মিড-ডে মিল প্রত্যাখ্যান স্কুলে স্কুলে
সতর্ক করা হয়েছিল আগেই, কেন্দ্রের দাবি ওড়াল বিহার
বিহারের বিভিন্ন স্কুলে ভয়ে মিড-ডে মিল প্রত্যাখ্যান করছে ছাত্রছাত্রীরা। কোথাও কোথাও তারা খাবার আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই বাচ্চারা জানিয়ে দিচ্ছে, তারা ওই খাবার মুখে তুলবে না। বাড়ি থেকে বারণ করে দিয়েছে। রাজ্যের মিড-ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা আর লক্ষ্মণন এই ঘটনার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, “অভিভাবকরা বাচ্চাদের স্কুলের খাবার না খাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি, এমন ঘটনা আর ঘটবে না।”
এ দিকে, ছপরা কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্র ও বিহারের চাপানউতোর শুরু। আজ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দাবি করেছে, তারা কিছু দিন আগেই বিহার সরকারকে মিড-ডে মিলের মান নিয়ে সতর্ক করেছিল। মন্ত্রকের দাবি, বিহারের ১২টি জেলায় মিড-ডে মিলের মান অত্যন্ত খারাপ বলে সমীক্ষায় পাওয়া যায়। যার মধ্যে ছিল সারণও। মন্ত্রকের অভিযোগ, সতর্ক করা সত্ত্বেও পদক্ষেপ করেনি বিহার প্রশাসন। যার বলি হতে হয়েছে ২৩টি শিশুকে। যদিও বিহার জানিয়েছে, ওই ধরনের সতর্ক-বার্তা তারা পায়নি। দায় এড়াতে কেন্দ্র ওই দাবি করছে বলে অভিযোগ নীতীশ সরকারের। বিহারকে কবে ওই বার্তা পাঠানো হয়েছে, স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী এম এম পল্লম রাজুও। তিনি বলেন, “ওই সতর্কতা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কবে তা মনে করতে পারছি না।”
ছপরার এই ঘটনায় ঘনিষ্ঠ মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। শুধু বিহার নয় দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে যে ভাবে মিড-ডে মিলের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাতে অস্বস্তিতে মন্ত্রক। এই পরিস্থিতিতে আজ সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন পল্লম রাজু। দেশের প্রায় ১২ লক্ষ স্কুলের খাবারের মান পরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক। ভবিষ্যতে যাতে ছপরার মতো ঘটনা এড়ানো যায় তার জন্য ওই কমিটি দেশ জুড়ে বিভিন্ন স্কুলের খাবারের মান খতিয়ে দেখবে।
এই ঘটনায় শুধু বিহার নয়, সারা দেশেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নানা জায়গা থেকেই এই ধরনের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আসতে শুরু করেছে। আজ অমৃতসরে মিড-ডে মিলের কাঁচা মালের গুদামে অভিযান চালিয়ে দেখা গিয়েছে, পোকামাকড়ের ছড়াছড়ি। সংশ্লিষ্ট কর্তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরানো হয়েছে।
তিন নির্দেশিকা

রান্না করা খাবার প্রধান শিক্ষক ও রাঁধুনিকে আগে খেয়ে দেখতে হবে।
জেলা প্রশাসনকে দু’সপ্তাহের মধ্যে সব স্কুল পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে হবে।
রান্না করতে হবে প্যাকেটের তেলে। খোলা তেলে কখনওই নয়।

বিহার সরকারের পক্ষে পুরনো একটি নির্দেশিকাকে নতুন ভাবে জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রান্নার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক, বা তাঁর অনুপস্থিতিতে অন্য শিক্ষককে ও রাঁধুনিকে খাবার খেতে হবে। তার পরেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলি হবে। তবে প্রশাসনের কর্তারা স্বীকার করছেন, ২৩টি শিশুর মৃত্যুর পর, শত নির্দেশেও ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের আস্থা ফেরানো কঠিন।
চলছে তদন্তের কাজও। আজ পুলিশ ধর্মসতী স্কুলের ফেরার প্রধান শিক্ষিকা মীনা কুমারীর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেখানে চাল, ডাল, তেলের পাশেই দু’টিন কীটনাশক তেল পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, খাবারে এই কীটনাশক কী ভাবে মিশল, তা দুর্ঘটনা নাকি ইচ্ছাকৃত, প্রধান শিক্ষিকাই তা বলতে পারবেন। তাঁর ও তাঁর স্বামী অর্জুন রাইয়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

মিড-ডে মিল খেয়ে অসুস্থ তামিলনাড়ুতেও
ফের মিড-ডে মিল নিয়ে অভিযোগ উঠল তামিলনাড়ুর নেইভেলিতে। একটি সরকারি স্কুলে মিড-ডে মিল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৯ থেকে ১৬ বছরের ১০৫ জন ছাত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে খাওয়ার পরেই তারা বমি করতে থাকে। তখনই বাকি ছাত্রীদের খাবার দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অসুস্থ ছাত্রীদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, পচা ডিম খেয়েই এই বিপত্তি ঘটেছে। চিকিৎসার পরে সকলেই বিপন্মুক্ত বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার ওড়িশার বালেশ্বরে একটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ছাত্রাবাসে রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে জনা বারো পড়ুয়া। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদেরও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.