|
|
|
|
গ্রামে ভোট দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে সূর্য |
বরুণ দে • নারায়ণগড় |
এক সময় দাপটের সঙ্গে রাজ্যপাট সামলেছেন। আজ নিজভূমে তাঁরাই যেন পরবাসী।
বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে নিজের গ্রামে ভোট দিতে এসে ক্ষোভের মুখে পড়লেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। আর এক প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁঁইয়া সকাল ৯টা নাগাদ নির্বিঘ্নে ভোট দিলেও তৃণমূলের সঙ্গে দলীয় কর্মীদের সংঘর্ষ সামলাতে নাজেহাল হন। আর ভোট দিলেনই না গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। দাসেরবাঁধ কঙ্কাল কাণ্ডে জামিন পেলেও জেলায় ঢোকা বারণ তাঁর। কলকাতায় বসে ফোনে সুশান্তবাবুর আক্ষেপ, “কোর্টের অনুমতি নিয়ে ভোট দিতে পারতাম। কিন্তু গেলেই কোনও অছিলায় গণ্ডগোল বাধাবে তৃণমূল। তাই গেলাম না।”
বুধবার রাতেই নারায়ণগড় পৌঁছে যান রাজ্যের সূর্যবাবু। সিপিএমের বেলদা জোনাল কার্যালয়ে রাত কাটিয়ে সকালে স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান খাকুড়দা প্রাথমিক স্কুলের বুথে। বেরোনোর পর সাংবাদিকরা ছেঁকে ধরেন বিধায়ককে। সূর্যবাবু বলেন, “সন্ত্রাসমুক্ত ভোট রাজনৈতিক দলগুলির উপর নির্ভর করে। বিশেষ করে শাসকদলের উপর। কিন্তু শাসকদলই তো সন্ত্রাস করছে।” বিধায়কের মুখে ‘সন্ত্রাসে’র কথা শুনে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা খেপে যান। সূর্যবাবু গাড়িতে ওঠার সময় তাঁকে ঘিরে রীতিমতো বিক্ষোভ হয়। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা বলেন, “মিথ্যে অভিযোগ করছেন কেন? আপনি তো এলাকাতেই আসেন না। উন্নয়নও হয় না। ২০০৮-এ বন্যার সময়ও আসেননি।” সূর্যবাবু শুধু বলেন, “আজ ভোট দিতে এসেছি। এ সব কথা বলার সময় নয়।” তৃণমূলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ হলেও নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের অবশ্য দাবি, “উনি (সূর্যবাবু) সন্ত্রাসের মিথ্যে অভিযোগ করছিলেন। সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদ করেছেন।”
এ দিকে, সবংয়ের বোড়ালে ভোট শুরুর পরে কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। ফোনে রিপোর্ট নিতে-নিতে সকাল ৯টা নাগাদ ভোট দেন মানসবাবু। এর পরেই চলে যান দলীয় কার্যালয়ে। তত ক্ষণে আরও গণ্ডগোলের খবর আসতে শুরু করেছে। দলীয় কার্যালয় থেকেই জেলা প্রশাসন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে ফোন করেন মানসবাবু। উত্তেজিত গলায় বলেন, “তৃণমূল এখন সিপিএমের কায়দায় রিগিং করছে। ভোটের নামে প্রহসন।” প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্তবাবু ভোট না দিলেও গড়বেতা ৩ ব্লকের দ্বারিগেড়িয়া বুথে (চন্দ্রকোনা রোড) এ দিন ভোট দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী করুণা ঘোষ। তিনি বলেন, “আগে ভোট হলেই আমাদের বাড়ি বা চন্দ্রকোনা রোড জোনাল পার্টি অফিস উৎসবের চেহারা নিত। আজ সেখানেই যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা।” |
|
|
|
|
|