|
|
|
|
আনন্দplus এক্সক্লুসিভ |
হ্যাপি বার্থডে দাদা
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানতেন তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে আসছেন আনন্দবাজারের ক্রিকেট প্রতিনিধি।
সেই মতোই
বেহালার বাড়িতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করা ছিল দুপুর একটায়। একমাত্র ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় জানতেন,
ইন্টারভিউটা সত্যি কে নেবেন! সৌরভ যাঁকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। “আরে কোয়েল, তুমি!” |
আপাতত দাঁড়িয়ে বাঙালি ক্রিকেট রসিকের পুণ্যতীর্থ ২/৬ বীরেন রায় রোড ইস্টে।
আরও ঠিকঠাক করে বললে বাড়ির এক তলায়। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন ক্রিকেট ট্রফি ছাড়াও আরও একটা জিনিসের অধিষ্ঠান। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন অফিসের। সৌরভ গিয়েছিলেন কোয়েল-রানের বিয়েতে। বিয়েতে এলেও সৌরভের সঙ্গে সে ভাবে কখনও কথা হয়নি কোয়েল মল্লিকের। তবে কোয়েল তো সেই কবে থেকেই সৌরভের গল্প শুনে আসছেন। ডোনা এবং তিনি, দু’জনেই গোখেল কলেজের। ডোনা কয়েক বছরের সিনিয়র। বছরখানেক বাদেও নাকি গোখেল কলেজে ঘুরে বেড়াত সৌরভ-ডোনার প্রেম কাহিনি। গাঙ্গুলি বাড়িতে প্রথম পা-দেওয়া এক্সাইটেড কোয়েল তো জিজ্ঞেসই করে ফেললেন, “শুনেছি সেই সময় তুমি নাকি আমাদের কলেজের বাইরে দাঁড়াতে?” ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার আগেই ইনসুইং ইয়র্কার আশা করেননি সৌরভ। কোনও রকমে ব্যাট নামালেন, “ধুর্, বার দু’য়েক গেছি।”
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে আর জন্মদিনের কী উপহার দেওয়া যায়? সৌরভের যোগ্য উপহার বাছার চেয়ে বোধহয় তাঁকে বল করা সহজ। আনন্দplus-এর পক্ষ থেকে তাই নিছকই শুভেচ্ছা বয়ে আনা বার্থ ডে কেক আর কয়েক বাক্স বিরিয়ানির প্যাকেট।
প্রথম ঠিক হল কেক কাটা হবে। আর সেটা গাঙ্গুলিবাড়িতে নয়। একই ঠিকানা সমন্বিত পাশের রায়বাড়িতে। সেখানে ঝকঝকে সুইমিং পুলের সামনে বসে কেক কাটলেন সৌরভ। কোয়েল সানগ্লাস আনেননি। রোদ্দুরে মানিয়ে নেওয়ার জন্য দ্রুত গাঙ্গুলিবাড়ি থেকে সৌরভেরই রোদচশমা আনা হল তাঁর জন্য।
কেক কাটা, খাওয়া, ছবি তোলা সব হল। হাল্কা আড্ডাও। এ বার ফেরত গাঙ্গুলিবাড়িতে।
আমরা অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, কোয়েল ইন্টারভিউতে বসে গেলেন, কিন্তু তাঁর হাতে কোনও কাগজ নেই। আমাদেরও জিজ্ঞেস করেননি কী প্রশ্ন-টশ্ন করব? তা হলে ইন্টারভিউয়ের কোচিংটা ওঁকে করাল কে? সৌরভকে সৌরভের বাড়িতে বসে কাগজ না-হাতে নিয়ে ইন্টারভিউ। আমরা মনে-মনে তারিফ করলাম কোয়েলকে।
একটা টেপ রেকর্ডার টেবিলের ওপর ফেলে ওঁদের একা কথা বলতে ছেড়ে দেওয়া হল...
|
কেক খাওয়া তো হল, এ বার ইন্টারভিউ করি।
হ্যাঁ, এটা কিন্তু শক্ত কাজ। দিস ইজ দ্য টাফেস্ট পার্ট।
(হেসে) আই নো। আই নো।
চলো, শুরু করো।
এটা ইন্টারভিউয়ের মধ্যে রাখব কি না জানি না। জানতে ইচ্ছা করছে বলে করলাম। বাবা মারা যাওয়ার পর তোমার প্রথম জন্মদিন। শুনেছি উনি তোমার হিরো ছিলেন। আজকের দিনে অনুভূতিটা কেমন?
