হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসায় উৎপন্ন বর্জ্য (বায়ো-মেডিক্যাল ওয়েস্ট) নিয়ে আশঙ্কায় শিলচর। খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকা ওই সব জিনিস থেকে মারাত্মক কোনও দূষণ ছড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসনও।
স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা বিভূতি ভট্টাচার্য বলেছেন, “জনস্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শিলচর শহরে বর্তমানে ১টি সরকারি হাসপাতাল, ১৬টি নার্সিংহোম এবং প্রায় ৪০টি চিকিৎসা-সংক্রান্ত পরীক্ষাগার রয়েছে। সব মিলিয়ে শহরে প্রতিদিন প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম ‘মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ তৈরি হয়। তার মধ্যে রয়েছে ব্যবহার হওয়া ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ, রক্ত-পুঁজ মেশানো তুলো, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সে গুলি নষ্ট করার কোনও ব্যবস্থা সেখানে নেই। ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডে খোলামেলা পড়ে থাকে। কখনও তা ফেলে দেওয়া হয় নালা-নর্দমায়। শিলচরের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলির কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, সমস্ত বর্জ্যই মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। কখনও যন্ত্রে পুড়িয়ে ফেলা হয় সে গুলি।
এই পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছে ‘অল আসাম নন-গভর্মেন্ট হেল্থ এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনটির বরাক উপত্যকা আঞ্চলিক কমিটির সহ-সভাপতি শীতলকৃষ্ণ ধর বলেন, ‘‘বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে মাঝেমধ্যেই নিয়ম বদলাচ্ছে। সে সবে তাল মিলিয়ে ব্যবস্থা করতে সমস্যা হচ্ছে। এর মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগ নিয়েছিল সবাই। বর্জ্য নষ্ট করতে পরিকাঠামো তৈরির জন্য ৪ বছর আগে পুরসভা জমি দেবে বললেও, এখনও তা হয়নি।’’ সংগঠনের সম্পাদক পিনাককান্তি চক্রবর্তীর দাবি, এখন তাঁরা নিজেরাই জমি খুঁজছেন।
পুরসভার সভাপতি সুস্মিতা দেবের জবাব, ‘‘জমি দেওয়া সমস্যার নয়। কিন্তু এলাকার মানুষের এতে আপত্তি রয়েছে। তা-ই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’’ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিব কমলকল্যাণ দত্ত বলেন, “বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।” সুস্মিতাদেবী এবং অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন জেলাশাসক জি এম হাজরিকা। |