এই উইকেটে দু’শো রানও কঠিন ছিল
বিশ্বকাপ ফাইনালের ভূত এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে! না হলে মাত্র ৩০ রানের মধ্যে এমন ধস নেমে যেতে পারে ওদের ব্যাটিংয়ে?
ভুবনেশ্বর কুমারের দেওয়া শুরুর ধাক্কা সঙ্গকারা ও তিরামান্নে সামলে নিয়েছিল বলেই মনে হয়েছিল। ৪৯-২ থেকে ১৭১-এ শ্রীলঙ্কাকে টেনে নিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার এই দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। কিন্তু এর পর ভেঙে পড়ল শ্রীলঙ্কার ইনিংস! মাত্র ৩০ রানের মধ্যে ঝপাঝপ আট উইকেট পড়ে গেল! মাহেলা, তরঙ্গ, সঙ্গকারা ছাড়া শ্রীলঙ্কার কোনও ব্যাটসম্যানই যে তেমন ফর্মে নেই, তা এ দিন বেশ ভাল মতোই বোঝা গেল। ভারতের ব্যাটিংয়ের যদিও অত খারাপ অবস্থা নয়। তবু রান তাড়া করতে গিয়ে বেশ চাপেই পড়ে যায় তারা। এই লেখার সময় ধোনি ভুবনেশ্বর কুমারকে নিয়ে লড়ছে। সাত উইকেট খুইয়ে বসে রয়েছে ভারত। রান ৪০ ওভারে ১৬৫। আসলে কুইন্স পার্কের এই উইকেট ব্যাটসম্যানদের পক্ষে মরণ ফাঁদ। এই উইকেটে দ্রুত রান তোলা বেশ কঠিন কাজ।

কাপ জয়ের যুদ্ধ। পোর্ট অব স্পেনে হেরাথকে স্টাম্প করছেন ধোনি। ছবি: এপি
২০২ রানের টার্গেট নিয়ে নেমেও ভারতীয়রাও তো ওদের মতোই স্লো ব্যাটিং শুরু করেছিল। তাড়াহুড়ো করার কিছু অবশ্য ছিল না। এমন উইকেটে টিকে থাকাটাই প্রথম ও প্রধান কাজ। রান তোলাটা পরের কথা। রানের জন্য তাড়াহুড়ো করা মানেই সর্বনাশ। টিকে থাকলে রান এমনিতেই আসবে। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা এই ভুলটা করেই ডুবল।ভারতীয়দের ব্যাপারেও প্রায় একই কথা বলতে হবে। বেশি তাড়াহুড়ো না করেও তো সাতটা উইকেট খুইয়ে বসল। রোহিত শর্মার (৫৮) মতো পারফরম্যান্স কেউ দেখাতে পারল না, এটাই দুর্ভাগ্যজনক। তবে অস্বীকার করার কোনও উপায়ই নেই যে, দারুণ বল করেছে ভারতীয় বোলাররা। ইনিংসের সাত বল বাকি থাকতেই শ্রীলঙ্কাকে অল-আউট করে দেয় ভুবনেশ্বর, ইশান্ত, অশ্বিন, জাডেজারা। অথচ দেখুন, কী আশ্চর্য, যে দিন ভুবনেশ্বর নামেনি, সে দিন কী দাপটই না দেখিয়েছিল শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। ভুবি তো এখন বাঁহাতিদের যম হয়ে উঠেছে। শুরু থেকেই বলে আগুন ঝরাচ্ছে ও। পরিবেশ ও উইকেটের অবস্থাকে কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, তা এখন থেকেই খুব ভাল বুঝে গিয়েছে ছেলেটা। যখন নিজেকে আরও উন্নত করবে, তখন আরও কত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে কে জানে। শ্রীলঙ্কার ওপেনাররা যখন প্রথম ছ’ওভারে ২৭ রান তুলে আগের সেই ম্যাচের মতো বিশাল পার্টনারশিপের দিকে এগনোর কথা ভাবছে, তখনই ভুবির আক্রমণ।

শ্রীলঙ্কার উইকেট পড়ার পরে ধোনিদের উল্লাস। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি
ধোনি সুস্থ হয়ে ফাইনালে দলকে নেতৃত্ব দিতে ফিরে এসেই টস জয়। টস জিতে আগে বোলিং করে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা একেবারে সঠিক। বাড়ি ফিরে না এসে কেন দলের সঙ্গে ক্যারিবিয়ান সাগরের তীরে রয়ে গিয়েছিল, এ বার বোঝা গেল। প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্তটা নেওয়ার কারণ, দলে ভুবনেশ্বর কুমার, জাডেজা, অশ্বিনের মতো বোলার আছে এবং যে কোনও রান তাড়া করে জেতার মতো ব্যাটিং লাইন-আপ রয়েছে।
সঙ্গকারা আধ ডজন বাউন্ডারি ও একটা ছয় মেরে ৭১ রান করে যখন অশ্বিনের ফুল টসে ছয় হাঁকাতে গিয়ে মিড অনে বিনয় কুমারের হাতে ধরা পড়ে গেল, তখন শ্রীলঙ্কা ১৭৪-৪। তার দু’ওভার আগেই ইশান্তের শর্ট বলে স্লগ করতে গিয়ে মিড অন থেকে অনেকটা ছুটে আসা ভুবির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যায় থিরামান্নে (৪৬)। এর পরই বিপক্ষের ইনিংসে ধস নামায় ভারতীয় বোলাররা।
ভুবির (২-২৪) শুরু করা আক্রমণে ইন্ধন জোগায় অশ্বিন-জাডেজা জুটি। সঙ্গকারা ও পেরেরাকে ফিরিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া অশ্বিন (২-৪২) মাঝে মাঝেই বেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের কাছে। জাডেজা (৪-২৩) আরও আক্রমণাত্মক। টেল এন্ডাররা সামলাতেই পারল না জাডেজার স্পিন। আট রানেই আউট শেষ চার ব্যাটসম্যান। ব্যাটিংয়ের এই অবস্থা যাদের, তারা তো সমস্যায় পড়বেই।

শ্রীলঙ্কা
তরঙ্গ ক ধোনি বো ভুবনেশ্বর ১১
জয়বর্ধনে ক অশ্বিন বো ভুবনেশ্বর ২২
সঙ্গকারা ক বিনয় বো অশ্বিন ৭১
তিরামানি ক ভুবনেশ্বর বো ইশান্ত ৪৬
ম্যাথেউজ ক বিনয় বো ইশান্ত ১০
পেরেরা স্টা ধোনি বো অশ্বিন ২
চান্দিমল ক অশ্বিন বো জাডেজা ৫
হেরাথ স্টা ধোনি বো জাডেজা ৫
এরঙ্গা ন আ ৫
মালিঙ্গা ক ভুবনেশ্বর বো জাডেজা ০
লকমল স্টা ধোনি বো জাডেজা ১
অতিরিক্ত ২৩,
মোট ৪৮.৫ ওভারে ২০১।
পতন: ২৭, ৪৯, ১৭১, ১৭৪, ১৭৬, ১৮৩, ১৯৩, ১৯৬, ১৯৬।
বোলিং: ভুবনেশ্বর ৮-৪-২৪-২, বিনয় ৬-১-১৫-০,
ইশান্ত ৮-১-৪৫-২, কোহলি ৩-০-১৭-০, রায়না ৬-০-২৫-০,
অশ্বিন ১০-০-৪২-২, জাডেজা ৭.৫-১-২৩-৪।

(স্কোর অসম্পুর্ণ)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.