মস্তিষ্কে সংক্রমণের ফলে জলদাপাড়ায় মৃত্যু হল বাঁকুড়ায় উদ্ধার হওয়া সেই হস্তিশাবক ‘বিষ্ণু’র। শনিবার সকালে হাতির শাবকটি মারা যায়। ১ বছর বয়সী দলছুট শাবকটি গত ৫ জুন বাঁকুড়ার বাঁকাদহ রেঞ্জে উদ্ধার হয়। বহুবার চেষ্টা করা হলেও শাবকটিকে হাতির পালের কাছে ফেরানো যায়নি। দক্ষিণবঙ্গে কুনকি হাতি না থাকায়, উত্তরবঙ্গের জলদাপাড়াতে শাবকটিকে বড় করে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় বন দফতর। তিতি, তিস্তা, দ্বারকাপ্রসাদ, বালাসুন্দরের মতো মা-হারা শাবকদের বড় করে তোলার নজির রয়েছে জলদাপাড়ায়। ১১ জুন বাঁকুড়া থেকে ট্রাকে পুরুষ শাবকটিকে জলদাপাড়ার পূর্ব রেঞ্জের পিলখানাতে আনা হয়। বনকর্মীরা তার নাম রাখেন বিষ্ণু। গরমে যাতে সে কাহিল না হয়ে পড়ে সে জন্য গ্লুকোজের পাশাপাশি এতদিন ধরে তার খাদ্য তালিকায় সাতটি লাউ, পাঁচ কাঁদি পাকা কলা, আর সাত কেজি আলু রাখা হয়। প্রথম দিকে খাবার ঠিকমতো খেলেও, বিষ্ণু দুর্বল হয়ে পড়ছিল দেখে চিকিত্সকদের উদ্বেগ বাড়ে। তবে, গত দশ দিন ধরে খাবারও পরিমাণে কম খাচ্ছিল। গত বুধবার থেকে সে উঠে দাঁড়াতেও পারছিল না বিষ্ণু। মুখের সামনে লাউ, কলা দিলেও মুখে খাবার তোলেনি। বন দফতর সূত্রের খবর, বুধবার মাহুত তাকে স্নান করানোর সময় বিষ্ণুর কান থেকে পোকা বার হতে দেখেন। জলদাপাড়া, বক্সা এবং মাদারিহাটের পশু চিকিত্সককে নিয়ে বন দফতর মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেন। সংক্রমণ রুখতে অ্যান্টিবায়োটিক, এবং খাবারের বদলে স্যালাইন দিয়ে হস্তি শাবকটিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা হয়। তবে চিকিত্সকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় শনিবার। জলদাপাড়ার পশু চিকিত্সক অশোক কুমার সিংহ বলেন, “বিষ্ণুকে বাঁচানোর জন্য প্রচুর চেষ্টা করেছি। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিল। মস্তিষ্ক পর্যন্ত পোকা ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে ওর মৃত্যু হয় বলে মনে হচ্ছে।” তবে কী ভাবে তার মস্তিষ্কে সংক্রমণ হয় ব্যাখ্যা দিতে পারেননি চিকিত্সকরা। শুরু থেকে চিকিত্সা করানো গেলে বিষ্ণু সুস্থ হয়ে উঠত বলে মনে করছেন অনেক বনকর্মী।
|