|
|
|
|
জঙ্গলমহলের অতি স্পর্শকাতর এলাকায় বাড়তি সতর্কতা |
ঝুঁকি এড়াতে ভোটের দিনই বুথে ভোটকর্মীরা
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
মাওবাদী প্রভাবিত ঝাড়গ্রাম মহকুমার সবক’টি বুথ স্পর্শকাতর হওয়ায় পঞ্চায়েত ভোটে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মহকুমার মোট বুথের সংখ্যা ১০২৬টি। এর মধ্যে অতি স্পর্শকাতর বা ‘সুপার সেনসেটিভ’ বুথের সংখ্যা ৭০৬। শুক্রবার ঝাড়গ্রামে এক প্রশাসনিক বৈঠকে এই বিষয় নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা আলোচনা করেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, নিরাপত্তার কারণে ওই সব বুথের মধ্যে কয়েকটি বুথে ভোটকর্মীদের ভোটের আগের রাতে সেক্টর অফিসে রাখার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। নির্বাচন কমিশন সবুজ সঙ্কেত দিলে ওই সব বুথের ভোটকর্মীদের ভোট গ্রহণের দিন ভোরে পুলিশি প্রহরায় বেশ কিছুটা পথ পায়ে হাঁটিয়ে বুথে পাঠানো হবে। যে রাস্তা দিয়ে ভোট কর্মীরা যাবেন, সেই সব রাস্তায় থাকবে পুলিশ-বাহিনীর অতন্দ্র প্রহরা। শুধু তাই নয়, ভোট চলাকালীন কোনও বুথে সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট বুথের প্রিসাইডিং অফিসার অথবা ফাস্ট পোলিং অফিসার তাঁদের মোবাইল ফোন থেকে একটি নির্দিষ্ট নম্বরে সাঙ্কেতিক এসএমএস পাঠাবেন। ওই বার্তা সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পৌঁছে যাবে। পুলিশ-প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সেক্টর অফিসার এবং রির্টানিং অফিসারেরা ওই সাইট থেকে সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারবেন কোন বুথে সমস্যা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে ঝাড়গ্রাম মহকুমা শান্ত রয়েছে। কিন্তু এই আপাতশান্ত পরিস্থিতি দেখে আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। কারণ, অতীতে দেখা গিয়েছে, মাওবাদীরা নির্বাচনের সময় নাশকতা চালিয়ে প্রচার পেতে চায়।’’
এ দিন দুপুর বারোটায় মহকুমাশাসকের সভাঘরে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশাসন ও পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে ওই সমন্বয় বৈঠকটি হয়। বৈঠকে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) অরিন্দম দত্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমনকুমার ঘোষ, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া রায়চৌধুরী, জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক শম্পা হাজরা, ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) সুমিতকুমার, এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) সন্তোষকুমার মণ্ডল প্রমুখ। এ ছাড়াও ছিলেন মহকুমার ৮টি ব্লকের বিডিও এবং ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার অন্তর্গত আটটি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএসপি, আইসি ও ওসি-রা। ৭০৬টি অতি স্পর্শকাতর বুথের মধ্যে কোন কোন বুথে রাতের বেলা ভোটকর্মীদের রাখা যাবে না, সেই সব বুথের তালিকা দ্রুত তৈরি করার জন্য বিডিও-দের নির্দেশ দেন অরিন্দমবাবু ও সুমিতবাবু। বর্ষায় জল-কাদার জন্য কোনও বুথের যাওয়ার রাস্তায় গাড়ি না চললে সেখানে ট্রাক্টরে করে ভোটকর্মীদের পৌঁছনো হবে। জামবনি ব্লকে এমন সমস্যা হওয়ার আশঙ্কায় ট্রাক্টর প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে বৈঠকে জেলা আধিকারিকদের জানানো হয়। অতি বর্ষণে প্রত্যেক বছর সাঁকরাইল ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় ‘বন্যা-পরিস্থিতি’ তৈরি হয়। সে জন্য সাঁকরাইল ব্লকের সুবর্ণরেখা ও ডুলুং নদী লাগোয়া ৬টি বুথের জন্য দু’টি নৌকোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশাসনিক বৈঠকটি শেষ হওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠক করে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) অরিন্দম দত্ত জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচন করার জন্য প্রশাসন সব রকম প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। প্রতিটি বুথে কেমন নিরাপত্তা থাকবে জানতে চাওয়া হলে অরিন্দমবাবুর জবাব, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ীই প্রতিটি বুথে বাহিনী থাকবে।” |
|
|
|
|
|