ছেলের জবানবন্দিতে স্ত্রী খুনে অভিযুক্ত স্বামী
ছেলের দেওয়া গোপন জবানবন্দীর ভিত্তিতে পুলিশ স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ আনল তমাল সেন নামে মাঝবয়সী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের বাড়ি সাগরদিঘির দক্ষিণগ্রাম এলাকায়। মৃতার নাম সান্ত্বনা সেন (৩৫)। পুলিশ অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযুক্ত তমাল তাঁর স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন। সেই সন্দেহের বশেই বুধবার রথযাত্রার দিন ছেলেকে মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে তমাল তাঁর স্ত্রীকে খুন করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সেন পরিবার এলাকায় বেশ বর্ধিষ্ণু বলেই পরিচিত। দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে বছর দু’য়েক আগে বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে অমিত ও স্ত্রীকে নিয়ে তমালের ছোট সংসার। অমিত স্থানীয় এক উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন তমালবাবু। অমিত পুলিশকে সে কথা জানিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে। ওই দিনই রাতেই ওই দম্পতির মধ্যে তুমুল ঝামেলা হয় বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছে। কিন্তু নিত্যদিনের ব্যাপার মনে করে আশপাশের কেউ ছুটে আসেননি। অভিযুক্তের খুড়তুতো দাদা মহাদেব সেন বলেন, “বুধবার রাতে ওদের বাড়ি থেকে চিৎকার শুনতে পাই। সঙ্গে মারধরের শব্দও। কিন্তু রোজকারের ব্যাপার ভেবে তেমন গা করিনি। পরের দিন সারাক্ষণ বাড়ির দরজায় তালা দেখে অমিতকে খবর দিই। শুক্রবার মামাকে সঙ্গে এনে মায়ের দেহ উদ্ধার করে সে।”
শোকার্ত মৃতার পরিবার। সাগরদিঘিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
নলকূপের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে সান্ত্বনাদেবীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ মৃতার পরিবারের লোকজনের। তারপর থেকেই বেপাত্তা তমাল। বৃহস্পতিবার দিনভর সেন পরিবারের সদর দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ ছিল। এতেই সন্দেহ হয় পড়শিদের। তাঁরা খবর পাঠান অমিতের কাছে। পরদিন সকালে এক মামাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরে সে। গেট বন্ধ থাকায় প্রাচীর টপকে বাড়িতে ঢোকে অমিত ও তার মামা। তারপরই তাঁরা দেখেন ঘরের মধ্যে সান্ত্বনাদেবীর ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে রয়েছে।
মশারির মধ্যে তাঁর দেহের পাশেই পড়ে রয়েছে লোহার হাতলটি। এরপরই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে। অমিত পুলিশকে বলে, “বাবা মিথ্যা সন্দেহ করত মায়ের উপর। প্রতিবাদ করলেই বেধড়ক মারধর করত। অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মাঝে মধ্যেই মা মামাদের বাড়িতে চলে যেত। মাসখানেক আগেই বাড়ি ছাড়ে মা। আবার মামাদের হস্তক্ষেপে বাড়ি ফেরে।”
জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “পরিকল্পনা করেই ছেলেকে মামার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বুধবার রাতে নলকূপের হাতল দিয়ে পিটিয়ে স্ত্রীকে খুন করেছে তমাল। তারপর ভোরের দিকে বাড়ির গেটে তালা ঝুলিয়ে চম্পট দেয়। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বাড়ির দরজা বন্ধের খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে মামার সঙ্গে বাড়ি ফিরে ছেলে অমিত তার মায়ের দেহ উদ্ধার করে। ছেলের জবানবন্দির ভিত্তিতে বাবার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত তমাল সেন পলাতক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.