• কোচাবাম্বা • বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস-এর ডাকা জরুরি বৈঠকে ছুটলেন ইকুয়েডর-এর প্রেসিডেন্ট রাফায়েল করিয়া। গেলেন ভেনেজুয়েলার ভাইস-প্রেসিডেন্টও। মোরালেস (বাঁ দিকে) ও করিয়া (ডান দিকে) অগ্নিবর্ষী বক্তৃতায় দাবি করলেন, আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশকে তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, এক্ষুনি!
সত্যি, কোথাকার জল যে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপাতত হন্যে হয়ে স্নোডেন নামের ব্যক্তিটিকে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে, সব বন্ধু দেশকে অনুরোধ করেছে স্নোডেনকে আশ্রয় না দেওয়ার জন্য। তবে লাতিন আমেরিকার দেশগুলিই যে শেষ পর্যন্ত স্নোডেনকে তাদের দেশের দরজা খুলে দেবে, এও তারা জানে (ইকুয়েডরের দূতাবাসে জায়গা পেয়েছেন উইকিলিকস-খ্যাত অ্যাসাঞ্জ, স্নোডেন-এর ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলা)। সুতরাং, সম্প্রতি মোরালেস যখন তাঁর বিমানে ইউরোপের উপর দিয়ে উড়ছিলেন, মার্কিন নির্দেশে সেই বিমানকে অবতরণ করতে অনুমতি দিল না একের পর এক দেশ: ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল, স্পেন। শেষে অস্ট্রিয়ার মাটিতে নামলেন তিনি।
দেশে ফিরে এসেই মোরালেস এক মুহূর্ত নষ্ট না করে মিটিং ডাকলেন। মার্কিন নির্দেশেই যখন অকারণে বিমান না নামতে দেওয়ার মতো এমন আন্তর্জাতিক অপরাধ, তখন বেশ, তিনি এবং তাঁরাও যুদ্ধ জারি করবেন! তাঁর দেশ বলিভিয়ায় মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দিচ্ছেন তিনি, দরকার নেই কূটনৈতিক ভানভনিতার! ইকুয়েডর ও ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপ্রধানরাও সাফ বলে দিলেন, তাঁরা সবাই এক দল, বলিভিয়ার বিরুদ্ধাচারণ করলে তাঁদের সকলের বিরুদ্ধেই করা হয়েছে, ধরে নিতে হবে!
ইতিমধ্যেই ক্ষমা চেয়েছে ফ্রান্স। বলেছে, ‘ভুল তথ্য, তাই’..। অন্য দেশগুলোও কি মানে মানে নত হবে লাতিন আমেরিকার রোষের সামনে? না কি মার্কিন রোষের ভয় তার চেয়েও বড়? দেখা যাক। আপাতত, উত্তর আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার ঠান্ডা লড়াই জারি!
|
• দোহা • হিন্দুত্বের আগ্রাসন! ফাঁকতালে প্রাচ্য ধর্ম আর কুসংস্কারের আমদানি! ইত্যাদি অভিযোগ উঠল ‘যোগ’ অর্থাৎ যোগাসনের বিরুদ্ধে, ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে। আমেরিকার স্কুলে স্কুলে এখন যোগাসনের ক্লাসের ধুম। অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত। শেষ পর্যন্ত হিন্দু ‘ব্রাহমিন’-দের মতো জোড়হাতে ধ্যানে বসবে তাঁদের বাচ্চারা? কিন্তু জজসাহেব রায় দিলেন, যোগ প্রাচীন হিন্দু সভ্যতা থেকেই এর প্রচলন শুরু হলেও এখন আর এতে হিন্দুত্ব নেই। যোগ-এর এই জয়ে কেবল শিক্ষকরাই হাঁফ ছাড়লেন না, মার্কিনি তরুণসমাজও খুশি। যোগ যে ফিগার ও ফিটনেস রক্ষার অব্যর্থ পন্থা, তাঁরা জানেন। তাই তো এ বছর ৪ জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে, নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে রাশি রাশি মানুষ যোগচর্চা করেই দিনটি পালন করলেন। (ছবি)
|
এঁর নাম কেউ জানুক না জানুক, এই মুহূর্তে দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এক জন ইনিই, তাবৎ বিশ্বের উৎকণ্ঠিত দৃষ্টি এখন এঁরই উপর। এই অমিতপ্রতাপ কিন্তু প্রচ্ছন্ন মানুষটির নাম: চিফ জেনারেল আবদেল ফতা আল-সিসি, সংক্ষেপে, সিসি। মিশরের যে সামরিক অভ্যুত্থান বজ্রাহত করে দিয়েছে গোটা পৃথিবীকে, সেই অভ্যুত্থানের নায়ক কিংবা খলনায়ক ইনিই।
সাত দিন সময় দিয়েছিলেন অধুনা-প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুর্সিকে, ক্ষমতার গদি থেকে নেমে আসার জন্য। মুর্সি সে প্রস্তাব মানেননি। সুতরাং সপ্তম দিনের মাথায় দেখা গেল, মিশরীয় আর্মড ফোর্সের হেডকোয়ার্টারের সামনে পোডিয়ামের উপর দাঁড়িয়ে কঠোরবদন আল-সিসি ঘোষণা করছেন, প্রেসিডেন্ট মুর্সি-কে সরিয়ে সেনাবাহিনী দেশের ভার নিল। আবার একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট ঠিক হবেন। মুর্সি ও তাঁর রক্ষণশীল ইসলামি দল মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক নেতা এই মুহূর্তে গোপন ডেরায় বন্দি।
সিসি কি ঠিক বলছেন? সত্যিই আবার নির্বাচন হবে? নাকি মিশরের গণতন্ত্রের মেয়াদ এক বছরেই ফুরোল? নাকি সেনাশাসনেই থাকবে মিশর? ঐতিহাসিক তহরির স্কোয়ার উত্থানে প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারককে সরানো হচ্ছিল যখন, তখনও সেনার অতিরিক্ত প্রতাপ দেখেছিল মিশর। নির্বাচন অবশ্য হয়ে ছিল তার পর। আবারও কি সেনাবাহিনী মুক্ত নির্বাচন করতে দেবে? এ সব প্রশ্নের সঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন এখন মুখে মুখে ঘুরছে: কে এই সিসি, কেমন লোক?
জেনারেল সিসি কিন্তু শুক্রবার বিকেলবেলা বেশ অনুদ্বিগ্ন বার্তা পাঠিয়েছেন সৌদি আরবে। বলেছেন, মিশরের অবস্থা স্থিতিশীল। সৌদি রাজা আবদুল্লা উত্তর দিয়েছেন, বিশেষ বিচক্ষণতা ও সতর্কতা দরকার মিশরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে।
এর মধ্যেই মুর্সির ৩০ জন সমর্থক নিহত ও সহস্রাধিক আহত। শুধু কায়রো নয়, আলেকজান্দ্রিয়া-সহ আরও অনেক শহরে। আবার কি হিংসায় ডুবে যাবে মিশর? পারবেন কি সিসি, সেটা ঠেকাতে? |