বিমায় বদল

৯৮৬ সালে স্বাস্থ্যবিমা চালু হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে ঢোকার মুখে প্রায় অবধারিত প্রথম প্রশ্ন, ‘বিমা আছে?’ উত্তর হ্যাঁ হলেই ২০০০ টাকার চিকিৎসা খরচ এক লাফে ৪০০০ টাকা। বিমা সংস্থাগুলি ক্ষতির মুখে পড়ে এ বার পাল্টা চাল শুরু করল এ রোগের জন্য এত টাকা। ওই রোগের জন্য কিছু না। একগাদা প্রমাণপত্র। বিল নিয়ে প্রশ্ন। বাড়তে বাড়তে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছল যে, রোগীর অবস্থা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। অনেক ক্ষেত্রেই হঠাৎ অসুস্থতায় তিন লাখ খরচ করে হৃদরোগী ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন, এমন নজিরও বিরল নয়।
এক দিকে হাসপাতাল আর অন্য দিকে বিমা সংস্থা এই দু’য়ের মাঝে বলির পাঁঠা ছিলেন রোগীরা। এই অবস্থা সামলাতেই এ বার মাঠে নেমেছে বিমা নিয়ন্ত্রক ইনশিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (আইআরডিএ)। আগামী ১ অক্টোবর থেকেই চালু হতে চলেছে নতুন নিয়মাবলি। বদলাচ্ছে টিপিএ-র ভূমিকাও। লক্ষ্য, আরও স্বচ্ছ ব্যবস্থা।
স্বাস্থ্যবিমার এই নতুন জমানার কয়েকটা দিকই এ বার এক ঝলকে দেখে নেব আমরা।
বলা হচ্ছে, নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সব সংস্থাকেই স্বাস্থ্যবিমা পরিচালনার ক্ষেত্রে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে। তবে সংস্থাগুলি নিজেদের মতো করে স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প এবং তার শর্ত তৈরি করতে পারবে। প্রিমিয়ামের হারও ধার্য করতে পারবে নিজেদের বিবেচনা অনুযায়ী। আসুন জেনে নিই কী কী বদল আসতে চলেছে নতুন নিয়মে দিতেই হবে প্রস্পেক্টাস গ্রাহককে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানিয়ে দিতে হবে গোড়াতেই। যাতে কাউকে ভুল বুঝিয়ে পলিসি বিক্রির সুযোগ কমে। জানবেন, এ ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতেই হবে সংস্থাকে। যেমন
(১) পলিসি করার সময়েই বিমা সংস্থাকে দিতে হবে প্রস্পেক্টাস। বিমার সব শর্ত লেখা থাকবে সেখানে।
(২) স্পষ্ট জানাতে হবে, কোন কোন ক্ষেত্রে বিমার টাকা মিলবে না।
(৩) টাকা দাবি (ক্লেম) করতে হলে কী কী তথ্য বা নথি জমা দেওয়া জরুরি, তা-ও উল্লেখ করতে হবে।
(৪) বিভিন্ন প্রকল্প এবং তার শর্তগুলি সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থার ওয়েবসাইটে তুলে দিতে হবে। যাতে সকলে ওই সব তথ্য দেখতে পারেন।
(৫) পলিসি কেনার সময়ে প্রস্পেক্টাস ছাড়াও আবেদনপত্রের ফোটোকপি এবং ক্লেম ফর্মের একটি কপি বাধ্যতামূলক ভাবে আগাম গ্রাহকের হাতে দিতে হবে।
(৬) ক্লেম গ্রাহ্য হোক বা না-হোক, তা কারণ-সহ লিখিত ভাবে গ্রাহককে জানাতে হবে।

একই ফর্ম ও নথি
বিমার টাকা দাবি করার জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মের বয়ান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সব সংস্থাকেই সেই অনুযায়ী ফর্ম ছাপাতে হবে। এমনকী টাকা দাবি করার জন্য কী কী তথ্য লাগবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে আইআরডিএ।
পুরনো ব্যবস্থায় বিভিন্ন বিমা সংস্থার টাকা দাবি করার ফর্মের মধ্যে ফারাক থাকত। তা ছাড়া, দাবির আবেদনের সঙ্গে এক একটি সংস্থা নিজের ইচ্ছেমতো এক এক রকমের তথ্য জমা দিতে বলত। ফলে সমস্যায় পড়তেন গ্রাহকেরা। অক্টোবর থেকে কিন্তু প্রতিটি বিমা সংস্থাই গ্রাহকের কাছে শুধুমাত্র আইআরডিএ নির্ধারিত তথ্য বা নথিই চাইতে পারবে।
একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে ‘প্রিঅথরাইজেশন’-এর ক্ষেত্রেও। এ প্রসঙ্গে বলি, অনেক সময়ে আপৎকালীন ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। আবার অনেক সময়ে আগে থেকে পরিকল্পনা করে চিকিৎসা করানো হয়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে চিকিৎসার সম্ভাব্য খরচ হাসপাতালের কাছ থেকে নিয়ে, সেটা সংশ্লিষ্ট টিপিএ-কে দিয়ে আগাম অনুমোদন করাতে হয়। এটাকেই বলে ‘প্রিঅথরাইজেশন।’