কী আর বলব। বাবা ছাড়া নতুন একটা জন্মদিন খুব অন্য রকম। অন্য বার আমার জন্মদিন হলেও, হই-হট্টগোল-ঠাট্টা-ইয়ার্কি সব বাবাকে ঘিরেই হত। বাবার জন্য খাওয়া-দাওয়া। আমরা সবাই ওঁকে ঘিরে বসে থাকতাম। আজ তাই জন্মদিনের মধ্যেও একটা দুঃখের রেশ থেকে যাচ্ছে। এর মধ্যে আনন্দ করা সম্ভব নয়। তাই আজকে ইট উইল বি আ ভেরি কোয়ায়েট অ্যাফেয়ার। কোনও সেলিব্রেশন হচ্ছে না।
আচ্ছা, অনেকের কাছে তুমি মহারাজ, বহু মানুষের কাছে ‘দ্য প্রাইড অব বেঙ্গল’, লাখ লাখ লোকের কাছে আন্তর্জাতিক আইকন। তো ইন্টারভিউতে আমি কী নামে তোমায় সম্বোধন করব?
জাস্ট সৌরভ। (হাসি)
আচ্ছা সৌরভ, তা হলে বলো এত মানুষের যে ভালবাসা তোমার প্রতি, তার তো একটা পাহাড়প্রমাণ চাপ আছে। তুমি যখন খেলতে, এমন বহু মানুষ আছেন, যাঁরা তুমি আউট হলেই টিভি বন্ধ করে দিতেন। সেই দলে আমার বাবাও ছিলেন। এত ভালবাসার চাপ তুমি সামলাও কী ভাবে?
হ্যাঁ, মনে আছে যখনই ভাল খেলতাম, রঞ্জিতদা নিয়ম করে আমায় এসএমএস পাঠাতেন। কী জানো কোয়েল, আমি ভীষণ ভাগ্যবান। আই অ্যাম ভেরি ফরচুনেট, না হলে এত মানুষের এত ভালবাসা পাওয়া যায় না।
কিন্তু কী বলো তো, আমি এটাকে কোনও দিন প্রেশার মনে করিনি। আসলে এমন একটা খেলা খেলতাম যেখানে একটা বলেই তোমার ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে, হাজারো মিডিয়া তোমাকে প্রতিনিয়ত ক্রিটিসাইজ করছে। সেই প্রেশারটার কাছে এই ভালবাসা কোনও প্রেশারই নয়। আর তা ছাড়া আমি বিশ্বাস করে এসেছি, প্রেশার ইজ হোয়াট ইউ ডু উইথ ইট। তুমি যদি মেন্টালি স্ট্রং না হও, তা হলে প্রেশার তোমাকে চেপে ধরবে, যদি শক্ত থাকো সেই প্রেশারটাকে ডিল করতে পারবে সঠিক ভাবে।
আমি আর এক ভাবে প্রেশারটাকে হ্যান্ডেল করতে শিখেছিলাম... |
|
সেটা কী ভাবে?
সেটা নিজের জোন তৈরি করে। তুমি দেখবে, এভরিথিং ইন লাইফ ইজ মেন্টাল। তাই কোনও চাপের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই আমি মেন্টালি একটা জোনে চলে যেতাম। সেখানে ক্রিটিসিজম, এত মানুষের ভালবাসা কিছুই ম্যাটার করত না। ওটা আমার জোন। ওই জোনে আমাকে কিছুই অ্যাফেক্ট করত না। হয় না, একটা বক্সার রিংয়ে এত ঘুসি খেয়েছে যে, সে আলটিমেটলি ইমিউন হয়ে যায়! ওই জোনটা সে রকমই। মনটাকে ও রকম জোনে না নিয়ে যেতে পারলে তুমি সাকসিড করতে পারবে না ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টসে। তুমি যদি ও সব না ভেবে ভাবো আজকে ১০০ করলে আমি ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন হব, ২০০ করলে ম্যান অব দ্য সিরিজ হব, আইপিএল-এ কয়েকটা ম্যাচে ভাল খেললে কয়েক কোটি বানাব, তা হলে তুমি ফেল করতে বাধ্য। ইউ উইল বি স্পয়েলিং ইয়োর গেম।
তোমার এই জোনটা কিন্তু ভীষণ ইন্টারেস্টিং।
হ্যাঁ, ওটা একটা ছোট ওয়াল্ডর্, বাট আ ভেরি ইম্পর্ট্যান্ট ওয়ার্ল্ড। প্রেশার হ্যান্ডেল করতে হলে ওই পৃথিবীটা ক্রিয়েট করা খুব জরুরি।
আচ্ছা সৌরভ, যখন তুমি খেলতে, তোমার ডিসিশনের ওপর টিম ইন্ডিয়ার ভাগ্য নির্ভর করত। তোমার ছোট কোনও ডিসিশন জেতা হারা নিশ্চিত করতে পারত। সেই টেনশনের মুহূর্তগুলো কী ভাবে সামলাতে?
