাফিলতি থাকে তা দূর করার চেষ্টা করা হবে।” মেয়র অপূর্ববাবু অবশ্য জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ একটি দল শ্মশানে গিয়ে এই বিষয়ে খোঁজখবর করেছে। তিনি বলেন, “বীরভানপুর শ্মশানে কিছু কিছু সমস্যা আছে বলে শুনেছি। একটি বিশেষ দল গিয়েছিল সেখানে। কি কারণে কটূ গন্ধ ছড়াচ্ছে তা খতিয়ে দেখেছে দলটি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|
সড়কে হাতি, অবরোধ
নিজস্ব সংবাদদাতা • বড়জোড়া |
জঙ্গল ছেড়ে সড়কের উপর হাতি উঠে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল। যার জেরে বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ হয়ে গেল যান চলাচল। রবিবার রাতে বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কে বড়জোড়ায় এমন কাণ্ড ঘটে। বাসিন্দারা শেষে পথ অবরোধে নামেন। বনকর্মীরা ছুটে এসে রাস্তা থেকে হাতি সরিয়ে বাসিন্দাদের ঠান্ডা করেন। ফের শুরু হয় যান চলাচল। বাসিন্দাদের আরও ক্ষোভ, হাতিটি আগেও এ ভাবে রাস্তা আটকেছে, বড়জোড়া বাজারে ভাঙচুরও করেছে। কিন্তু বনকর্মীদের এতে হেলদোল দেখা যায়নি। বড়জোড়ার রেঞ্জ অফিসার পীযূষকান্তি ঘোষ বলেন, “ওই হাতিটির আচরণ আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। খাবারের সন্ধানে বাজারে ঢুকে পড়ছে, ব্যস্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছে। ওকে জঙ্গলে আটকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |