দিনভর জল নেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ফলে চরম সমস্যায় রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিদ্যুত্বাহী কেবলে ত্রুটি থাকায় রবিবার সারাদিন পাম্প চালিয়ে মূল জলাধারে জল তোলা যায়নি। ফলে জল সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। এ দিন দুপুরে পুরসভা থেকে জলের ট্যাঙ্ক এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫৬০ টি শয্যা রয়েছে। কমবেশি ৭৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। সঙ্গে থাকেন তাঁদের পরিবারের লোকজন। ফলে এ দিন জল সরবরাহ ব্যাহত থাকায় সমস্যায় পড়েন প্রচুর মানুষ। পরিস্থিতি দেখে মেদিনীপুর পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুরসভা থেকে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়। |
পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পর প্রশাসক হিসেবে বর্তমানে পুরসভার দায়িত্বে রয়েছেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত। তাঁর নির্দেশে দুপুরেই জলের দু’টি ট্যাঙ্ক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু, তাতে পানীয় জলের চাহিদা মিটলেও অন্যান্য ব্যবহারিক কাজকমের্র জন্য জলের চাহিদা মেটেনি। এমন পরিস্থিতির জন্য রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা দুষছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই। তাঁদের বক্তব্য, আগেও এমন সমস্যা হয়েছে। বিদ্যুত্ সরবরাহ বিঘ্নিত হলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করার জন্য কর্তৃপক্ষের বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা উচিত।
হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “বিদ্যুতের কেবলে ত্রুটি থাকায় জলাধারে জল তোলা যায়নি। তাই জল সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। কেবল মেরামতের কাজ চলছে।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে, শহরের অন্য এলাকায় লোডশেডিং হলেও এখানে বিদ্যুত্ থাকে। হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, “বিদ্যুত্বাহী তারে ত্রুটি দেখা দিলে তড়িঘড়ি কারও কিছু করার থাকে না। মেরামত করতে সময় তো লাগবেই।” জেনারেটর চালিয়ে কেন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেল না? এই প্রশ্নের উত্তরে ওই আধিকারিক বলেন, “সেই চেষ্টাও করা হয়েছে।” রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসেন। সকালে পানীয় জল পেতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি আগেই পুরসভা থেকে জলের ট্যাঙ্ক আনার ব্যবস্থা করতেন, তাহলেও প্রচুর মানুষের সুবিধে হত। এ বিষয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সকালে তাঁদের সমস্যার কথা জানানোই হয়নি। তাঁদের জানানোর কিছু পরেই পুরসভা থেকে দু’টি জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়।
এর আগেও একবার বিদ্যুত্বাহী তারে ত্রুটি থাকায় হাসপাতালের একাংশে বিদ্যুত্ সরবরাহ ব্যাহত হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বার অবশ্য তেমন সমস্যা হয়নি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্যুত্ সরবরাহ স্বাভাবিকই ছিল। তবে, বিদ্যুতের কেবলে ত্রুটি থাকায় পাম্প চালিয়ে জলাধারে জল তোলা যায়নি। সকাল থেকে জলের অভাবে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “পানীয় জল না পেলে সমস্যা হয়ই। ফলে ওই ক্ষোভ স্বাভাবিক। আগামী দিনে বিদ্যুত্বাহী তারে ত্রুটি দেখা দিলেও তড়িঘড়ি যাতে জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, তা দেখা হবে। প্রয়োজনে কিছু পদক্ষেপ করা হবে।” |