অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থক
কোথাও প্রার্থী আক্রান্ত, কোথাও ঘরছাড়া
কোথাও প্রচারে বেরিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রার্থীরা, কোথাও আবার খুনের হুমকিতে প্রার্থীরা ঘরছাড়া। শুধু প্রার্থীরাই নন, অনেকক্ষেত্রে প্রাণের দায়ে গ্রামের বাইরে থাকতে হচ্ছে সমর্থক ও ভোটের এজেন্টদেরও। রবিবার ও সোমবার এসব নিয়েই দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে বর্ধমান থানার আইসি ও জেলাশাসকের কাছে। দু’ক্ষেত্রেই অভিযোগের তীর তৃণমূল সমর্থকদের দিকে।
রবিবার বর্ধমানের বেলকাশ পঞ্চায়েতের মেঘনাদ সাহা পল্লিতে কংগ্রেসের দুই পঞ্চায়েত প্রার্থী আমের আলি শেখ ও রবি দাস প্রচারে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক অভিজিৎ সোম ও আরও দুই কংগ্রেস কর্মী নূরবক্ত শেখ ও আনোয়ার শেখ। অভিযোগ, প্রচার চলাকালীনই স্থানীয় কেষ্টপুর গ্রামের তিন ব্যক্তির নেতৃত্বে প্রায় ১০-১২ জন কংগ্রেস প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের উপর লাঠি, রড নিয়ে চড়াও হন। মারধর করা ছাড়াও ভোটার তালিকা, বুথ স্লিপ, লিফলেট ও টাকাপয়সা কেড়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
বেলকাশে আহত কংগ্রেস প্রার্থীরা।
বেলকাশ পঞ্চায়েতের আক্রান্ত কংগ্রেস প্রার্থী আমের আলি শেখ রবিবার বর্ধমান থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তৃণমূলের জেলা নেতা মহবুব আলমের অবশ্য দাবি, “এলাকার লোকেরাই কংগ্রেস প্রার্থীদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের কোনও কর্মী এতে জড়িত নন।” বর্ধমান থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে অভিযুক্তেরা পলাতক।
সোমবার কাটোয়ার দাঁইহাটেও প্রকাশ হাজরা নামে অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েত এলাকার এক কংগ্রেস নেতাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রকাশবাবু কংগ্রেসের হয়ে অগ্রদ্বীপে সংগঠন করেন। এলাকার প্রচুর মানুষ কংগ্রেসের প্রতি তাঁদের সমর্থনও জানাচ্ছেন। আর সেটাই তৃণমূলের সমস্যা। এর জেরেই দাঁইহাট শহরের ভেতর অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল প্রার্থী-সহ বেশ কয়েকজন প্রকাশবাবুর উপর চড়াও হয়েছিলেন বলে তাঁদের দাবি। বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সাহা বলেন, “কাটোয়া থানা ও সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচনী আধিকারিককে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।” তবে অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের সদ্য প্রাক্তন প্রধান নিতাই মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ মিথ্যা। এলাকার মানুষ জানে, ও কী রকম ছেলে।”
খণ্ডঘোষে গ্রামছাড়া দুই ব্যক্তি।
জেলাশাসকের দফতরে অন্য অভিযোগটি জমা পড়েছে সোমবার দুপুরে। খণ্ডঘোষ থানার সগড়াই পঞ্চায়েতের কেঁউদিয়া-লতিফপুরের ১৫ জন বাসিন্দা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, গত ১০ জুন প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের শেষ দিন জনাকয়েক দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়ি বাড়ি চড়াও হয়ে খুনের হুমকি দেয়, বোমাবাজিও করে। অভিযোগ, পরের দিনও একই ভাবে গ্রাম ছেড়ে চলে না গেলে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। ওই গ্রামবাসীদের দাবি, ১১ জুন থেকেই তাঁরা গ্রামছাড়া। ঘরছাড়াদের মধ্যে যেমন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রার্থী আছেন, তেমনি আছেন এজেন্ট ও সমর্থকেরাও। তাঁদের আশঙ্কা, গ্রাম ছাড়া হয়ে যাওয়ায় হয়তো ভোট দিতে পারবেন না তাঁরা। এঁদের মধ্যে দু’জন শেখ মনসুর আলি ও শেখ রামজান আলির কথায়, “যাঁরা আমাদের গ্রামছাড়া করেছে, তাঁরা আমাদেরই লোক। থানাতে বারবার এই ঘটনার কথা জানানো হলেও পুলিশ আমাদের গ্রামে ফেরাবার ব্যবস্থা করেনি। বাধ্য হয়েই সোমবার আমরা জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।” জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “ওই গ্রামের কিছু বাসিন্দা বাইরে আছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
খণ্ডঘোষের দুই তৃণমূল নেতা অপার্থিব ইসলাম ফাগুন ও মোয়াজ্জেম হোসেন মনি অবশ্য ওই গ্রামছাড়াদের ব্যাপারে দু’রকম কথা বলেছেন। অপার্থিব ইসলাম ফাগুন বলেন, “ওঁদের মধ্যে অনেকে তৃণমূল করেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের অনেকে সগড়াই পঞ্চায়েত দলের প্রার্থীদের হারাতে গোঁজ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। গ্রামের মানুষ তাই তাঁদের গ্রামে থাকা পছন্দ করছেন না।” তবে আরেক নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মনির দাবি, “ওঁরা আমাদের দলেরই লোক। ওঁদের ঘরে ফিরতে বলেছি। পুলিশ ও প্রশাসনকেও সহযোগিতা করতে বলেছি। ওঁদের ফেরার অসুবিধে নেই।”

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.