দ্যাখো, ২০০০ সালে যখন আমি ক্যাপ্টেন হই, একজন আমাকে বলেছিল, মাঠে যখন তুমি নামছ ক্যাপ্টেন হিসেবে, তখন বাকি ব্যাপার একেবারে ভুলে যেয়ো। মানে মিডিয়া কী বলল, এক্স-ক্রিকেটাররা কী বলল, এগুলো যেন তোমার কাছে ম্যাটার না করে। আমি ওই মাইন্ড সেটটাই রাখতাম মাঠে নামার সময়। আমি এটুকু জানতাম, না মিডিয়া, না এক্স-ক্রিকেটার কেউ ডিসিশন নিতে তো পারবে না। ডিসিশন যা নেওয়ার তা তো ক্যাপ্টেন হিসেবে আমাকেই নিতে হবে। তাই যদি হয় তাহলে আই উইল ডু ইট মাই ওয়ে।
তাই ওদের কথা না ভেবে মাঠে নামতাম এবং নিজের ডিসিশনের ওপর ভরসা রাখতাম। ইট’স আ কোশ্চেন অব ট্রেনিং ইয়োর মাইন্ড।
অ্যান্ড হুইচ ইউ ডিড ব্রিলিয়ান্টলি।
সেটা আমি জানি না। বাট পুরোটাই মেন্টাল। তুমি সচিন তেন্ডুলকরকে দেখো। লাস্ট ২০ বছর আমার থেকে অনেক বেশি প্রেশার ও সামলেছে। তাই দেখবে একটা স্টেজের পর ক্রিকেটাররা অ্যালুফ হয়ে যায়। দেখবে, অনেকে বলে আরে ওই ক্রিকেটার সেই রকম মেশে না আর। মিশবে কী করে? সে তো সেই নিজের পৃথিবীতে রয়েছে।
এন্টারটেনমেন্ট ওয়ার্ল্ড-এর মানুষজনেরাও কিন্তু এই পৃথিবীটা ক্রিয়েট করে।
করতে তো হবেই। তুমি সাকসেসফুল হতে যদি চাও, এই পৃথিবীটা ক্রিয়েট করতেই হবে।
ঠিক বলেছ তুমি। অভিনেতারাও নানান সময় নানান মুডে থাকেন। ডিপ্রেসড থাকেন। কিন্তু এক বার ক্যামেরা অন হলে তাঁরা বাকি পৃথিবী থেকে সুইচড অফ হয়ে যান।
এগজ্যাক্টলি কোয়েল। এটা ধোনি ব্রিলিয়ান্টলি করে। ও কারও সঙ্গে কথা বলে না, নিজের জগতে থাকে। আর কী বলো তো, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট খেলার কয়েক বছরের মধ্যে একটা জিনিস আমার মাথায় ঢুকে গিয়েছিল।
সেটা কী?
সেটা হল, এই পৃথিবীতে যদি দশ জন মানুষ থাকে, তা হলে পাঁচ জন তোমায় ভালবাসবে। পাঁচ জন বাসবে না। তুমি কিছু করেও সবাইকে খুশি রাখতে পারবে না। |
“একদিন কেক খাও ওয়েট বাড়বে না” |
হ্যাঁ, সেটা সব সময় পসিবলও হয় না।
কারেক্ট। পসিবলও হয় না। আর খুশি করতে যাবেই বা কেন? পাঁচ জন যে তোমার বিরুদ্ধে, এটার সঙ্গে কিন্তু ভাই তোমাকে নিজেই ডিল করতে হবে।
ওখানে তুমি একা।
ইয়েস, একেবারে একা।
সৌরভ, বহু মানুষকে তুমি ইন্সপিরেশন জোগাও। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কী ভাবে নিজেকে ইন্সপায়ার করে?
দেখো, সব মানুষের আলাদা আলাদা মেথড থাকে। আমি কিন্তু সাঙঘাতিক গোল ওরিয়েন্টেড ছিলাম না। আই রিমেম্বার, হোয়েন আই ওয়াজ ফিফটিন, দাদা ওয়াজ টোয়েন্টি টু। দাদা আর আমি যখন খেলতাম, তখন মনে আছে দাদা পাঁচটায় উঠত। স্নান করে, ব্রেকফাস্ট করে রেডি হত আগে থেকে। সেখানে দাদা আমাকে সাড়ে সাতটায় ওঠাত। কোনও ক্রমে চা-বিস্কুট খেয়ে মাঠে চলে যেতাম। কখনও সেই মাইন্ড সেটটা হেল্প করে। নিজের মনে থাকো। জেতা হারা ভেবো না। জাস্ট এনজয় করো।
তুমি তো অনেক সময় বলেছ, লর্ডসের প্রথম টেস্ট ম্যাচের সময় তোমার যে স্টেট অব মাইন্ড ছিল, সেটা আর কোনও দিন ফিরে আসেনি।
হ্যাঁ। একশো টেস্ট ম্যাচ খেললাম তার পর। কিন্তু কিছুতেই ওই স্টেট অব মাইন্ডে পৌঁছতে পারলাম না। কখনও কখনও ইগনোর্যান্স ইজ ব্লিস। লর্ডসে আমার কিছুই হারানোর ছিল না। কিন্তু তার পরের টেস্ট ম্যাচ থেকেই আমার মাইন্ড সেটটা চেঞ্জ হয়ে গিয়েছিল। তখন চিন্তাটা ছিল পরের টেস্ট ম্যাচে ভাল রান পাব তো!
মানে প্রেশার অব পারফরম্যান্সটা শুরু হয়ে গেল?
ইয়েস। আসলে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমে চান্স পেয়ে যাওয়ার প্রেশার অত নেই। প্রেশার হল চান্স পেয়ে ভাল পারফর্ম করে ফেলার পর। দ্যাটস হোয়েন দ্য প্রেশার স্টার্টস।
আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড কী সাঙ্ঘাতিক প্রেশার সেটা।
কিন্তু কী জানো, আমি ক্রিকেট থেকে একটা জিনিস শিখেছি।
সেটা কী?
সেটা হল, তুমি ট্রেনিং আর প্র্যাকটিস যদি মন দিয়ে করো, তা হলে সেটার ফল ভাল হবেই। ইয়োর হোমওয়ার্ক, ইয়োর ট্রেনিং উইল নেভার গো ওয়েস্টেড। জীবন ফিরিয়ে দেবেই। হয়তো ক্রিকেটের কথায় বললে, সেই ম্যাচেই দিল না, কিন্তু কোনও একটা খুব ক্রুশিয়াল ম্যাচে দেখবে জীবন ফিরিয়ে দিচ্ছে, অ্যাকনলেজ করছে তোমার হার্ডওয়ার্ক।
মানে ওই হার্ডওয়ার্কটা একটা কনফিডেন্স জোগাত তোমায়?
কনফিডেন্স ঠিক না কোয়েল। একটা বিশ্বাস জোগাত। ইট গেভ মি আ বিলিফ। কিন্তু এ রকম চিন্তাধারা ১৭-১৮ বছর বয়সে আসে না। এটা আসে ২৮-৩০-এর মধ্যে। আর এটা ছাড়া কপাল তো আছেই। ওটা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। |
“আমটা অন্তত খাও, মিষ্টি,” কোয়েলের দিকে প্লেট এগিয়ে দিচ্ছেন দাদা |
তোমার গলায় তো অনেক স্টোন থাকত খেলার সময়?
এখনও আছে। আমার মা আমাকে ওগুলো পরতে বলত। তবে হ্যাঁ, আমি নিজেও ভগবানকে খুব বিশ্বাস করি।
তোমার কোনও কুসংস্কার ছিল?
ছিল তো। লেফট প্যাডটা আগে পরতাম সব সময়।
তোমার সময় টিমের বাকিদের সুপারস্টিশন ছিল? আফটার অল ক্রিকেটারস আর নোন টু বি সুপারস্টিশাস।
ইয়েস ইয়েস দে আর। ধরো আমরা টেস্ট ম্যাচ খেলতে একটা ড্রেসিংরুমে ঢুকলাম। সেই ভেনুতে হয়তো আগের বছর একটা ম্যাচ হয়েছে যেখানে কোনও ক্রিকেটার ভাল রান পেয়েছে। তো সেখানে ঢুকেই দেখবে সেই ক্রিকেটার এক বছর আগের সেই সিটটা নিয়ে নিয়েছে। রাহুল দ্রাবিড় ওর ফেভারিট সিটে বসবে, সচিন ওর ফেভারিট সিটে। কী বলো তো! ও সব ঠিক আছে, তবে টেস্ট ম্যাচে ব্রেট লি-কে ফেস তো তোমাকে নিজেকেই করতে হবে।
আচ্ছা সৌরভ, যখন ব্রায়ান লারা বলে ইউ আর দ্য বেস্ট ক্যাপ্টেন অব ইন্ডিয়া, কী রাহুল বলে, ‘অন দ্য অফ সাইড দেয়ার ইজ গড অ্যান্ড দেন দেয়ার ইজ সৌরভ’, তখন কেমন লাগে?
ভাল লাগে। ফেলো ক্রিকেটার কী অপোনেন্ট ক্রিকেটারেরা যদি তোমায় সম্মান জানায় তখন ভীষণ তৃপ্তি হয়।
আচ্ছা, তুমি কোন কোন ক্রিকেটারকে অ্যাডমায়ার করো?
সুনীল গাওস্করকে করি। ১৯৮৩ ওয়ার্ল্ড কাপের পরে কপিল দেবকে ভীষণ অ্যাডমায়ার করতাম। নিজে বাঁ-হাতি বলে গাওয়ার আর বর্ডারকেও খুব অ্যাডমায়ার করতাম। রাহুল দ্রাবিড়কে অ্যাডমায়ার করতাম ফর দ্য ম্যানার ইন হুইচ উই উড গো অ্যাবাউট থিংগস।
কী করত রাহুল দ্রাবিড়?
