হোমওয়ার্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা এত দিনে বুঝল বিরাট, রোহিত, শিখররা। এটা আগে বুঝলে বোধহয় শুক্রবার কুইন্স পার্ক ওভালে এত চাপ নিয়ে নামতে হত না ওদের।
যাই হোক, ‘বেটার লেট দ্যান নেভার’। একেবারে বোধোদয় না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়া ভাল। সেটা হয়েছে দেখেই ভাল লাগল। শুক্রবার কুইন্স পার্ক ওভালে রোহিত ও শিখর শুরু থেকে যে ব্যাটিংটা করল, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে পা রাখার পর থেকেই যদি এই কৌশলটা নিতে পারত ওরা, তা হলে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হত না। এখন তো শুধু দুটো ম্যাচে জিতলেই হবে না, অনেক অঙ্কের হিসেবও রয়েছে এর মধ্যে। তবে সে সব বাদ দিয়ে এই দুটো ম্যাচে নিজেদের খেলাতেই মন দেওয়া উচিত ওদের। শিখর (৬৯) ও রোহিত (৪৬) তা করতে পারলেও রায়না, কার্তিকদের থেকে আর তা পাওয়া গেল কোথায়? কোহলিও (১০২) রোহিতদের প্ল্যান অনুযায়ী খেলেই সফল হল। একদম ‘ক্যাপ্টেন’স নক’। ঠান্ডা মাথায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। |
যে ভাবে ধীরেসুস্থে ব্যাটিংটা শুরু করেছিল দুই ওপেনার, ১২৩ রানের একটা পার্টনারশিপ তৈরি করল, তাতে আমার বিশ্বাসই ছিল ভারত বড় রান করবে। ১২৩-০ থেকে ১৬৪-৪ হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য রাস্তাটা বেশ মসৃণ হয়ে গিয়েছিল। বিরাট কোহলি বুক চিতিয়ে দাঁড়াল বলেই ভারতের পক্ষে ক্যারিবিয়ানদের ঘাড়ে ৩১১ রানের পাহাড় চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হল। এর পরেও ভারত এই ম্যাচে না জিতলে অবাক হব।
যদিও ক্রিস গেইল যতক্ষণ ক্রিজে, ততক্ষণ কোনও রানই বিপজ্জনক নয়। কিন্তু লড়াই করার মতো একটা জায়গায় থাকতে হবে তো। সেটা ২৮০-২৯০ হলেই যথেষ্ট ছিল। তার চেয়ে ২০ রান বেশিই তুলে ফেলেছে ভারত। তা ছাড়া এই উইকেটে অল্প ঘাস থাকলেও বল ঘুরবে। পরের দিকে অশ্বিন, জাডেজারা সাহায্য পাবে। তখন ব্র্যাভোর দলের ব্যাটসম্যানরা সমস্যায় পড়বে বলেই মনে হয়।
কুইন্স পার্ক ওভালের উইকেট বরাবরই এ রকম। ১৯৮৩-তে যখন ওয়ান ডে খেলেছিলাম ওখানে, তখনও যেমন ছিল, এখনও প্রায় সে রকমই। সেই বছরই আমাদের বিশ্বকাপ জয়। তার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল ভারত। সেই দলে ছিলাম। ম্যাচটায় আমরা পরে ব্যাট করে হেরেছিলাম। ঠিক কত মনে নেই, ১৮০-র কিছু বেশি রান করে অল আউট হয়ে গিয়েছিলাম। আমিও বেশি রান করতে পারিনি। কিন্তু সে দিন যেমন আমাদের অবস্থা হয়েছিল, এই ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের অবস্থা তার চেয়ে অনেক ভাল। রেকর্ড বই বলছে, এই মাঠে ওয়ান ডে-তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বোচ্চ রান ২৬০। ২০০৭ বিশ্বকাপে অবশ্য এই মাঠে এক ইনিংসে চারশোর ওপর রান তুলেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত। কিন্তু সে ছিল বারমুডার বিরুদ্ধে ম্যাচ। তাই সেই ইনিংসটাকে বাদ দিয়েই ভাবছি। ২৬০-ই হায়েস্ট। ভারতের প্রথম ২৫ ওভারের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল এ দিন সেই সীমা পেরোবেই। কিন্তু ৪০ ওভারের (২১০-৫) মাথায় এসে এই ভাবনাটা ভাবতে ততটা আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলাম না। কিন্তু কোহলিই ক্রিজে এসে বুঝিয়ে দিল ক্যাপ্টেন কাকে বলে।
শেষ দশ ওভারে উঠল ১০১। এর মধ্যে বিরাটেরই ৬৭ রান। মাথা ঠান্ডা রেখে বলের মান অনুযায়ী প্রত্যেকটা বল খেলল। ক্যাপ্টেনের তো এ রকমই হওয়া উচিত।
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ৫০ ওভারে ৩১১-৭ (বিরাট ১০২, শিখর ৬৯, বেস্ট ২-৫১)।
(স্কোর অসম্পূর্ণ)
রাত দুটোর খবর
বৃষ্টিবিঘ্নিত ৩৯ ওভারের ম্যাচে (টার্গেট স্কোর ২৭৪) ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২ ওভারে ৬৪-৩। |