উত্তরের চিঠি

এয়ারপোর্ট চালু জরুরি
উত্তরবঙ্গের যে ক’টি জেলা রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বঞ্চিত, শোষিত ও অবহেলিত জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর। জেলার উন্নয়নে চরম বঞ্চনার নিদর্শন বালুরঘাট এয়ারপোর্ট। ৬৭ একর জমির উপর বালুরঘাট এয়ারপোর্টটি অবস্থিত। বর্তমানে এয়ারপোর্টটির অবস্থা খুবই শোচনীয় এবং ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিমান না চলার দরুন ও বিমান ঘাঁটিটি পড়ে থাকার দরুন এই এয়ারপোর্ট আজ ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৯৯০ সাল থেকে এখানে বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকাতে এটি কার্যত সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহর সংলগ্ন মাহিনগরে এয়ারপোর্টটি অবস্থিত। এলাকার কিছু মানুষ এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া -এর অধীন এয়ারপোর্টের সীমানা প্রাচীরের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে। স্টাফ কোয়ার্টার্সের অবস্থা খারাপ।
১৯৯০ সালে বিমান পরিষেবা বন্ধের আগে এক ছোট বিমান (এয়ার ট্যাক্সি) বালুরঘাট থেকে কলকাতা উড়ত। বিমানের রানওয়েটি পড়েই রয়েছে। এয়ারপোর্টের রানওয়ের অবস্থা বিক্ষত এবং এই রানওয়ের ওপর দিয়েই বিনা বাধায় সাইকেল, স্কুটার, ট্রাক্টর, মানুষ এমনকী গরুর গাড়ি সকলেই অবাধে যাতায়াত করে। অযত্নে পড়ে থাকা এয়ারপোর্টের অফিস ঘর ভেঙে যাচ্ছে এবং যন্ত্রপাতিগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক সময় ২৫-৩০ জন কর্মী নিযুক্ত ছিল। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার তরফে কর্মীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একমাত্র একজন অ্যাটেনডেন্ট রয়েছেন। মাহিনগর বিমান ঘাঁটির ভবিষ্যৎ কী তাও তার জানা নেই। অ্যাটেন্ডেন্ট পল্লবকুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এয়ারপোর্টের নানা জায়গায় প্রাচীর থেকে কেউ কেউ ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানকার স্টাফ কোয়ার্টারের অবস্থাও খুব খারাপ। বালুরঘাট মাহিনগর এয়ারপোর্টে কোনও গার্ড বা নিরাপত্তা রক্ষী না থাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপ ও মাল চুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
শেষ বার বছর খানেক আগে দিল্লি থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীকে নিয়ে একটি বিমান এখানে এসে নেমে ছিল। বর্তমানে এই এয়ারপোর্টটি চালু হওয়া খুবই জরুরি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দ্রুত উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। আশার অল্প আলো দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। রাজ্যে পরিবর্তনের নতুন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন জেলার এয়ারপোর্টগুলি থেকে হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু করতে সরকার উদ্যোগ নেবে। দীর্ঘ দিন জেলার ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিলি দিয়ে বাণিজ্য চলছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে এক্সপোর্ট ও ইমপোর্ট ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়িক কাজকর্মে এই জেলায় আসছেন অথচ এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নেই। তাই ব্যবসায়িক, প্রশাসনিক এবং সাধারণ মানুষের কাজে বালুরঘাট থেকে কলকাতা ও অন্যত্র যোগাযোগের জন্য পুনরায় বালুরঘাট এয়ারপোর্ট চালু করা জরুরি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাক্তন কারা ও সমাজক ল্যাণ মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী, বালুরঘাটের সংসদ প্রশান্ত মজুমদার, বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান সুচেতা বিশ্বাস, জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অমিত সরকার বালুরঘাট এয়ারপোর্টটি পুনরায় চালু করতে কোনও চেষ্টাই করেননি। এই সব জনপ্রতিনিধিরা এই এয়ারপোর্টটির ব্যাপারে অনেক প্রতিশ্রুতি আর আশ্বাস দিয়েছিলেন জেলাবাসীকে। কিন্তু বাস্তবে সরকারি পর্যায়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দক্ষিণ দিনাজপুরের আরএসপি, জাতীয় কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি বালুরঘাট এয়ারপোর্টটি চালু করতে কখনও আন্দোলন ও বিক্ষোভ দেখায়নি।
এই অবস্থায় আগামী দিনে বালুরঘাট এয়ারপোর্টটি পুনরায় চালু করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.