বয়সের ঊর্ধ্বসীমা
প্রথম বার পলিসি কেনার ক্ষেত্রে গ্রাহকের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা (এনট্রি এজ) ৬৫ বছর ধার্য করা হয়েছে। এত দিন সাধারণ ভাবে ওই বয়স ছিল ৬০। তার উপর এক একটি বিমা সংস্থা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করত। সে ক্ষেত্রে ষাটের কম বা বেশিও ধার্য করত অনেকে।

পলিসি নবীকরণ
প্রকল্প কেনার সময়ে যদি গ্রাহকের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে বা অন্য কোনও ভাবে বিমা সংস্থাকে প্রতারণা করার অভিযোগ না-থাকে, তা হলে তা নবীকরণ (রিনিউ) করতেই হবে বিমা সংস্থাকে। আগে অনেক সময়েই বয়স বেশি হওয়া (৮০ ছাড়ালে) বা আগের বছরগুলিতে চিকিৎসা বাবদ ঘন ঘন বিমার টাকা দাবি করার কারণ দেখিয়ে পলিসি নবীকরণ করতে চাইত না সংস্থাগুলি। এখন সেটা আর করা যাবে না। অর্থাৎ নতুন নিয়মে
• সারা জীবন ধরেই পলিসি নবীকরণ করতে পারবেন গ্রাহক।
• কোনও বিশেষ ক্ষেত্রে নবীকরণ করতে অস্বীকার করা হলে, তার কারণ গ্রাহককে বিশদে লিখিত ভাবে জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাটিকে।
• আগে পলিসির মেয়াদ ফুরনোর ১৫ দিনের মধ্যে নবীকরণ না-করলে, ধারাবাহিকতা বিঘ্নিত হত। পলিসি করতে হত নতুন করে। নয়া নিয়মে তা বেড়ে হচ্ছে ৩০ দিন। তবে মেয়াদ শেষ এবং নবীকরণের মাঝের সময়ে অসুস্থতার জন্য বিমার টাকা মিলবে না।
• কঠিন অসুখের (ক্রিটিকাল ইলনেস) জন্য পলিসির ক্ষেত্রে অবশ্য পুরনো নিয়ম অনুসারে পলিসি নবীকরণ করতে বাধ্য থাকবে না বিমা সংস্থা।

টিপিএর ভূমিকা

টিপিএ (থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর)-র বিরুদ্ধে গ্রাহকদের হয়রানির অভিযোগের শেষ নেই। তাই নতুন নিয়মে অনেকটাই বদলাচ্ছে এদের ভূমিকা। যেমন
(ক) বিমার টাকার ক্লেম গ্রাহ্য হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবে বিমা সংস্থা। পুরনো নিয়মে এটি কার্যত টিপিএ করত।
(খ) হাসপাতালকে টাকাও মেটাবে সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাই। আগে এই দায়িত্বও ছিল টিপিএ-র। বহু ক্ষেত্রে দেখা যেত যে, টিপিএ হাসপাতালকে টাকা মেটায়নি। ফলে হাসপাতালটি পরে ওই টিপিএ-র আওতায় থাকা গ্রাহকদের ক্যাশলেস পরিষেবা দিতে অস্বীকার করত। এমন নজিরও আছে যে, জরুরি পরিস্থিতিতে ওই হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন কোনও গ্রাহক।
(গ) প্রিঅথরাইজেশন সংক্রান্ত বিষয়টি অবশ্য টিপিএ-র হাতে থাকবে।

পলিসি ফেরতের সুযোগ
জীবনবিমার মতো স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রেও এ বার চালু হচ্ছে ‘ফ্রি লুক’ ব্যবস্থা। এমন হতে পারে যে, পলিসি হাতে আসার পর গ্রাহক দেখলেন সেটির কোনও শর্ত তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। নতুন ব্যবস্থায় সে ক্ষেত্রে ১৫ দিনের মধ্যে তিনি পলিসিটি ফেরত দিয়ে প্রিমিয়ামের টাকা ফিরিয়ে নিতে পারেন। তবে প্রিমিয়াম থেকে পলিসি করার স্ট্যাম্প ডিউটির টাকা কেটে নেওয়া হবে। পলিসি কেনার সময়ে যদি বিমা সংস্থা গ্রাহকের ডাক্তারি পরীক্ষা বাবদ কোনও টাকা খরচ করে থাকে, কেটে রাখা হবে তা-ও।

