বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা এবং প্রতারকদের ধরতে সরাসরি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)-র হাতে ক্ষমতা তুলে দিল কেন্দ্র।
সেবি আইন সংশোধনে মন্ত্রিসভা সায় দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই অর্ডিন্যান্স এনে তা কার্যকর করা হল। সারদা কাণ্ডের জেরেই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত, যাতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলে অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করা কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব না-হয়। অন্য দিকে, সাধারণ ভাবে অর্থনীতিকে বৃদ্ধির সড়কে ফেরাতে সোনা আমদানির উপর সোমবার আরও কড়াকড়ি আরোপ করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আমদানির খরচ কমিয়ে চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতিকে বাগে আনতেই এই সিদ্ধান্ত। টাকার পড়তি দাম এই খরচ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সোমবারও ডলারে টাকা পড়েছে ৩৭ পয়সা, যা গত দু’সপ্তাহে সর্বোচ্চ। ফলে দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৯.৭২ টাকা।
সোনা আমদানির উপর জারি করা নয়া বিধিনিষেধগুলি হল:
• সব ব্যাঙ্ক এবং অনুমোদিত এজেন্সিকে আমদানি করা সোনার অন্তত ২০ শতাংশ রফতানি করতে হবে
• সমপরিমাণ সোনা রাখতে হবে আমদানি শুল্ক বিভাগের গুদামে।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তে সোনার দাম অবশ্য বাড়বে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। তবে এতে রফতানি বাড়বে।
ঘাটতি কমাতে অনাবাসী ভারতীয়দের এ দেশে ডলারে লগ্নি বাড়াতেও তৎপর কেন্দ্র। ব্যাঙ্কগুলিকে অনাবাসী আমানতে সুদ বড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। ২০০০ কোটি ডলারের মতো এই খাতে আসবে বলে অনুমান। তবে অনাবাসীদের জন্য বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করবে না কেন্দ্র। তাদের এই সিদ্ধান্তও এ দিন টেনে নামায় টাকাকে।
এ দিকে, গত ১৭ জুলাই বাজার নিয়ন্ত্রকের হাতে বাড়তি অস্ত্র তুলে দিতে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনে সায় দেয় মন্ত্রিসভা। গত সপ্তাহেই এ ব্যাপারে অর্ডিন্যান্সও জারি করেন রাষ্ট্রপতি। যার জেরে আর্থিক সংস্থার চত্বরে তল্লাশি চালানো, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা, সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার অধিকার সরাসরি তুলে দেওয়া হল সেবি-র হাতে। টাকা তুলে তা গায়েব করার চেষ্টা হলেই সেবি তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। ১০০ কোটি টাকা তুললেই কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা নজরদারির আওতায় আসবে। তথ্য জানার জন্য সেবি ভারতের এমনকী বিদেশের অন্য নিয়ন্ত্রকের থেকেও সাহায্য নিতে পারবে। ১৯৯৮-র ৬ মার্চ থেকে তথ্য তলব করা যাবে। টাকা ফেরত দিতে পারেনি, এমন সংস্থাও বকেয়া মামলা মিটিয়ে নিতে সেবি-র সঙ্গে রফায় আসতে পারবে। ২০১২-র ২০ এপ্রিল থেকে এই সুবিধা মিলবে।
|
সেবি-র অস্ত্র |
• সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা
• টাকা ফেরাতে দেরি করলে,
গ্রেফতারের স্বাধীনতা |
• আইন ভেঙে হাতে আসা মুনাফার টাকা
ফেরাতে নির্দেশ দেওয়ার অধিকার
• একই রকম নির্দেশ জারি করা যাবে
বেআইনি ভাবে লোকসান এড়ালেও |
|
• সন্দেহভাজন সম্পর্কে তথ্য পেতে ভাঙা
যাবে তালা, আলমারি বা লকার
• তল্লাশি করা যাবে অফিস চত্বরে, বাড়িতে।
ঢুঁ মারা যাবে অভিযুক্তদের গাড়ি, জলযান, বিমানেও |
সংস্থা তো বটেই, কোনও ব্যক্তি আইন
ভেঙে বাজার থেকে টাকা তুললেও ব্যবস্থা |
|