বিরোধীদের বিশেষ প্রচার নেই। তবু ভাবনার অন্ত নেই রুহুল আমিনের। মনেপ্রাণে চাইছেন, ছেলে এ বার জেলা পরিষদের সদস্য হোক। কিন্তু ছেলে বিশেষ ডাকাবুকো নয়, এটাই তাঁকে সংশয়ে রেখেছে।
বেলকাশ, বাঘাড় ১ ও ২ পঞ্চায়েত নিয়ে বর্ধমান জেলা পরিষদের ২৭ নম্বর আসন। ভোটার সংখ্যা ৪৫২৯২। সেখানেই তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন নুরুল হাসান। তাঁর বাবা রুহুল আমিন ১৯৯৮ সালে জেলা পরিষদে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু হেরেছিলেন ১২ হাজার ভোটে। ছেলে সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, “আমি পারিনি, সে জন্যই চাইছি ছেলে জিতুক। কিন্তু ওর সাহসটা কম। তবে ভদ্র ও বিনয়ী। মানুষ কী ওর এই গুণগুলো দেখবে না? শুধু ডাকাবুকো নয় বলেই কি মানুষ ওর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবেন?”
প্রচারে বেরিয়ে নুরুল বলছেন, “আমি রাজনৈতিক পরিবারের ছেলে। আমি যেমন জেলা পরিষদে দাঁড়িয়েছি, তেমনি ভাতৃবধূ সোনালি বিবি রায়না ১ পঞ্চায়েতে দাঁড়িয়েছেন। তিনি গত বার জিতেছিলেন। এ বার আপনারা আমাদের দু’জনকেই আশীর্বাদ করুন।” |
কিছু কিছু ভোটার তাঁর বক্তব্যে অবশ্য বিশেষ খুশি নন। নবাবহাটে তিনি প্রচার সেরে বেরিয়ে যেতেই খোদাবক্স নামে এক ব্যক্তির দাবি, “আমাদের সঙ্গেই ঠিক ভাবে কথা বলতে পারছেন না। স্পষ্ট ভাষায় আমাদের সমস্যার কথা জেলা পরিষদে বলবেন কী করে?” আর এক ভোটার সুলেমান খানের অভিযোগ, “সিপিএম প্রার্থীকে এলাকাছাড়া করেছে তৃণমূল। তাই ফাঁকা মাঠে গোল দিচ্ছেন নুরুল সাহেব!”
প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাক বা না থাক, নুরুলের হয়ে প্রচারে নেমেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়না দাস, মলয় ঘটকের মতো দলের শীর্ষনেতারা। সোমবার পর্যন্ত বাইকবাহিনী নিয়ে তিনি নিজেও ঝড়ের বেগে ঘুরেছেন গ্রামে গ্রামে। মোটরবাইক বাহিনী নিয়ে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা পড়েছে। নুরুল অবশ্য বলছেন, “ক্ষতি নেই। প্রচার তো সারা। এখন শুধু একটু মুখ দেখিয়ে আসতে হবে পাড়ায় পাড়ায়।” জেলা পরিষদের এই আসনে নুরুলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের শেখ সামসুর আলি। সিপিএমের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই তিনি গ্রামছাড়া। প্রয়াত সিপিএম প্রদীপ তা-র এই এলাকায় সিপিএমের প্রচারও প্রায় নেই বললেই চলে। তা হলে কী অনায়াসে জিততে চলেছেন তৃণমূল প্রার্থী? সিপিএমের বর্ধমান সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক মেহেবুব আলম বলছেন, “যে সব পঞ্চায়েত নিয়ে ওই আসনটি তৈরি সেখানে বিধানসভা ভোটে আমরা ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছিলাম। তাই যদি ঠিক মতো ভোট হয় তাহলে ওই আসনে আমাদের এলাকাছাড়া প্রার্থীই জিতবেন। ভোটের দিন অবশ্য অন্য কিছু হলে সত্যিই ওরা ফাঁকা মাঠে গোল দেবে।” |