প্রাক্ বিমা স্বাস্থ্য পরীক্ষা
পলিসি করার সময়ে গ্রাহক নিজের ডাক্তারি পরীক্ষা (হেল্থ চেক আপ) করানোর জন্য কোনও টাকা খরচ করে থাকলে, তার অর্ধেক বিমা সংস্থার কাছ থেকে ফেরত পাবেন। পুরনো ব্যবস্থায় হেল্থ চেক আপ বাবদ পুরো খরচটাই বহন করতেন গ্রাহক। অবশ্য ভ্রমণের জন্য স্বাস্থ্যবিমা করার ক্ষেত্রে পুরনো নিয়মই বহাল থাকবে।
তবে, বিমা পলিসি কেনার আবেদন (প্রপোজাল) জমা দেওয়ার পর, সেটি সংস্থা গ্রহণ করলে তবেই প্রাক্ বিমা স্বাস্থ্য পরীক্ষার টাকা পাবেন গ্রাহক। আবেদন অগ্রাহ্য হলে কিন্তু তা পাওয়া যাবে না। উল্লেখ্য, ৫০ বছরের বেশি বয়সে পলিসি করাতে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হয়।

বোনাসে কোপ কম
পলিসি কেনার পর কোনও ক্ষতিপূরণ দাবি (ক্লেম) না-করা হলে, প্রতি বছরের জন্য বিমার কভারেজ সাধারণত বোনাস হিসাবে ৫% করে বেড়ে যায়। এর জন্য গ্রাহককে কোনও বাড়তি প্রিমিয়াম গুনতে হয় না। তবে দাবি করার পরের বছর পলিসি নবীকরণের সময়ে সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে ওই বোনাস ১০% পর্যন্ত বিমার কভারেজ থেকে কমে যায়। নতুন নিয়মে ১০ শতাংশের জায়গায় তা কমবে ৫%।
ধরুন, কোনও গ্রাহক এক লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা পলিসি করিয়েছেন। পলিসি করার পর টানা দু’বছর কোনও ক্ষতিপূরণ নেননি। সে ক্ষেত্রে প্রতি বছর ৫% করে মোট ১০% বোনাস যুক্ত হয়ে তাঁর বিমাকৃত অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। তৃতীয় বছরে তিনি ক্লেম করলেন। এ বার চতুর্থ বছরে পুরনো নিয়ম অনুযায়ী, ১০% বোনাস কাটা গিয়ে তাঁর বিমাকৃত অঙ্ক ফের ১ লক্ষ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন নিয়মে ৫% কমে তা দাঁড়াবে ১ লক্ষ ৫ হাজার।

হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ
এত দিন শুধুমাত্র অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা করার জন্যই স্বাস্থ্যবিমার টাকা পেতেন গ্রাহক। নতুন ব্যবস্থায় হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এই সুযোগ পাওয়া যাবে। অবশ্য সে ক্ষেত্রে সরকারি বা সরকার দ্বারা স্বীকৃত কোনও হাসপাতালের পাশাপাশি কোয়ালিটি কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড ফর হসপিটালস অ্যান্ড হেল্থককেয়ার প্রোভাইডর্স বা ওই ধরনের সংস্থার অনুমোদিত হাসপাতালেই চিকিৎসা করাতে হবে।

নমিনি

পলিসি কেনার সময়েই গ্রাহক নমিনির নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। আগে এটা ছিল না। ফলে এ বার থেকে বিমা সংস্থার কাছে গ্রাহকের কোনও পাওনা থাকলে, নমিনিই ওই টাকা দাবি করতে পারবেন। পুরনো ব্যবস্থায় গ্রাহকের স্ত্রী বা অন্য উত্তরাধিকারী হয়তো ওই টাকা পেতেন। কিন্তু নমিনি না-থাকায় সমস্যা হত।

প্রবীণ নাগরিকের জন্য

চিকিৎসা বিমার ক্ষেত্রে প্রবীণ নাগরিকদের অনেক সময়েই নানা রকম সমস্যা বা হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়। নতুন ব্যবস্থায় আইআরডিএ পলিসি নবীকরণের বয়স-সহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যার সমাধান করেছে। এখন থেকে প্রতিটি বিমা সংস্থা এবং টিপিএ-কে শুধুমাত্র তাঁদের ক্লেম সংক্রান্ত বিষয় দেখার জন্যই একটি পৃথক বিভাগ চালু করতে হবে। এই বিভাগের কাছে প্রয়োজনে প্রবীণরা বিমা সংক্রান্ত সব অভিযোগ জানাতে পারবেন। বিভাগটির দায়িত্ব হবে ওই অভিযোগগুলির মীমাংসা করা।

খরচের খতিয়ান
স্বাস্থ্যবিমার নতুন জমানায় প্রাপ্য চিকিৎসা খরচের নিয়ম বদলাচ্ছে না। কিন্তু এ নিয়ে যখন কথা হচ্ছেই, তখন আসুন পুরনো নিয়মগুলিই এক বার ঝালিয়ে নেওয়া যাক

খরচের ঊর্ধ্বসীমা
• বর্তমানে প্রায় সব ব্যক্তিগত পলিসিতেই খরচের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছে বিমা সংস্থা। তার বেশি খরচ হলে বাড়তি টাকা দিতে হয় বিমাকারীকেই।
• চিকিৎসা খরচের তিনটি খাতে ওই সীমা বেঁধে দেওয়া হয়
১) বেড রেন্ট (সাধারণ এবং আইসিইউ)
২) ডাক্তারের ফি
৩) অন্যান্য খরচ অপারেশন থিয়েটার (ওটি), ওষুধ, ডায়ালিসিস, কেমোথেরাপি, পেসমেকার ইত্যাদি।

বেডের খরচ
ক) প্রতি দিনের সাধারণ বেড ভাড়া হতে হয় বিমা মূল্যের (সাম অ্যাশিওর্ড) ১%। অর্থাৎ আপনার পলিসির কভারেজ যদি ১ লক্ষ টাকা হয়, তা হলে ওই খাতে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা করে পাবেন।
খ) আইসিইউ-এ বেডের খরচ কভারেজের ২%।
গ) উপরের দু’টি শর্ত মিলিয়ে (ক+খ) হাসপাতালে থাকাকালীন মোট বেড ভাড়া হিসাবে সর্বোচ্চ খরচ পাওয়া যেতে পারে কভারেজের ২৫% অর্থ।

ডাক্তারের ফি
বিমাকৃত অঙ্কের ২৫%
অন্যান্য খরচ
বিমার কভারেজের ৫০%।
পিপিএন ব্যবস্থা

• পুরো নাম প্রেফার্ড প্রোভাইডার নেটওয়ার্ক।
• এখন বেশ কিছু বিমা সংস্থা, বিশেষ করে দেশের চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা চিকিৎসার খরচের ব্যাপারে বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, এক একটি অসুখের চিকিৎসার জন্য এক একটি খরচের প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে তারা। প্যাকেজের মধ্যেই বেড ভাড়া, ডাক্তারের ফি এবং অন্যান্য যাবতীয় খরচ ধরা আছে। এই ব্যবস্থাই পিপিএন।
• যে-সমস্ত হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তার একটি তালিকা গ্রাহককে দেওয়া হয়। আপনি যদি পিপিএন তালিকার হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে চিকিৎসা করান, তা হলে বেড-ভাড়া, ডাক্তারের ফি ইত্যাদি বাবদ বিভিন্ন খরচের উর্ধ্বসীমা আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
• চিকিৎসার হিসাব দেওয়ার সময়েও আলাদা আলাদা খাতে খরচ দেখানোর প্রয়োজন নেই।

গোষ্ঠী বিমা

গোষ্ঠী বিমাতেও সাধারণত খরচের ঊর্ধ্বসীমা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। কারণ, এই ধরনের বিমার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা গোষ্ঠীর সঙ্গে এক এক রকম শর্তে চুক্তি করে বিমা সংস্থাগুলি।
 
স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম (ফ্যামিলি ফ্লোটার)
৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত  
বিমা মূল্য নিজের স্বামী/স্ত্রী (২৫%) প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তান (২০% করে)
২ লক্ষ
২.৫ লক্ষ
৩ লক্ষ
৩.৫ লক্ষ
৪ লক্ষ
৪.৫ লক্ষ
৫ লক্ষ
২,৪৬৯
২,৯৫৬
৩,৪৪৪
৩,৮৭০
৪,২৯৭
৪,৭২৩
৫,১৫১
৬১৭
৭৩৯
৮৬১
৯৬৮
১,০৭৪
১,১৮১
১,২৮৮
৪৯৪
৫৯১
৬৮৯
৭৭৪
৮৫৯
৯৪৫
১,০৩০
৩৬-৪৫ বছর  
বিমা মূল্য নিজের স্বামী/স্ত্রী (৩০%) প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তান (২০% করে)
২ লক্ষ
২.৫ লক্ষ
৩ লক্ষ
৩.৫ লক্ষ
৪ লক্ষ
৪.৫ লক্ষ
৫ লক্ষ
২,৬৮৩
৩,২১৩
৩,৭৪৩
৪,২০৭
৪,৬৭০
৫,১৩৫
৫,৫৯৮
৮০৫
৯৬৪
১,১২৩
১,২৬২
১,৪০১
১,৫৪১
১,৬৭৯
৫৩৭
৬৪৩
৭৪৯
৮৪১
৯৩৪
১,০২৭
১,১২০
৪৬-৫০ বছর  
বিমা মূল্য নিজের স্বামী/স্ত্রী (৩৫%) প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তান (২০% করে)
২ লক্ষ
২.৫ লক্ষ
৩ লক্ষ
৩.৫ লক্ষ
৪ লক্ষ
৪.৫ লক্ষ
৫ লক্ষ
৪,২৯০
৫,২০০
৬,১০৮
৬,৯৪২
৭,৭৭৬
৮,৬১০
৯,৪৪৪
১,৫০২
১,৮২০
২,১৩৮
২,৪৩০
২,৭২২
৩,০১৩
৩,৩০৫
৮৫৮
১,০৪০
১,২২২
১,৩৮৮
১,৫৫৫
১,৭২২
১,৮৮৯
   
বিমা মূল্য নিজের স্বামী/স্ত্রী (৪০%) প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তান (২০% করে)
২ লক্ষ
২.৫ লক্ষ
৩ লক্ষ
৩.৫ লক্ষ
৪ লক্ষ
৪.৫ লক্ষ
৫ লক্ষ
৪,৪৮৫
৫,৪৩৬
৬,৩৮৬
৭,২৫৮
৮,১২৯
৯,০০১
৯,৮৭৩
১,৭৯৪
২,১৭৪
২,৫৫৪
২,৯০৩
৩,২৫২
৩,৬০০
৩,৯৪৯
৮৯৭
১,০৮৭
১,২৭৭
১,৪৫২
১,৬২৬
১,৮০০
১,৯৭৫
   
বিমা মূল্য নিজের স্বামী/স্ত্রী (৪০%) প্রথম ও দ্বিতীয় সন্তান (২০% করে)
২ লক্ষ
২.৫ লক্ষ
৩ লক্ষ
৩.৫ লক্ষ
৪ লক্ষ
৪.৫ লক্ষ
৫ লক্ষ
৫,১২৭
৬,২৩৬
৭,৩৪৬
৮,৩৭৫
৯,৪০৬
১০,৪৩৬
১১,৪৬৬
২,০৫১
২,৪৯৫
২,৯৩৮
৩,৩৫০
৩,৭৬২
৪,১৭৫
৪,৫৮৬
১,০২৫
১,২৪৭
১,৪৬৯
১,৬৭৫
১,৮৮১
২,০৮৭
২,২৯৩
নিজের বয়স ও পরিবারের সদস্য সংখ্যা মিলিয়ে উপরের সারণি থেকে প্রিমিয়ামের অঙ্কের একটা আঁচ পেতে পারেন। ধরুন, ৪০ বছর বয়সী রামবাবু ২ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা চান। সে ক্ষেত্রে তাঁর নিজের প্রিমিয়াম হবে ২,৬৮৩ টাকা। স্ত্রীর প্রিমিয়াম হবে ওই অঙ্কের ৩০% (৮০৫)। প্রতি সন্তানের জন্য গুনতে হবে আরও ৫৩৭ টাকা (নিজের প্রিমিয়ামের ২০%)। অর্থাৎ একটি সন্তান হলে, তাঁর তিন জনের পরিবারের বিমায় মোট প্রিমিয়াম ৪,০২৫ টাকা।
১) সব হিসাব টাকায়।
২) এটি আনুমানিক হিসাব। তাই সংস্থা ভেদে প্রিমিয়ামের অঙ্কে অল্প-বিস্তর তারতম্য হতে পারে। বিশেষত নতুন নিয়ম চালুর পর।
৩) এখন সাধারণত ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য ফ্ল্যামিলি ফ্লোটার বিমা করানো হয় না। তবে ব্যতিক্রম রয়েছে।
৪) ফ্ল্যামিলি ফ্লোটারে সাধারণত দু’টি পর্যন্ত সন্তানকেই বিমার আওতায় আনা যায়। আসতে পারেন বাবা-মাও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.