পণের দাবিতে বধূকে আত্মহত্যার প্ররোচনা-খুন, বেঁটে বউকে লম্বা করার জন্য শারীরিক-মানসিক নির্যাতন বিবাহিতাদের উপরে অত্যাচারের ঘটনার তালিকায় এ বারের সংযোজন, মিনাখাঁর ঘিপুকুরিয়া গ্রামের পিঙ্কি মণ্ডল। পণের দাবিতে ও মেয়ে হওয়ার রাগে শ্বশুরবাড়ির লোক তাঁকে পিটিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ।
অভিযুক্তেরা পলাতক। পিঙ্কির কোলের মেয়েকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে। পিঙ্কির পরিবারের চিন্তা বেড়েছে সেই মেয়েকে নিয়ে।
বছর আড়াই আগে ঘিপুকুরিয়ার মহাদেব ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার পূর্ব নারায়ণপুরের পিঙ্কির (২০)। তাঁর বাবা রায়মোহনবাবু পুলিশকে জানান, রবিবার সন্ধ্যায় ফোন করে মহাদেব তাঁকে জানায়, পিঙ্কি অসুস্থ। রাতের দিকে গ্রামে পৌঁছে রায়মোহন দেখেন, বাড়ির সামনে একটি ভ্যানে শোয়ানো পিঙ্কির নিথর দেহ। অভিযোগ, কী ভাবেমারা গেল মেয়ে জানতেচাইলে রায়মোহনবাবুর উপরে চড়াও হয় জামাই ও তার পরিবার। পড়শিরা খবর দেন পুলিশকে। যদিও পুলিশ আসার আগেই সরে পড়ে মহাদেবরা। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” |
রায়মোহনবাবু পেশায় ছোটখাট মাছ ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, বিয়ের সময় পাত্রপক্ষের দাবি মেনেই নগদ ১০ হাজার টাকা, সোনার গয়না ও অন্য যৌতুক দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে অত্যাচার চলত পিঙ্কির উপরে।
গত বছর মহাদেব-পিঙ্কির মেয়ে হতে যা মাত্রা ছাড়ায়। পিঙ্কির জ্যাঠতুতো দাদা মিলন মণ্ডল বলেন, “বাচ্চাটার ভরণপোষণ, বিয়ের খরচ বাবদ আরও লক্ষাধিক টাকা চেয়েবসে পিঙ্কির শ্বশুরবাড়ি।” সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না রায়মোহনবাবুর। সমস্যার কথা জানান মেয়ের শ্বশুরবাড়ির গ্রামের লোকজনকে। সালিশি বসে। সেখানে পিঙ্কিদেবীর শাশুড়ি জানান, মেয়ে হওয়ার দায় বৌমার। তাই নাতনির ভরণপোষণ, বিয়ের জন্য টাকা দিতে হবে। সালিশিতে সমাধান মেলে না। উল্টে সালিশি বসানোর অপরাধে পিঙ্কির উপরে অত্যাচার বাড়ে। মাঝে বাপের বাড়ি চলে এসেছিলেন পিঙ্কি। বুঝিয়ে মহাদেব তাঁকে ফের ঘিপুকুরিয়ার বাড়িতে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন রায়মোহনবাবুরা।
তদন্তকারী এক পুলিশকর্তার দাবি, রবিবার রাতে ঘোষ পরিবার থেকে ফোন যায় থানায়। বলা হয়, পিঙ্কি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে বধূটি আত্মহত্যা করেছেন, না খুন হয়েছেন তা জানতে ময়না-তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ। পিঙ্কির স্বামী মহাদেব, দেওর জয়দেব, বাসুদেব, সহদেব, শাশুড়ি বৃহস্পতি, ননদ মামণি, জা হীরামতি সকলেই বেপাত্তা।
অন্য একটি ঘটনায়, বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে দোয়েল গোস্বামী নামে এক বধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর শ্বশুরফটিক ও শাশুড়ি বন্দনাকে ধরেছে পুলিশ। রবিবার মারা যান দোয়েল। স্বামী উজ্বল, দুই ননদ আশারানি রায় ও তারারানি বটব্যাল পলাতক। মাস দু’য়েক আগে বিয়ে হয় দোয়েলের। পণের দাবিতে তাঁর উপরে অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ। বন্দনাদেবী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। |