দেশের প্রথম প্লাস্টিক-মুক্ত জেলা কাছাড় এখন প্লাস্টিক-দূষণে আক্রান্ত!
সামান্য বৃষ্টিতেই শহরে জল জমছে। নালা-নর্দমায় প্লাস্টিকের ব্যাগ-বোতল আটকে থাকাতেই ওই সমস্যা। নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে শিলচরে।
২০০৪ সালে দেশের প্রথম প্লাস্টিকমুক্ত জেলার মর্যাদা পেয়েছিল কাছাড়। ৪০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের প্লাস্টিক প্যাকেট মজুতের জন্য হাজতবাস করতে হয় কয়েকজন ব্যবসায়ীকে। তৎকালীন জেলাশাসক সুনন্দা সেনগুপ্তের নির্দেশে প্রায়ই গুদামে-দোকানে তল্লাশি চালাত দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ। প্রায় বন্ধ হয়েছিল প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার। বছরতিনেক কড়াকড়ি বলবৎ ছিল। ওই জেলাশাসকের বদলির পরই পরিস্থিতি বদলায়। প্লাস্টিক ফের পৌঁছয় হাটে-বাজারে। |
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও শিলচর পুরসভা। কঠিন বর্জ্য ও প্লাস্টিকের ব্যবস্থাপনা নিয়ে আজ সেখানে কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রকের অর্থ সাহায্যে একটি প্রশিক্ষণ শিবির হয়। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিব কমল কল্যাণ দত্ত বলেন, শিলচর শহরে ৩ লক্ষ লোক প্রতিদিন ১০০ টন কঠিন বর্জ্য তৈরি করেন। তার মধ্যে বেশির ভাগই প্লাস্টিকের ব্যাগ, বোতল। তার একাংশ পুরসভা তুলে নিয়ে ট্রেঞ্চিং-গ্রাউন্ডে ফেলে। বাকিটা মাটিতে থেকে মাটির উর্বরা শক্তি নষ্ট করে। নালায় পড়লে জলবাহিত নর্দমার পরিসর ছোট করে দেয়।
শিলচর পুরসভার চেয়ারপার্সন সুস্মিতা দেব জানান, পুরসভা প্রতিদিন যে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করছে তা ফেলার জায়গা ক্রমে সঙ্কুচিত হচ্ছে। কারণ মেহেরপুরের ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ড প্রায় ভরে গিয়েছে।
কিন্তু জায়গা পেলেই কি সমস্যা মিটবে?
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান আর এম দুবের কথায়, “জায়গার সঙ্কট আজ মিটলেও কয়েকদিন পরই নতুন করে দেখা দেবে। আগে এর উপায় হিসেবে জৈব সারের কথা ভাবা হত। কিন্তু গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে, সে গুলি নিজের খরচটুকু তুলতেও ব্যর্থ।”
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শোভন দত্তগুপ্তের পরামর্শ, “প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ৪০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। আগের মতো কড়া হলেই সমস্যা মিটবে।” |