নদিয়া-মুর্শিদাবাদ পাতায় লেখা ‘ঘুমিয়ে বিদ্বজ্জনেরা, ফেসবুকে ঝড় বহরমপুরে’ শিরোনামে নিবন্ধটি পড়ে কয়েকটি প্রশ্ন জেগেছে। সেগুলি জানালাম। এক, নিবন্ধে যে সব প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বের নাম দেখলাম, তাঁদের মধ্যে অনেককেই তাপসী মালিক ধর্ষণ ও খুন এবং নন্দীগ্রামে গণহত্যা ইত্যাদি ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামতে দেখা যায়নি। দুই, বহরমপুর শহর নিশ্চয় ঋত্বিক ঘটক, মণীশ ঘটক, পম্পু মজুমদারের শহর। তাঁদের নিয়ে বহরমপুরবাসী হিসাবে গৌরব বোধ করি। কিন্তু ঋত্বিক ঘটক তো বহরমপুর ছেড়ে গিয়েছেন প্রাগৈতিহাসিক যুগে। তাঁর যা কিছু কাজকর্ম কলকাতায় অবস্থান কালে। মণীশ ঘটক কোনও দিন প্রতিবাদী ভূমিকা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন বা, প্রতিবাদের অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন বলে জানা নেই। তথ্য দিলে উপকৃত হব। পম্পু মজুমদার নিঃসন্দেহে প্রতিভাবান। কিন্তু শেষের পম্পু তো শেষ হয়ে যাওয়া কঙ্কাল মাত্র। তাঁকে গ্রহণের কোনও জায়গা ছিল না। জানি না মরিচঝাপি, বানতলা, ধানতলায় হত্যা বা ধর্ষণ নিয়ে প্রতিবাদে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল কিনা। জানালে উপকৃত হব। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাই, কামদুনি ঘটনা নিয়ে ‘ভাষা সংস্কৃতি স্বাধিকার মঞ্চ’ থেকে সংস্থার সম্পাদক আব্দুল হালিম বিশ্বাস কামদুনিতে ধর্ষিতার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে বেলডাঙায় একটি বিশাল মিছিল, জমায়েত ও সেমিনার করেন। নানা বিপদের ঝুকি নিয়ে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নিয়ে পথে সেমিনার, পথসভা ও মিছিল হয়েছিল। আজকে যাঁরা বিবেকের তাড়নায় পথে নামছেন তখন তাঁদের অনেকেরই বিবেকের দংশন হয়নি। বিদ্বজনেরা কেউ নতুন করে ঘুমিয়ে নেই। যাঁরা ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁরা নতুন করে জেগেছেন। আবার সময় বুঝে ঘুমিয়ে পড়বেন। যাঁরা রাজনৈতিক দলের প্রভাব কাটিয়ে আছেন তাঁরা তখনও হেঁটেছেন, এখনও হাঁটছেন, পরেও হাঁটবেন।
দীপক বিশ্বাস, বহরমপুর
|
আগামী ৫ ভাদ্র ২২ অগস্ট আচার্য রামেন্দ্রসুন্দ্রর ত্রিবেদীর ১৫০তম জন্মদিন। মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্রদের মধ্যে যে সামান্য কয়েকজন মণীষীর প্রতিভা সারা দেশে স্বীকৃতি লাভ করেছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধিপ্রাপ্ত ‘দর্শনের গঙ্গা, বিজ্ঞানের সরস্বতী ও সাহিত্যের যমুনা’ আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর, যাঁকে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অভিবাদন জনিয়েছিলেন এই ভাষায় ‘তামার হৃদয় সুন্দর, তোমার বাক্য সুন্দর, তোমার হাস্য সুন্দর...।” পশ্চিম ভারতের জিঝৌতি প্রদেশের (বর্তমানে বুন্দেলখণ্ড?) আদি বাসিন্দা আচার্যর পূর্বপুরুষ মুঘল আমলে বঙ্গদেশে এসে ভরতপুর থানার টেঞা গ্রামে বসবাস শুরু করেন। আত্মীয়তার সূত্রে রামেন্দ্রসুন্দরের প্রপিতামহরা কান্দি থানার জেমো গ্রামে এসে সেখানেই স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন ওই গ্রামেই ১২৭১ বঙ্গাব্দের ৫ ভাদ্র রামেন্দ্রসুন্দরের জন্ম। আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর তাঁর নিজের জেলা মুর্শিদাবাদের বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের কাছে একটি বিষ্মৃতপ্রায় নাম। এ জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের কাছে আমার আবেদন, বর্ষব্যাপী জন্মোৎসব পালনের নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই মণীষীকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরুন।
প্রদীপনারায়ণ রায়, শক্তিপুর |