|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
এত অযত্ন পাঠক সইবেন! |
বইপোকা |
অমিতার প্রেম আশালতা সিংহের প্রবন্ধগ্রন্থ! বিস্ময়কর এই ভুল তথ্যটি দিয়াছে সই গল্প সংকলন (সম্পাদনা নবনীতা দেবসেন, সহ সম্পাদনা অঞ্জলি দাশ, লালমাটি)। আপাতদৃষ্টে এই তথ্যভ্রান্তি তুচ্ছ মনে হইলেও প্রকৃত প্রস্তাবে তাহা নহে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের লেখিকা গোষ্ঠীর প্রথম সংগঠন ‘সই’-এর সংকলন ইহা। সম্পাদকের বয়ানে, ‘সই মানে স্বাক্ষর, সই মানে সখী, আর সই মানে, সহ্য করি (করছি, কিন্তু আর করব না!)’। এমন জ্বলজ্বল ঘোষণা যে সংগঠনের তাহার সহিত অগ্রজা লেখক সম্পর্কে তথ্যসঞ্চয়ে এমন উদাসীনতা লাগসই হয় কি? ‘অমিতার প্রেম’ আশালতার বিখ্যাত উপন্যাস এবং তিনি মূলত কথাসাহিত্যিক। তাঁহার একটিমাত্র প্রবন্ধগ্রন্থের নাম সমী ও দীপ্তি (১৯৩৯)। ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় তাঁহার প্রবন্ধ ‘নারী’র প্রথম কিস্তি পড়িয়া তাঁহাকে পত্র লিখিয়াছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ‘নারীর মনুষ্যত্ব’ নামে সে পত্র-প্রবন্ধ তাঁহার সমাজ গ্রন্থে সংকলিত। এ সকল নাই সই-এর লেখক পরিচিতিতে। বস্তুত, কোন নীতি মানিয়া এই পরিচিতি নির্মিত তাহাই বুঝা গেল না। স্বর্ণকুমারী দেবী, বেগম রোকেয়া, সাবিত্রী রায়ের পরিচিতি সর্বাধিক ১৫ শব্দে সমাপ্ত, কিন্তু নবনীতা দেবসেন, সুস্মেলী দত্ত প্রসঙ্গে শব্দসংখ্যা ২৫ হইতে ৫০! শ্রাবস্তী বসুর ‘প্রকাশিতব্য’ গ্রন্থেরও উল্লেখ আছে অথচ সংকলিত গল্পের উৎস বলা হয় নাই! ‘সই’ লইয়া কথা অযথা না বাড়াইয়া সম্পাদনায় যত্নবান হইলে কাজ হইত। ‘দেড়শো বছরের বাঙালি মেয়ের কণ্ঠস্বর কান পেতে শোনার চেষ্টা’ এমন দায়সারা প্রকারে করিলে পাঠক কিন্তু বলিতেই পারেন, ‘সহ্য করছি, কিন্তু আর করব না!’ |
|
|
|
|
|