এই সে দিনও বিশ্ব ক্রিকেটের শাসক অস্ট্রেলিয়ার অবিস্মরণীয় ধস! মাঠ আর মাঠের বাইরেও।
লর্ডসে ক্লার্কের দল যেমন অ্যাসেজ সিরিজে টানা দ্বিতীয় হারল। অন্য দিকে তেমনি শাস্তিপ্রাপ্ত অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের দাদার টুইটার বোমা ও ইংল্যান্ড সফরেই অপসারিত কোচ মিকি আর্থারের তোপে বেসামাল ডনের দেশের ক্রিকেট প্রশাসনও। লর্ডস হারের মধ্যেও অবশ্য ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এক বিবৃতিতে মিকির বেশির ভাগ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। “মিকির অনেক অভিযোগ আমরা মানছি না। সেগুলো কী, প্রকাশ করা যাবে না। শুধু এটুকু বলব, আইনগত ভাবে আমরা ভাল জায়গায় আছি। আমরা মনে করি ওকে যথেষ্ট সাহায্য করা হয়েছিল। মনে হয় সব ভাল ভাবেই মিটবে।”
৫৮৩ রান তাড়া করতে নেমে আরও এক বার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং (২৩৫)। শুধু ৩৬-৩ থেকে কিছুক্ষণের জন্য অধিনায়ক ক্লার্কের (৫১) সঙ্গে পাক বংশোদ্ভুত খোয়াজার (৫৪) প্রতিরোধটুকু ছাড়া। কিন্তু সেই প্রতিরোধও যে কতটা পলকা সেটা চতুর্থ উইকেটে ৯৮ রান যোগ করার পরেও দুই জমে ওঠা ব্যাটসম্যানেরই অনিয়মিত ইংরেজ অফস্পিনার জো রুট-কে জোড়া উইকেট উপহার দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরাতেই স্পষ্ট। এর পর শেষ উইকেটে প্যাটিনসনের (৩৫) ৯১ বল সংগ্রাম আর ৪০ বল খেলা হ্যারিসকে নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলাকে বাড়তি আধঘণ্টা টেনে নিয়ে যাওয়াটা পরিসংখ্যানবিদের কাছেই হয়তো শুধু তাৎপর্যের। অজি সমর্থকদের কাছে আদৌ নয়। কারণ ৩৪৭ রানে হেরে অ্যাসেজ সিরিজে দু’ম্যাচের পর অস্ট্রেলিয়া ০-২ পিছিয়ে থাকছে। |
ক্লার্ক আউট হতেই নিশ্চিত হল ভরাডুবি। ছবি: রয়টার্স |
লর্ডস টেস্টেই ১৮০ করা ইংরেজ ওপেনার জো রুটকে বার্মিংহ্যাম পাব-এ ঘুসি মেরে জিম্বাবোয়েতে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলে ‘নির্বাসন’ কাটানো ওয়ার্নারের দাদা স্টিভ দেশের নির্বাচকদের টুইটারে গালিগালাজ দেওয়ার পাশাপাশি শেন ওয়াটসনকে নিজের আউটের ‘ভুলভাল’ ডিআরএস চেয়ে দলের রিভিউ কোটা নষ্ট করার জন্য রেয়াত করেননি। তবে ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে বুঝে তিনি দাবি করেছেন, অন্য কেউ তাঁর নামে টুইট করেছেন। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেন তিনি। মিকি আর্থার অবশ্য সাংবাদিক বৈঠকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, “লিখিত ভাবে আমাকে বরখাস্তের কথা জানানো হয়নি। বকেয়াও মেটানো হয়নি।”
মাঠের বাইরের এ সব বাউন্সার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া হয়তো সামলে নেবে। কিন্তু বাইশ গজে অস্ট্রেলিয়ার বিভীষিকাময় ব্যাটিং কে সামলাবে? আজ রুট অবশেষে ১৮০-তে আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ড ৩৪৯-৭ স্কোরে দ্বিতীয় ইনিংস ছাড়ার পর অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৫৮৩ তাড়া করে জেতা দুঃসাধ্য সবার জানা। কিন্তু তা বলে প্রথম ইনিংসে সাকুল্যে ১২৮ তোলার পর দ্বিতীয় ইনিংসও এক দিনেই সাঙ্গ হওয়ার করুণ দশা দেখতে হবে কে জানত! অবস্থা এতটাই খারাপ যে, কমেন্ট্রি বক্সে গিলক্রিস্ট, ওয়ার্ন, ল্যাঙ্গার, ম্যাকগ্রাদের দেখতে দেখতে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট রসিকের মনে হতেই পারে, আহা! যদি এঁরা এখানে না থেকে মাঠের ভেতরে থাকতেন এখন! |