রাহুল দ্রাবিড় হচ্ছে ক্লাসের ফার্স্ট বয়। ম্যাচের আগের দিন সময়মতো ঘুমোবে, ঠিক ঠিক খাবে, ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবার আগে পৌঁছবে, টিম বাসে সবার আগে উঠবে। ওর ক্রিকেট কিটটা থাকবে একেবারে পারফেক্ট। একদম স্পিক অ্যান স্প্যান। শার্ট পরলে কলারের বোতামটা আটকাবে। ও একেবারে স্কুলের ফার্স্ট বয়।
হাহাহাহা।
হ্যাঁ, সত্যি। অন্য দিকে সচিনকে দেখেছি। হোটেলের ঘরে চারিদিকে প্যাড গ্লাভস। ব্যাট নিয়ে সারা ক্ষণ কী একটা করছে, অগোছালো। |
নিরূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম কোয়েলের |
তোমার ঘর কী রকম থাকত খেলার সময়?
আই ওয়াজ অল ওভার দ্য প্লেস। সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত।
আচ্ছা, এমনও তো হয় যখন মন ভাল থাকে না। আত্মবিশ্বাস কম থাকে। তখন কী করতে তুমি?
আমি ভাল সময়গুলোর কথা ভাবতাম। আমার একটা অভ্যেস ছিল। কোনও ম্যাচে শতরান করলে আমি হোটেলে ফিরে এসে তার আগের দিন রাতে আমার স্টেট অব মাইন্ড-টা কেমন ছিল সেটা লিখে রাখতাম। যখনই কনফিডেন্স কম থাকত, ওই লেখাগুলো পড়তাম। দেখতাম কী ভাবে আমি প্রিপেয়ার করছি, কোন বোলারকে নিয়ে কী ভেবেছি। এটা আমাকে কনফিডেন্স দিত।
সেই লেখাগুলো আজকে কোথায়?
(হেসে) কে জানে! তোমায় একটা গল্প বলি তা হলে, পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচ সে বার বেঙ্গালুরুতে, তার আগের সিরিজে একটা ৪০ ছাড়া কোনও রান নেই ব্যাটে। মিডিয়াতে খুব ক্রিটিসিজম। ম্যাচের আগের দিন সকালে প্র্যাকটিস হয়েছে। হোটেলে ফিরে লাঞ্চ করে আমি ঘুমিয়ে পড়েছি। ঘুম থেকে উঠে আমার ভাল লাগছিল না। খালি মনে হচ্ছিল কালকে ম্যাচে রান পাব না। আই ডোন্ট নো আই ওয়াজ দ্যাট ডিপ্রেসড। তখন ঠিক করলাম যাই একটু দৌড়ে আসি। রানিং শ্যুষ পরে তাজ ওয়েস্ট এন্ড থেকে বেরোলাম। ওই হোটেলের পাশে একটা মাঠ আছে। একা একা হাঁটতে শুরু করলাম। বেঙ্গালুরু এমনিই ক্রিকেট পাগল। আমাকে দেখে অনেকে এগিয়ে এল। কেউ বলল, কোনও চিন্তা নেই, তুমি রান পাবেই। কেউ এসে বলল তুমি ক্যাপ্টেন, তুমি রান না পেলে কী হবে। এই শুনতে শুনতে আমি দৌড়চ্ছিলাম আর বুঝতে পারছিলাম আমি সব কিছুই অ্যাবজর্ব করছি। সাড়ে সাতটা থেকে টিম মিটিং ছিল। তার একটু আগে হোটেলে ফিরে আসি আমি। কিন্তু জানো, আই ওয়াজ ফিলিং বেটার। ওই দৌড়তে দৌড়তে আমি বুঝলাম, এই তো জীবন। কেউ ভাল বলবে, কেউ খারাপ বলবে। তোমাকে শুধু দৌড়ে যেতে হবে। আমার মাইন্ডটা এ বার ক্লিয়ার
হয়ে গেল। পরের দিন টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছিলাম।
ওয়াও, হোয়াট আ লাভলি স্টোরি।
যখন গ্রেগ চ্যাপেল...
আই ওয়াজ কামিং টু দ্যাট। যখন গ্রেগ চ্যাপেল তোমার সঙ্গে ও রকম করল, তখন ফার্স্ট থট কী ছিল?
ওই যে আগে বললাম। একটা ঘরে যখন ঢুকবে তখন দেখবে পাঁচ জন তোমার বন্ধু। পাঁচ জন নয়। এখানেও তাই। অ্যাট টাইমস সেটা মোটিভেশনের কাজ করে। আমি জানতাম আমাকে সারভাইভ করতে হবে।
আচ্ছা, গ্রেগ চ্যাপেলের আমলে যখন কামব্যাক করলে, কখনও মনে হয়নি, কেমন দিলাম দেখো?
না না, একদমই নয়। খালি রান পাওয়ার পর এটা মনে হয়েছে, ইয়েস, আই বিলং টু দিস টিম। আর আমি তো জানতাম টিমের অনেকেই মনে মনে আমাকে সাপোর্ট করত। হরভজন ছিল, সহবাগ ছিল, সচিন ছিল, ধোনি ছিল। এদেরকে দেখতাম। হ্যাঁ, টিম এনভায়রনমেন্টে সব সময় হয়তো সবাই সব কিছু বলতে পারত না। বাট আই নিউ দে ওয়্যার হ্যাপি দ্যাট আই অ্যাম ব্যাক। আর কী বলো তো আমাদের স্পোর্টস পারসনদের জীবন এমনিই ছোট। সো আই ওয়ান্টেড টু মেক ফুল ইউজ অব ইট। এটা কিন্তু অন্য কোথাও নেই।
আমাদের এন্টারটেনমেন্ট ওয়ার্ল্ডও তাই কিন্তু?
