কংগ্রেস বিধায়কের উপরে হামলার পর হাওড়ায় এ বার আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের বিধায়কও। দিন কয়েক আগেই আমতার বিধায়ক অসিত মিত্রকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মারের চোটে মাথা ফাটে তাঁর। এ বার পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশন মল্লিকের উপরে আক্রমণের ঘটনায় অভিযুক্ত কংগ্রেস এবং সিপিএম। বিধায়ক আক্রান্ত হওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ ও র্যাফ। হামলাকারীদের হটিয়ে দিয়ে বিধায়ককে নিয়ে যাওয়া হয় গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা জানান, তাঁর হাতে ও পায়ে আঘাত লাগলেও তা তেমন গুরুতর নয়। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে হামলার ঘটনাটি ঘটে পাঁচলার শুভরআড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মৌলবীপাড়ায়। আগের রাতে ওই পাড়ায় তাস খেলা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় তিন দলের মধ্যে। পরে তা মিটে গেলেও শনিবার সকালে ফের বছর পনেরোর দুই কিশোর ওই ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারপিট শুরু করে। দুই কিশোরের একজনের বাড়ি গুলশন মল্লিকের পাড়ায়। কংগ্রেস ও সিপিএমের অভিযোগ, মারপিটের পরে সেই কিশোর বিধায়কের বাড়িতে গিয়ে অন্য কিশোরের বিরুদ্ধে নালিশ করে। সঙ্গে সঙ্গে গুলশন তাঁর দলীয় কয়েকজন কর্মী-সমর্থক ও দেহরক্ষীকে নিয়ে চলে আসেন মৌলবীপাড়ায়। অভিযুক্ত কিশোরের মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেই সময়ই গুলশানকে ঘিরে ধরেন এলাকার কংগ্রেস এবং সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা। সেই সময়ই গুলশনের সঙ্গে থাকা কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে অন্য দলের কর্মী-সমর্থকদের মারপিট বেধে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও তৃণমূল কর্মীরা সেখানে এসে জড়ো হয়। চলতে থাকে পরস্পরের দিকে ইট ও বোমা ছোড়াছুড়ি। গুলশনের পায়ে বোমার টুকরো লাগলে তিনি পড়ে যান। বিধায়ককে আক্রান্ত হতে দেখে তাঁর দেহরক্ষী শুন্যে পাঁচ রাউণ্ড গুলি চালান। পরে পুলিশ ও র্যাফ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুলশান জানান, দুই কিশোরের মারপিটের সঙ্গে এই ঘটনার সম্পর্ক নেই। তাঁর দাবি, গাববেড়িয়া বেসিক প্রাথমিক স্কুলের বুথে তাঁর ভোটকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় কংগ্রেস ও সিপিএম বিনা প্ররোচনায় তাঁকে আক্রমণ করে।” নির্বাচনে সুবিধা করতে না পেরে খুন করার উদ্দেশ্যেই তাঁকে বোমা মারা হয় বলে অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের। এ দিন গুলশনকে দেখতে যান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় ও রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিপিএম ও কংগ্রেসের তরফে পাল্টা অভিযোগে জানানো হয়েছে, বাচ্চাদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে বিধায়কই তাঁর দলবল নিয়ে হামলা চালান। পরে সেখানকার লোকেরা প্রতিরোধ করলে পালাতে গিয়ে নিজেই পড়ে গিয়ে আহত হন। পুলিশ জানিয়েছে, বিধায়ক নিজে তাঁর উপরে হামলার ঘটনার এফআইআর করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দোষীদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |