বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়
পাঁচ বছরেও সমাবর্তন হয়নি, মেলেনি ডিগ্রি
যাত্রা শুরু হয়েছে ২০০৮ সালে। পাঁচ-পাঁচটা বছর কাটতে চলল। ইতিমধ্যে লাখখানেকের বেশি ছাত্রছাত্রী পাশ করে বেরিয়েও গিয়েছেন। কিন্তু এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁদের কারও হাতেই কোনও ডিগ্রি তুলে দেওয়া যায়নি। কারণ বারাসতের পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত এক বারও সমাবর্তন হয়নি।
গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি সমাবর্তন করার একটা উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু আয়োজন অনেকটা এগিয়ে গেলেও শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় ওই অনুষ্ঠান আর হয়নি। এ বার আবার তাঁরা সমাবর্তন করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। এ বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে এক দফা কথাও বলেছেন উপাচার্য কৌশিক গুপ্ত।
কিন্তু আগের বার সমাবর্তন বাতিল হয়ে গিয়েছিল কেন?
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১২-য় যে সমাবর্তন হবে, সেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল তার আগের বছর। এবং সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাম আমলে গঠিত কাউন্সিল। রাজ্যে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরে কাউন্সিল ভেঙে নতুন করে গড়া হয়। নবগঠিত কাউন্সিল আগের জমানার অনেক সিদ্ধান্তই বাতিল করে দেয়। সেই সঙ্গেই সমাবর্তনের সিদ্ধান্তও বাতিল হয়েছিল বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও অন্য একটি পক্ষের দাবি, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ‘স্ট্যাটিউট’ বা কার্যবিধি না-থাকায় কাউন্সিলও কোনও বিধিসম্মত সংস্থা হতে পারে না। তাই সমাবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া সমাবর্তন বাতিলের খবর জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল রাজভবন। তাই সেখানে কাউন্সিলের কোনও ভূমিকা ছিল না বলে ওই পক্ষের দাবি।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও অবশ্য কোনও কার্যবিধি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বিধি তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সরকার তাতে কিছু সংশোধন চায়। সেই সব সংশোধন করে ফের তা রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, সংশোধিত বিধিটি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল (ইসি)-এ আলোচনা করে সেটি পাঠাতে বলা হয়েছে সরকারের কাছে। তার পরে সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে। বিধি সম্পূর্ণ করার কাজ চলছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিধি না-থাকার সঙ্গে সমাবর্তনের যোগ নেই বলেই মনে করছেন। উপাচার্য কৌশিকবাবু নিজেই জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন রয়েছে। সেই অনুযায়ী সমাবর্তন করা যেতেই পারে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গত শুক্রবার আচার্য-রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করে সমাবর্তনের ব্যাপারে আলোচনা করেছেন কৌশিকবাবু। এক কর্তার কথায়, “এত ছাত্রছাত্রী পাশ করে গিয়েছেন অথচ সমাবর্তন হচ্ছে না, এটা ঠিক নয়। সমাবর্তনের আয়োজন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। সেই কাজটাই করার চেষ্টা চলছে।”
আচার্য বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি-তে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন উপাচার্যকে। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী সমাবর্তন উপলক্ষে অগস্টে কাউন্সিলের বিশেষ বৈঠক ডাকার অনুমতি চেয়ে গত মঙ্গলবার রাজ্যপালের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়, তা আচার্য-রাজ্যপালকে জানানো হবে। রাজ্যপালের অনুমতি পেলে চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের গোড়ায় সমাবর্তনের আয়োজন করা যাবে বলে কর্তৃপক্ষের আশা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.