হ্যাঁ, কিন্তু তোমরা আরও কিছু দিন কাজ করতে পারো। তোমার রোল চেঞ্জ হতে পারে, কিন্তু অভিনয় তো চালিয়ে যেতে পারবে। বুম্বাদা তো আজও ফাটিয়ে কাজ করছে। সেখানে সাম্প্রাস ২৯-য়ে খেলা ছেড়ে দিল। রজার ফেডেরারকে দেখো। ৩০ বছর বয়েসেই ওঁর খেলা পড়ে যাচ্ছে। এইটুকু তো জীবন স্পোর্টস পারসনদের। |
সানার খরগোশ কোথায় থাকে, ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন দাদা |
আচ্ছা সৌরভ, আমিও জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বড় হয়েছি। তুমি আজও জয়েন্ট ফ্যামিলিতে থাকো। তোমার কি মনে হয় অ্যাজ ক্যাপ্টেন তুমি যে সবাইকে নিয়ে চলতে পেরেছ, তার জন্য তোমার জয়েন্ট ফ্যামিলির ব্যাকগ্রাউন্ড হেল্প করেছে?
হ্যাঁ, করেছে। এতগুলো লোককে নিয়ে চলা, এটা জয়েন্ট ফ্যামিলি শিখিয়েছে আমায়। আর জয়েন্ট ফ্যামিলি যেটা শেখায়, সেটা হল অ্যাডজাস্টমেন্ট।
একুশ-বাইশ বছরের যে ছেলেটা ছিল, তার সঙ্গে আজকের একচল্লিশ বছরের সৌরভের কি কোনও চেঞ্জ হয়েছে?
হ্যাঁ, হ্যাঁ। অবশ্যই হয়েছে। আই হ্যাভ চেঞ্জড আ লট। যারা বলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেঞ্জ হয়নি, তারা মিথ্যে বলছে। অনেক চেঞ্জ হয়ে গিয়েছি আমি।
আচ্ছা ২০০৩-য়ের তোমার ওই সলমন খান মোমেন্টটা?
সলমন খান মানে?
ওই লর্ডসে জামা খুলে উচ্ছ্বাসটা?
ওটা হিট অব দ্য মোমেন্ট একটা রিঅ্যাকশন ছিল কোয়েল, আর কোনও দিন করব না।
ওই রিঅ্যাকশনটা দেখে মনে হয়েছিল, দ্য চাইল্ড উইদিন সৌরভ গাঙ্গুলি হ্যাজ কাম আউট।
(হেসে) সেটা আমি জানি না, বাট আর কোনও দিন ওটা করব না।
সৌরভ, আমাদের প্রফেশনের একটা দিক হচ্ছে এখানে মার্কশিট লুকোনো যায় না। তুমি কোনও অফিসে কাজ করো। সেখানে তোমার প্রোমোশন হল কী ডিমোশন হল, সেটা গুটিকয়েক মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আমাদের কিন্তু তা নয়। এই কন্টিনিউয়াস মার্কশিট দেখাতে দেখাতে টায়ার্ড লাগত না?
লাগত তো। সাঙ্ঘাতিক টায়ার্ড লাগত। তাই তো ইংল্যান্ডে চলে যেতাম। ওই জায়গাটা আমার খুব পছন্দের। ওখানে বাড়িও কিনেছি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ইংল্যান্ড যেতে চাই। ওখানকার কী সব চেয়ে ভাল লাগে জানো?
কী?
ভাল লাগে বাড়ি থেকে বেরিয়েই আমি হাঁটতে পারি। একা একা হাঁটি। ক্লান্ত লাগলে একটা কফি শপ থেকে কফি কিনে একটা কোণে বসে কফি খাই। ওখানে রাস্তায় টেবিল রাখা থাকে না?
হ্যাঁ।
সেগুলোতে বসে কফি খাই। বিভিন্ন ধরনের লোকজন দেখি। ইংল্যান্ড গিভস মি আ লট অব পিস অ্যান্ড পিস।
আচ্ছা কখনও মনে হয়নি সেলিব্রিটি হওয়ার জন্য আমার এটা করা হল না? আমার তো খুব ইচ্ছে করে বৃষ্টির মধ্যে ভিক্টোরিয়ার সামনে গিয়ে ভিজি। কিন্তু আজ আর পারি না। তোমার হয়নি কখনও এ রকম? কখনও মনে হয়নি ফুটপাতে হাঁটতে পারছি না কলকাতায়?
