সম্পাদক সমীপেষু...
আর কত ফ্রন্ট খুলবেন
‘বদলা নেব’ শব্দ দুটি প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু শব্দ দুটির গুরুত্ব তখনই বোঝা যায়, যখন জানা যায় কে বলছেন, আর কাকে বলছেন। (‘ভোট প্রচারেও কমিশনকে...’, ৭-৭) আমাদের মাননীয়া তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী একই সঙ্গে অনেকগুলি ফ্রন্টে লড়াই শুরু করেছেন। এটি তাতে শেষ সংযোজন। এতে কিন্তু অনেক শক্তিক্ষয় হয়। ভাল হয়, যদি প্রতিপক্ষের গুরুত্ব এবং অগ্রাধিকার বিচার করে এক এক করে লড়া যায়। মনে হয় ওঁকে ঠিক পরামর্শ দেওয়ার লোকের অভাব। এ কথাটা আরও বোঝা যায় যখন প্রায়ই আদালতের রায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বাধা পায়।

তৃণমূল কংগ্রেসের যা জনপ্রিয়তা আছে, বর্তমানে তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনায়াসেই তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে। কিন্তু তারা যদি মনে করে, বিরোধী-শূন্য অবস্থায় শাসন করবে, তা হলে আলাদা কথা। তবে এটা মনে রাখা দরকার ৩৪ বছরের শাসনের শেষের দিকে সি পি এম-ও চেয়েছিল বিরোধী-শূন্য রাজত্ব চালাবে। তার জন্যই অত মারদাঙ্গা ও খুনোখুনি আমরা দেখেছিলাম।
প্রকৃতির বিরুদ্ধে গেলে কিন্তু প্রকৃতি প্রতিশোধ নেবেই
উষসী চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘জৈবিক অর্থে নারী বা পুরুষ হয়ে জন্মালেই এক জন মানুষের আচার-আচরণ, স্বভাব-ব্যবহার, এমনকী তাঁর যৌনতার প্রকাশভঙ্গি সমাজের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী না-ই চলতে পারে।’ (‘একা নিজের মতো’, ৯-৬) কথাগুলি সত্যি, কিন্তু একটা অন্য প্রশ্ন আছে। মেয়েলি পুরুষ যদি নিজেকে আরও মেয়েলি তৈরি করার জন্য আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্য নেয়, তখন কী হতে পারে? যতই আমরা মেয়েলি পুরুষের হৃদয়ের অন্তরালের দুঃখ-যন্ত্রণা একাকিত্ব নিয়ে কথা বলি না কেন, কিংবা মেয়েলি হাবভাবের কারণে সহপাঠীদের টিজিং থেকে বাঁচতে বাথরুমে লুকিয়ে কাঁদার জন্য হা-হুতাশ করি না কেন, প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করলে প্রকৃতি প্রতিশোধ নেবেই। ওই যে শরীরে ওয়াই ক্রোমোজমের উপস্থিতি, মেয়েলি পুরুষের কাছে তা বড়ই নির্মম। তার উপস্থিতির কারণেই তো শরীরে পুরুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উন্মেষ ঘটে। মেয়েলি পুরুষের শরীরে মেয়েলিপনার জন্য দায়ী ক্ষরিত হরমোন ওয়াই ক্রোমোজমের দাদাগিরির কাছে হার মানে। ওয়াই ক্রোমোজম এমনই যে, চরিত্র বদলায় না। বংশ পরম্পরায় নিজের গুণাগুণকে অটুট রাখে। আমাদের সমাজ মেয়েলি পুরুষকে নিঃসঙ্গ করে তুললেও মেয়েলি পুরুষ আরও মেয়েলি হতে গিয়ে অপারেশন করালে, শরীরে কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করলে জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। আরও মেয়েলি হওয়ার জন্য যখন কৃত্রিম ভাবে তৈরি ইস্ট্রোজেনের প্রয়োগ শরীরে চলবে, তখন তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার যন্ত্রণাও তিলে তিলে গ্রাস করবে। মেয়েলি পুরুষ আরও মেয়েলি হয়ে ওঠায় তার স্তন দেখে, মুখের আকৃতিতে মেয়েলি জৌলুস দেখে আমরা কেউ কেউ হাসি, কেউ কেউ মুখ বাঁকাই, তার মৃত্যু হলে কেউ কেউ সংবাদপত্র আর টিভি-তে ইন্টেলেকচুয়াল আলোচনা করে বাহবা নিই। কিন্তু বুঝতে চেষ্টা করি না তার শরীরের কষ্টের কথা। মানুষ তো আর গাছ নয় যে গ্রাফটিং, হরমোন প্রয়োগ বা সংকর জাতের তৈরি করে প্রয়োজন অনুযায়ী তাকে বানিয়ে নেব।
দায়
বৃদ্ধ মাতাপিতার দায় এড়ানো নাকি সন্তানের গণতান্ত্রিক স্বাধিকারেই পড়ে। (‘দায়’, সম্পাদকীয়, ৩০-৫) এ ক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রশ্ন উহ্য রইল। নীতির দোহাই পাড়া হল রাষ্ট্রকে তার বয়োবৃদ্ধ নাগরিকের দায় থেকে ছাড় দিতে। এবং শেষাবধি, সন্তান-সন্ততি আর রাষ্ট্রের মধ্যবর্তী যে সমাজ, তার উদ্দেশে শোনানো হল, এ সমস্যার সমাধানে উপায় খুঁজতে হবে তাকেই। অপি চ, ‘পরিবর্তন ও বিবর্তনের মধ্য দিয়াই’ সে সন্ধান-ক্রিয়া নাকি চলতে থাকবে। অর্থাৎ অসীম ভবিষ্যৎ জুড়ে প্রৌঢ়-প্রৌঢ়াদের বাস্তব অক্ষমতা-অসহায়তা মাঝে নির্ভর হবে কল্পরাজ্যের কপাল!
অথচ বৃদ্ধ জনক-জননীর প্রতি সন্তানের দায়বদ্ধতা আজও ভারতীয় সমাজে স্বীকৃত নীতি-নিয়ম। স্বাধিকারমত্ত সন্তান এখনও এখানে গৌরবহীন ব্যতিক্রম। এমন ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রেও তাই দেখা যায়, দুঃস্থ মা-বাবার অভিযোগ গ্রাহ্য করে আদালত সদর্থক নির্দেশ দিচ্ছে।
আর রাষ্ট্র? এক দিকে সে স্বেচ্ছামৃত্যু আটকাবে, অন্য দিকে, বার্ধক্যপীড়িত নাগরিককে শ্রবণ-দর্শন-শক্তি হারিয়ে অর্ধাহারে-অচিকিৎসায় তিলে তিলে মৃত্যুর গ্রাসে ঢলে পড়তে দেখেও সে ধৃতরাষ্ট্র হয়ে থাকবে তার কল্যণকামিতাকে খোলসে পুরে?
ভুল
কবীর সুমন লিখেছেন, ‘... কালীদাস রায়ের একটি কবিতার শেষ দুটি লাইন আমার আজও মনে আছে,
সন্ধে হয়ে এল ঐ
আর কতো বসে রই
তব রাজ্যে তুমি এসো চলে।

(রবিবাসরীয়, ৩০-৬) এখানে কয়েকটি ভুল আছে।
১) কালীদাস নয়, কালিদাস রায়।
২) কবিতাটি (‘প্রতিনিধি’) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কথা ও কাহিনী’ কাব্যের অন্তর্গত ‘কথা’ অংশে আছে।
৩) উদ্ধৃতিতে চারটি ভুল আছে। এক, ‘সন্ধে’ নয়, হবে ‘সন্ধ্যা’। দুই, ‘ঐ’ নয়, ‘ওই’। তিন, ‘কতো’ নয়, ‘কত’। চার, ‘রই’ শব্দটির পর বিস্ময়চিহ্নটি (!) বাদ গেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.