চোঙাকৃতি একটি পেল্লায় ভবন। ভিতরে থাকবে দর্শক টানার অভিনব আয়োজন। কলকাতার সায়েন্স সিটিতে পুরোদমে চলছে সেই ভবন তৈরির কাজ। তবে, ভিতরের আধুনিক আর আকর্ষণীয় ব্যবস্থাদি শেষ হতে লাগবে আরও প্রায় এক বছর। কর্তৃপক্ষের দাবি, গোটা বিশ্বে এমন পরিকল্পনা রূপায়িত হচ্ছে এই প্রথম।
প্রকল্পটির নাম ‘সায়েন্স এক্সপ্লোরেশন হল’। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এর জন্য বরাদ্দ করেছে ৩০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে খরচ হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। তিনতলা ওই চোঙাকৃতি ভবনটির উচ্চতা হবে প্রায় ৩৬ ফুট। ব্যস ১২৬ ফুট। ওই ভবনটির মোট আয়তন হবে সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গমিটার।
ভবনটি কেন অভিনব? ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সায়েন্স সিটির অধিকর্তা অরিজিৎ দত্তচৌধুরী বলেন, “নির্মীয়মাণ ভবনটির তৃতীয় তলে থাকবে মানবসভ্যতার বিবর্তনের আলেখ্য। এর জন্য বাঁকা দেওয়ালে প্রায় ১২৫০ বর্গমিটার অংশে চলছে পেন্টিংয়ের কাজ। সেটিকে ‘ডিজিটাল’ আদল দেওয়া হবে। মনে হবে চলচ্চিত্র। কুরুক্ষেত্রের সায়েন্স সিটিতে এ ধরনের একটি আলেখ্য আছে। কিন্তু তাতে ‘ডিজিটাল’ আদল নেই। |
কলকাতায় যেটি হচ্ছে, সেরকম প্রকল্প গোটা বিশ্বে নেই।” এ ছাড়া ভবনের প্রথম তলে থাকবে জীবনের উৎস নিয়ে তথ্য ও ছবি এবং দ্বিতীয় তলে ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ঐতিহ্য বিষয়ক তথ্য-ছবি-মডেল। ফি বছর টিকিট কেটে সায়েন্স সিটিতে আসেন প্রায় ১৫ লক্ষ দর্শক। প্রতি বছর সেই সংখ্যাটা অন্তত ৫০ হাজার বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না বলে কর্তৃপক্ষ চিন্তিত। তাঁদের আশা, ‘সায়েন্স এক্সপ্লোরেশন হল’ এবং সংলগ্ন উড়ালপুলের কাজ শেষ হলে দর্শক সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। ইতিমধ্যেই খুদে দর্শক টানতে সর্বশিক্ষা মিশনের পড়ুয়াদের টিকিটের মূল্যে কিছুটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ লোকের প্রবেশমূল্য মাথাপিছু ৩০ টাকা হলেও ভিতরের নানা ভবনের টিকিটের দাম ধরলে সেটা দাঁড়ায় মোট ১২০ টাকা। সাধারণ পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে তা ৫০ টাকা, সর্বশিক্ষা মিশনের পড়ুয়াদের ২৫ টাকা করে।
সায়েন্স সিটির সামনে উড়ালপুলের লাগোয়া রাস্তা মেরামতির জন্য ফাইবার গ্লাসের তৈরি ডাইনোসরটি সরানোর কথা চলছিল। প্রায় এক যুগ আগে তৈরি ওই ডাইনোসরটি যেন সায়েন্স সিটির একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে। অরিজিৎবাবু বলেন, “আশার কথা, ওটিকে আর সরানোর দরকার হচ্ছে না। বরং ভিতরে বসানোর জন্য প্রায় ২৫ ফুট উঁচু আরও একটি ডাইনোসর তৈরি হচ্ছে। বাইরের ডাইনোসরটির মতো এটিও হবে ধাতব কাঠামোর উপরে ফাইবার গ্লাসের।” |