না। ফুটপাতে হাঁটার ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু বাকি জিনিসগুলো আমি ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন থাকাকালীন করতাম। আলিপুরে ফুচকা খেতে যেতাম। রেস্তোরাঁয় খেতে যেতাম। কী আর হবে! মানুষ এসে দু’টো কথা বলবে, ছবি তুলবে, অটোগ্রাফ নেবে। কত ক্ষণের ব্যাপার, ম্যাক্সিমাম ৫-৭ মিনিট। বাকি সময়টা তো আমার নিজের। আর আজ তো খেলা ছাড়ার পর সেই চাপ নেই। এক্সাইটমেন্ট নেই।
এক্সাইটমেন্ট নেই?
না গো কোয়েল। কোনও এক্সাইটমেন্ট নেই। খেলার সময় আর খেলা ছাড়ার পরের সময়টার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। যখন রিটায়ারমেন্ট ঘোষণা করেছিলাম, আমাকে মিডিয়া প্রশ্ন করেছিল কী মিস করব আমি সব চেয়ে বেশি? আমি বলেছিলাম যে থ্রিল, যে এক্সাইটমেন্ট ব্রেট লি কী শোয়েব আখতারকে ফেস করে একটা সেঞ্চুরি করার মধ্যে আছে, সেই থ্রিলটার বেশি আর কিছু হতেই পারে না।
তাই, না?
একেবারেই তাই। ওই এক্সাইটমেন্টের পর আর কী থাকতে পারে? আজ সে রকম কোনও এক্সাইটমেন্ট নেই। এই যে ‘দাদাগিরি’ করি... |
|
আবার শুরু হচ্ছে তো ‘দাদাগিরি’...
হ্যাঁ। আবার শুরু হচ্ছে। কিন্তু ওই যে ‘দাদাগিরি’ করি, একটা এপিসোডও কোনও দিন দেখিনি...
কী বলছ?
হ্যাঁ। একটা এপিসোডও দেখিনি। এই যে কমেন্ট্রি করি, শোনার কোনও ইচ্ছেও হয়নি। এনডিটিভি-তে একটা প্রোগ্রাম করতাম। আজ অবধি দেখিনি প্রোগ্রামটা। কিন্তু আজও যখন টিভি-তে নিজের খেলার ক্লিপিংস দেখি, বসে পড়ি দেখতে।
সেটা যদি রাত আড়াইটে হয়?
কিছু এসে যায় না আমার। আমি দেখবই। দ্যাট স্টিল গিভস মি প্লেজার।
এই যে তোমার জন্মদিন, প্রচুর গিফ্ট পাবে নিশ্চয়ই?
ধুর্, আমাকে কেউ গিফ্ট দেয় না সানা ছাড়া। নোবডি গিভস্ মি এনি গিফ্ট। সানা দেয়। এই তো ফাদার্স’ ডে-তে আমাকে কার্ড দিল।
তুমি কি খুব কনভেনশনাল বাবা?
ইয়েস, ইয়েস। আই অ্যাম আ ভেরি কনভেনশনাল ফাদার। আমি হচ্ছি ‘গো টু ফাদার’। কোনও দরকার হলেই সানা আমার কাছে আসে। এই তো গতকাল ওর ম্যাথস্ টিউশন যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওর ইচ্ছে ছিল না। আমি বললাম দাঁড়া দেখছি। পরে ওর মা এসে আমাকেও বকল, সানাকেও ঝাড়ল। (হেসে) ওকে স্কুলে পৌঁছে দিই। মাঝে মাঝে আই পিক হার আপ। ও কোনও পার্টিতে গেলেও আমিই পৌঁছে যাই। আমার হয়তো নেমন্তন্ন নেই, কিন্তু তা-ও চলে যাই।
আজকে ৪১তম জন্মদিনে ফিরে তাকালে কী মনে হয় তোমার?
ইট’স বিন আ গুড জার্নি। বাট লাইফ’স চেঞ্জড আফটার আই স্টপড প্লেয়িং। ওই যে বললাম একটা এক্সাইটমেন্টের অভাব আছে। আমার বয়সি সবাই বই লিখে ফেলেছে। আমার ইচ্ছে হয়নি। হ্যাঁ, ক্রিকেট আজও আমাকে আনন্দ দেয়। ধোনিরা জিতলে ভাল লাগে। হারলে খারাপ লাগে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ওভার্টলি হ্যাপি কি ওভার্টলি স্যাড আর হই না আমি।
বাবা তো তোমার ফ্যান। তুমি জানোই, আমার বর রানেও রেসপেক্টস ইউ আ লট। ও আমাকে বলছিল তোমায় জিজ্ঞেস করতে, এই যে আইপিএলের পর বলা হচ্ছে খেলার পিয়োরিটি চলে গেল, সেই ব্যাপারটা কী ভাবে দেখ তুমি!
