এ আর্মির লোকেদের জিনিস রে ভাই! ই-গেমেও দেখে থাকবে। হাবেভাবে গাড়ি কিন্তু আসলে চার চাকার জঙ্গি বাইক। কোয়াড নাম শুনেই বুঝেছ নিশ্চয়ই? এ জিনিসের আসল এক্স ফ্যাক্টর হল এর স্প্রিং আর তেল ভরা একটা শক অ্যাবজভার। অনেকটা পিস্টনের মতো। শক্ত লাগল? আরে এই খটোমটো ফিচারটার জন্য তো এ বাইক শূন্যে লাফাতে পারে। গঁগঁগঁ করতে করতে এবড়োখেবড়ো পাহাড়ে উঠে যায়, আবার বীরবিক্রমে ঝাঁপ ছোটখাটো খাদেও ঝাঁপ দেয়, এক দিকে হেলে দেওয়ালেও ছোটে। এর নানা রকম রেপ্লিকা বিভিন্ন অ্যামিউজমেন্ট পার্কে বসানো থাকে, আর আসলগুলো পুরোদস্তুর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্টান্টম্যানরা ব্যবহার করে। ফুল রোমহর্ষক ব্যাপার। শুদ্দু ফিকশন দুনিয়ার অ্যাকশন হিরোকে মানায়। তাই তোমরা এটিকে ভুলেও স্বপ্ন দেখবে না কিন্তু। |
নির্ঘাত বিদেশি ছবিতে এটিকে দেখে হাঁ হয়েছ। ফ্যাক্টরি বা খনির চত্বরে একটা চোখ টানা দু’চাকা। বাইক-সাইকেল নয়, ওটা সেগওয়ে। দুটো গাবদা চাকার ওপর এক চিলতে পা রাখার জায়গা। তার ওপর সোজা দাঁড়িয়ে কেউ, নির্ভীক চোখমুখে হ্যান্ডেল ধরে। ওটা চলে কী করে জানো? ওপরে দাঁড়ানো লোকটার ব্যালেন্সের হেরফেরটা বুঝে বুঝে। সামনে যেতে হলে ওই পাদানিতে পাটা একটু এগিয়ে দিতে হবে। গাড়ির ব্যালেন্স বিগড়োলে, সেটা সামলাতেই সে আপনা হতে খানিক সামনে এগিয়ে যাবে। ব্যস, তাতেই কাজ হাসিল। সেগওয়ের চলার ফর্মুলাটাই তাই। আগে, পিছে, ডাইনে, বাঁয়ে যেদিকে যেতে চাও, জাস্ট নিজের ওজনটা এক বার সে দিকটায় হেলিয়ে দেবে। গাড়ির ভেতরে একটা কম্পিউটার, ব্যালেন্স-এর হেলদোল হলেই মোটরকে তুরন্ত সিগন্যাল পাঠিয়ে দেয়। অমনি চাকা চলে গড়গড়িয়ে। দরকার পড়লে ছোটেও। সবটাই নাকি মাখনের মতো। মসৃণ, স্মুদ। হবে না? সেগওয়ে শব্দটার ‘সেগ’ অংশের মানেই তো তাই! |
তিন চাকারও হয় আবার চার চাকার মানে কোয়াড বাইকও হতে পারে। ছ’চাকারও হয় নাকি। সত্যি বলতে নামটা শুধুই এটিভি। অল টেরেন ভেহিকল্স। ইয়েস। এটিতে সওয়ার হয়ে রণে, বনে, জলে, জঙ্গলে, পাহাড়ে ও বালিতে যেখানে ইচ্ছে চরকিপাক খেতে পারো। এর ইঞ্জিন মহাশয়, স্পার্ক প্লাগ ইত্যাদি জটিল কলকব্জা গাড়ির বেশ উচ্চ অংশে অধিষ্ঠান করেন। তাই অল্প জোলো জায়গা, ধুলো ওড়া পাথর, বালি কাদায় নো পরোয়া। হাওয়া ময়লা ঢুকলেই নাকি হুসহুস করে বের করে দেওয়ার সিস্টেমও আছে এর মধ্যেই। জল ঢুকে যে মেশিন যে বিগড়োবে, সেটিও হওয়ার জো নেই। এ বাইক তুমি পাবেও ঢের। এই পশ্চিমবঙ্গেরই সৈকতে যেখানে যেখানে বিচ স্পোর্টস চলে, সেখানে তো হামেশাই এ জিনিস ছুটছে। এত খুশি হয়ো না, গেলেই তোমাকে ওতে কে চড়তে দিচ্ছে? আগে বড় হও, তার পর নয় ভেবে দেখা যাবে। |
এটাই বোধ হয় বেস্ট। সব্বাই চেনো, টিভিতে, ছবিতে বা দৈবাৎ সামনে দেখলেই ‘ওটা আমার, ওটা আমার’ বলে লাফাতে থাকো। জলের মোটরবাইক। লেক বলো, নদী বলো, আচ্ছা না হয় একটা সাগরই ভাবো, তার ওপর দিয়ে জল কেটে বোঁওওওও বেরিয়ে যাবে। হঠাৎ চমকে দিয়ে সাঁই করে এ-দিক সে-দিক ঘুরে যাবে, জলের ওপর তড়াক ডিগবাজি মেরে উলটে পালটে খেল দেখিয়ে আবার ছুটবে। এর বাজি জেট পাম্প ইঞ্জিন। তাতে জঞ্জাল, আলতুফালতু জিনিস হটিয়ে ঢোকে শুধু জল, ঢুকেই ঘুর্ণি মেশিনের পাল্লায় গিয়ে পড়ে। প্রপেলারের মধ্যে গোঁগোঁগোঁ করে পাক খেয়ে আবার হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে যায়। তাতেই এ বাইক বাঁইবাঁই দৌড়য়। সঙ্গে লাইফজ্যাকেট থাকে, দুম করে পড়ে গেলেও ভয় নেই, শুধু ভাসতে হবে খানিক। জলপুলিশদের এটি ভারী পছন্দের। কেউ জলে ডুবছে দেখলেই এতে করে নিমেষে অকুস্থলে পৌঁছে তাকে তুলে আনে। আবার এতে চড়েই শয়তান জলদস্যুগুলোর পিছু নেয়। এই গাড়িরই এক তুতো ভাই চলে বরফের ওপর। নামটায় ব্যাটম্যান টাচ আছে। স্নোমোবাইল। এ আবার বরফের রাস্তায় পড়লেই চাকা থেকে দাঁত বার করে। চাকাটা দেখতে হয়ে যায় খাঁজকাটা মিলিটারি ট্যাঙ্কের লম্বা টায়ারগুলোর মতো। ওই দিয়ে কুড়কুড় করে বরফ কাটতে কাটতে তড়বড়িয়ে ছোটে। |