মালদহে চালু স্লোগান‘কংগ্রেস ছাড়ো, ক্ষমতায় বাড়ো’।
অর্থাৎ গনি পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেই তৃণমূলে তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি বেড়ে যাচ্ছে। দৃষ্টান্ত সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী।
শুধু সাবিত্রী, কৃষ্ণেন্দু নন, খোদ গনিখান চৌধুরীর ভাগ্নি শাওনাওয়াজ কাদরি কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায় তাকে রাজ্য মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন পদে বসিয়েছেন। সেই আশায় মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উজ্জ্বল চৌধুরী দু’মাস আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ‘পুরস্কার হিসেবে’ প্রথমেই তাঁকে ২৮ নম্বর জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
জেলা পরিষদের ২৮ নম্বরের কাজিগ্রাম, যদুপুর ১, যদুপুর ২, মহদিপুর চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। গত বিধানসভা উপনির্বাচনে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছেন। নিজে যে ভাবে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে তিন হাজারেরও বেশি ভোটে ‘লিড’ দিয়েছিলেন, সে ভাবেই উজ্জ্বলবাবুকেও ২৮ নম্বর আসনে জেতাতে চান কৃষ্ণেন্দুবাবু।
সেই জন্যই হয়তো প্রাক্তন সভাধিপতি বলছেন, “আমি আমার ‘ভগবান নারায়ণ’-এর ভরসায় ভোটে দাঁড়িয়েছি। নারায়ণ যদি আমাকে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন, তাই-ই করব।” আপনার নারায়ণ মানে? উজ্জ্বলবাবু মৃদু হেসে বলেন, “আমাদের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ।” সেই কারণে ওই আসনের ভোটকে ‘মর্যাদার লড়াই’ বলে স্বীকার করেছেন কৃষ্ণেন্দুবাবুও।
তা বলে উজ্জ্বলবাবুর ভোটের লড়াই কিন্তু তা বলে একেবারেই মসৃণ নয়। সিপিএম যাকে প্রার্থী করেছে সেই নীরেন চৌধুরী উজ্জ্বলবাবুর আত্মীয়। যিনি ওই আসনের জয়ী প্রার্থী। এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব। যে কোনও বিপদে-আপদে ডাকলেই নাকি নীরেনবাবুকে পাওয়া যায়। প্রতিদ্বন্দ্বীকে বন্ধু হিসেবেই দেখতে চান নীরেনবাবু।
তবে ‘বন্ধু’ হলেও লড়াইয়ে একচুল জমি ছাড়তে নারাজ সিপিএম প্রার্থীও। তাঁর দাবি, “গতবার এই আসন থেকে আমি জিতেছি। কাজ করার চেষ্টা করেছি। অথচ পাঁচ বছর সভাধিপতি হয়েও উজ্জ্বলবাবু আমাদের এলাকার জন্য কিছুই করেননি। এলাকায় একদিনও পা দেননি। এলাকার মানুষ ওঁকে চেনেন না। মানুষ ওকে কেন ভোট দেবে?”
উজ্জ্বলবাবুর আর এক কাঁটা গনি পরিবার। জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খানের বক্তব্য, “লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। আমরাই উজ্জ্বলকে সভাধিপতি করেছিলাম। এ বার ও বুঝবে কত ধানে কত চাল।’’ |