দ্যাখো, আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেট ইজ দ্য পিয়োরেস্ট ফর্ম অব ক্রিকেট। কিন্তু তুমি যদি আইপিএল দেখো, যে ক্রিকেটাররা খেলছে তাদের কাছে কিন্তু এটাও একটা ক্রিকেট ম্যাচ। যে এন্টারটেনমেন্টের কথা আমরা বলছি সেটা কিন্তু মাঠের বাইরে। সেখানে শাহরুখ আছে, প্রীতি আছে, কিন্তু ক্রিকেটারদের কাছে এটা একটা কম্পিটিটিভ ক্রিকেট ম্যাচ। টোয়েন্টি ওভার ক্রিকেট ইজ হিয়ার টু স্টে। আইপিএল থাকবে।
|
|
আজ যখন ধোনিরা দারুণ খেলে একটা টুর্নামেন্ট জেতে, তখন তোমার মনে হয় না, “ইশ্, যদি ড্রেসিং রুমে থাকতে পারতাম?”
না গো, মনে হয় না। এটাই ভাবি কপিল দেবকেও তো অবসর নিতে হয়েছিল। গাওস্করও রিটায়ার করেছিলেন। এমনকী ডন ব্র্যাডম্যানকেও রিটায়ার করতে হয়েছিল। এই সাউথ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজের পর সচিনও রিটায়ার করবে। এটা পুরোটা একটা সার্কেল অব লাইফ।
আমাদের পেশাটা এমনই, তুমি একবার লাইমলাইট থেকে চলে গেলে মানুষ তোমায় ভুলে যায়।
আমার মনে হয়, লোকে ভোলে না। আজও তো মানুষ উত্তমকুমারকে ভোলেননি। সুচিত্রা সেনকে ভোলেননি। অমিতাভ বচ্চনকে কি কেউ ভুলবেন কোনও দিন? দিলীপকুমারকে কি ভুলেছে? কপিল দেব, সুনীল গাওস্করকে কি কেউ ভুলেছে নাকি? শাহরুখের ‘ডিডিএলজে’ প্রায় কুড়ি বছর আগের ছবি। কিন্তু আজও লোকে ভোলেনি। ১৫-২০ বছর পর দেখবে লোকে তোমার কথা বলছে, যে কোয়েল এ রকম কাজ করত। কোয়েল ওই রোলটা ভাল করেছিল। তারা সত্যিই ভালবাসে। তারা ভোলে না।
রিয়েল ফ্যানদের একটা সেন্টিমেন্ট থাকবেই।
হ্যাঁ হ্যাঁ, সারা জীবন থাকবে।
আচ্ছা, খারাপ সময়েই তো মানুষ তার নিজের বন্ধুদের চিনতে পারে— তুমি বিশ্বাস করো এই কথাটায়?
(হেসে) না গো। আই হ্যাভ স্টপ্ড জাজিং পিপল। আমি আর বন্ধু চিনতে পারি না। আই হ্যাভ গিভেন আপ। টু ডে আই ট্রাই টু বি নাইস টু এভরিওয়ান। জীবনটা পুরো বদলে গিয়েছে। আর সকাল সাড়ে ছ’টায় উঠি না, সেই পাগলের মতো ট্রেনিং করতে হয় না। একটু ভুঁড়ি বেরোলে মা বকে, তখন একটু ট্রেনিং করি। আগে আট রাউন্ড দৌড়ানোর পর যখন হাঁপিয়ে যেতাম তখন ভাবতাম দশ রাউন্ড না হলে ফিটনেস টেস্ট পাস করতে পারব না। তাই যে ভাবেই হোক দশ রাউন্ড শেষ করতাম। আজকে ছ’রাউন্ডের পর হাঁপিয়ে গেলে থেমে যাই। ট্রেনার যদি বলে আর দু’রাউন্ড বাকি আছে, আমি বলি, তুমি দৌড়ও আমি বসে দেখি (হাসি)।
হাহাহা। থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ সৌরভ। উইশ ইউ আ গ্রেট ফর্টিফার্স্ট বার্থ ডে।
থ্যাঙ্ক ইউ কোয়েল। তুমিও খুব ভাল থেকো। হ্যাভ আ গ্রেট লাইফ।
ফাইনালি সৌরভ, বার্থ ডে বয়ের একটা মেসেজের জন্য কিন্তু আনন্দplus-য়ের পাঠকরা ওয়েট করে আছে। হোয়াট উইল বি ইয়োর মেসেজ?
আমি একটা কথা বলব কোয়েল। আমার একটাই মেসেজ। তুমি স্টুডেন্ট হতে পারো। অফিসে চাকরি করতে পারো। ব্যবসা করতে পারো। বাড়ির কাজ করতে পারো। যাই করো না কেন সেটাতেই অ্যাচিভার হওয়ার চেষ্টা করো। প্লিজ বি অ্যান অ্যাচিভার। তা না হলে জীবনটা ভীষণ বোরিং হয়ে যায়।
|
ছবি: কৌশিক সরকার; বিরিয়ানি: ঔধ ১৫৯০;
পরিকল্পনা: গৌতম ভট্টাচার্য; রূপায়ণ ও বিন্যাস: ইন্দ্রনীল রায় |
|
|
|
|
|