বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দেখে ‘শিক্ষা’ নিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল।
শুধু বিরোধীরাই নয়, প্রয়োজনে পুলিশকেও ‘বোমা’ মারতে পিছপা না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন অনুব্রত। মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেছিলেন, বিরোধীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার। তাঁর ‘নির্দেশ’ পেয়ে বোলপুরের কসবা পঞ্চায়েত এলাকায় নির্দল প্রার্থীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুরও শুরু করে দিয়েছিল শাসক
|
তাপস পাল।
—ফাইল চিত্র। |
দলের সমর্থকেরা। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি।
তবে অনুব্রতকে ‘শিক্ষা’ দিয়েছিলেন তাঁর দলনেত্রীই। শুক্রবার বীভূমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দু’টি জনসভার কোনওটিতেই তাঁর একদা প্রিয়পাত্র অনুব্রত মণ্ডলকে মঞ্চে ডাকেননি নেত্রী। এমনকী তাঁর জেলা সফরে অনুব্রতর সঙ্গে কথাও বলেননি মমতা।
অনুব্রতর ওই পরিণতি থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে শনিবার কৃষ্ণনগরের সার্কিট হাউসে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন করে সাধারণ মানুষ তথা সিপিএমের নেতা-কর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন তাপস পাল।
শুক্রবার নদিয়ার মাজদিয়ায় এক জনসভায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, “সিপিএম কুকুরের জাত বললেও ভুল হবে না। ওই জাতটাকে চিহ্নিত করুন। ওরা মা-বোন মানে না।” গত কয়েক দিনে বিরোধীদের সম্পর্কে এমনই কুরুচিকর মন্তব্য একাধিকবার করেছেন তিনি। তেহট্টের কুলগাছিতে তিনি সিপিএমকে ‘জুতো মারার’ও পরামর্শ দিয়েছিলেন।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ওই মন্তব্যের জন্য সাফাই হিসাবে তিনি বলেন, “সে দিন ওই কথা আমি সমস্ত সিপিএম কর্মী সমর্থকদের বলিনি। কোনও নেতাকেও বলিনি। যারা কুলগাছিতে আমাকে সে দিন উত্যক্ত করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বাজে কথা বলেছিল তাদেরকেই জুতো মারতে বলেছিলাম। আমারও একটা ধৈর্যের সীমা আছে। আবেগের বশে ওই কথাগুলো বলে ফেলেছি।” তবে সেই সঙ্গে জানিয়ে রাখছেন, “মাজদিয়ার জনসভায় আমি সমস্ত সিপিএম করা লোককে ‘কুকুরের জাত’ বলিনি। যারা সিপিএমের নাম করে মানুষ খুন করে, ধর্ষণ করে তাদেরকে বলেছিলাম। এর জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। বিবেকের তাড়নাতেই এটা করলাম। নিজেই বুঝতে পারছি এমনটা বলা ঠিক হয়নি।” এ দিন তাপসবাবুর আক্ষেপ শুনে সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “তাপসবাবু যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা আমাদের জেলার সংস্কৃতির সঙ্গে মেলে না।” |