|
|
|
|
কৃতিত্বের দাবি তৃণমূলের |
ভোটের আগে আলো জ্বলল শলপের গ্রামে |
শান্তনু ঘোষ • কলকাতা |
স্বাধীনতার পর থেকেই অন্ধকার নামলেই ঘরে আলোর সম্বল বলতে ছিল মোমবাতি নয়তো হ্যারিকেন! দীর্ঘ ৩৪ বছরে বাম জমানায় বহু আবেদন-নিবেদনেও কাজ হয়নি। শেষে পঞ্চায়েত ভোটের ক’দিন আগে আলো জ্বললো হাওড়ার শলপ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর নিবড়া গ্রামের আটটি পরিবারে। সেটাকেই প্রচার-পর্বে তুলে ধরে শলপে পথে নেমেছিল তৃণমূল। আর এই আলো জ্বালানোর কাহিনিই তাঁদের নির্বাচনী বৈতরণী সহজেই পার করে দেবে বলে মনে করছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দিতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব।
৬ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে হাঁটা পথে সহজেই পৌঁছনো যায় এই গ্রামের বাগপাড়ায়। পাড়ার অন্যত্র আলো জ্বললেও ওই আটটি পরিবার বঞ্চিত ছিলেন। বহু আবেদন-নিবেদনেও কাজ না হওয়ায় ঘরে আলো জ্বলার আশা তাঁরা ছেড়েই দিয়েছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আটটি পরিবারের বাড়িতে আলো নিয়ে যেতে গেলে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার জন্য যে জমি ব্যবহার করতে হত তা নিয়েই তাঁদের এক প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ চলছিল। বিষয়টি পৌঁছয় আদালত পর্যন্ত। আদালত থেকে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে, কাজ না হওয়ার কোনও নির্দেশ ছিল না। তাই শান্তি বজায় রেখে, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে ওই পরিবারগুলিতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। যে প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদ হচ্ছিল, তিনিও আর নতুন করে কোনও বিবাদে জড়াননি। তিনি বলেন, “আমাদের জমি ব্যবহার করে খুঁটি পুঁততে চাইছিল, তাই আপত্তি করেছি। যা বলার আদালত বলবে।” |
|
প্রথম আলোয় পড়াশোনা। —নিজস্ব চিত্র। |
ওই আটটি পরিবারই দীর্ঘদিন ধরে সিপিএম সমর্থক ছিলেন। আলো না আসার জন্য তাঁরা সিপিএমকেই দুষছেন। ওই পরিবারগুলির মধ্যে জয়দেব দাস, বিমল দাস, নিমাই দাসরা বলেন, “সিপিএমের হয়ে কাজ করতাম। কিন্তু আমাদের সমস্যা দূর করার জন্য কোনও দাদাই এগিয়ে আসতেন না। সবাই শুধু প্রতিশ্রুতি দিতেন। ওই দলের প্রতি আর আমাদের কোনও আস্থা নেই।” বিধানসভা ভোটে পালাবদলের পরেই ফের আশার আলো দেখতে শুরু করে ওই আটটি পরিবার। তারা এলাকার বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়।
ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুজিতশেখর দাস বললেন, “বাম আমলে শুধু প্রতিশ্রুতি মিলেছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। আমাদের জমানায় বাস্তবে আলো এলো। তাই এই বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করেছিলাম।”
স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান তথা সিপিএমের স্থানীয় নেত্রী অনিমা সর্দার বললেন, “বিষয়টি ঠিক মনে করতে পারছি না।” সিপিএমের অন্য নেতারা এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। যদিও, নিজেদের ঘরে আলো আনার জন্য ওই পঞ্চায়েত প্রধানের কাছ থেকেই ‘কমন প্যাসেজ’ (যে জমি নিয়ে বিবাদ)-এর শংসাপত্র পেয়েছেন শিবনাথ, জয়দেবরা। অবশ্য পুরনো আর মনে রাখতে চান না জয়দেবরা। তাঁরা এখন আলোর আনন্দে ভাসছেন। |
|
|
|
|
|