কুড়িয়ে পাওয়া গাছের ডাল, শিকড়, বাতিল হয়ে যাওয়া কাঠের টুকরো, নারকোলের মালা এই সব তাঁর শিল্পের উপকরণ। দশ বছর ধরে এ সব দিয়ে হাতের ছোঁয়ায় রূপায়িত করেন ফুলদানি, রকমারি ফুল, মন্দির বা মূর্তি। তিনি জলপাইগুড়ির সুহৃদ লেন-এর প্রসেনজিৎ দাস। প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই তুচ্ছাতিতুচ্ছ জিনিস দিয়ে বানিয়ে চলেছেন নানা শিল্পকর্ম। নারকোলের মালা, বাঁশ দিয়ে তৈরি করেছেন একতারা, কাঠের চামচ, ছাইদান। গায়ে তার বিচিত্র কারুকাজ। অব্যবহৃত খাটের ছত্রী হয়ে উঠেছে অভিনব ওয়াকিং স্টিক। তাতে চোখধাঁধানো সূক্ষ্ম কারুকাজ। এ সব শুধু সাজিয়ে রাখার জন্য নয়, ব্যবহারেরও বটে। তাঁর বাড়ির বসার ঘরখানা তাঁর তৈরি শিল্পকর্ম দিয়েই সুসজ্জিত। চার ধারে রয়েছে শিকড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন বিমূর্ত শিল্পকর্ম। কাঠের টুকরো দিয়ে বানিয়েছেন নানা চাবির রিং, কারুকার্য করা মন্দির। মাছের গায়ে কাঠ খোদাইয়ের অনন্য নিদর্শন তাঁর শিল্পীমনের অভিজ্ঞতা। সৃজিত সামগ্রী নিয়ে একটি প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছেন প্রসেনজিৎ।
|
বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে মাথাভাঙা সংলগ্ন গোঁসাইয়ের হাট কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বি এড কলেজের উদ্যোগে এক আলোচনা চক্র হয়। পরিচালক কমিটি সম্পাদক শিবসুন্দর সাহা স্বাগত ভাষণ দেন। প্রধান বক্তা আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, উত্তরে শিক্ষার প্রসারের ভিত্তি স্থাপন করেন বধানচন্দ্র রায়। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। এটিই কলকাতার বাইরে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর পথ ধরে আজকের শিক্ষার যে প্রসার ঘটেছে সে জন্য তাঁর কাছে আমরা ঋণী। আলোচনাচক্রে অংশ নেন কলেজের অধ্যাপক আবদুল মাতিন। ১ জুলাই এই মহতী উদ্যোগে আবৃত্তি সংগীতে কলেজ ছাত্রছাত্রীরা শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন।
|
‘তা থৈ উড়ান’-এ তনুশ্রী পাল তাঁর কবিতাগুলিকে চার পর্বে সাজিয়েছেন। প্রথম পর্বেই রয়েছে তা থৈ উড়ান, জ্বলে উঠি হাততালি, সেতুর ওপারে-সহ মোট ছত্রিশটি কবিতা। তনুশ্রী বলেছেন, ‘আমরা তো বসেই ছিলাম/ আকাশের ইশতেহার পাঠ করেছি’ বা ‘সে আমায় কমলা আগুন দেয়/ আর দেয় দাউ দাউ স্বর’, বা পরিক্রমা শেষচলে যাবো?/ অলৌকিক নদী মাঠ বনের উদ্দেশ? দ্বিতীয় পর্বে বিধবা ক্যানভাস, উহাদের কথা, ক্যামেরার জিভ কবিতায় তনুশ্রীর প্রশ্ন, কেন শুধু মোহিনী অট্টম? বা কলম ও নিভৃতি নিয়েছো?/নিয়েছো কি পোষ্য বেড়াল? কখনও কবি দেখেন, ক্যামেরার চোখে কিছু ধুতুরার মালা, কখনও তিনি অসংযমী আমি ভাঙি কাচের গেলাস। তৃতীয় ও চতুর্থ পর্বে কবিতাগুলির কিছু পঙক্তি আমি প্যাপিরাসে আর কোন মন্ত্র লিখব না/মাঠ জুড়ে হাঁটে শুধু অবিশ্রান্ত শব্দহীন ঘাস/আমি কি সমুদ্র পাবো। সবশেষে তনুশ্রী জানিয়ে দেন, আবার তো দেখা হবে/শিরিষ গাছের নীচে প্রান্তিক স্টেশনে। এই ভাবে তনুশ্রীর কবিতা গভীর থেকে গভীরতায় পা বাড়ায়। শব্দবিন্যাসের স্বতঃস্ফূর্ততায় বন্দি কবিতা সংকলনের প্রচ্ছদও প্রশংসার দাবি রাখে।
লেখা ও ছবি: সুদীপ দত্ত |