ছাত্র ভর্তি নিয়ে কোন্দলে কলেজে তাণ্ডব চালাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠী। বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজে প্রথমে নিজেদের মধ্যে মারপিট, পরে কলেজ জুড়ে ভাঙচুর চালায় তারা। বাধা দিতে নিগৃহীত হন অধ্যক্ষ শিবপ্রসাদ রুদ্রও। তিনি সাত জন ছাত্রের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছেন। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে কলেজ।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন পাস ও অনার্স পাঠ্যক্রমে ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। শুক্রবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ভর্তির কাজকর্ম হয়। সেই সময় পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ কলেজ ছাড়তেই টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ হাজরা ও টিএমসিপি-র কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুমন চক্রবর্তীর অনুগামীদের মধ্যে গোলমাল বাধে। সুমনের অভিযোগ, ভর্তি চলাকালীন শুধু প্রদীপকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। প্রদীপের সঙ্গে যোগসাজশ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ পাস পাঠ্যক্রমে কম নম্বর পাওয়া পড়ুয়াদের ভর্তি নিচ্ছেন, এই অভিযোগে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট বাধে। অভিযোগ, সুমনের অনুগামী ছাত্রনেতা গোপাল তফাদারকে মারধর করেন প্রদীপরা। |
এর পরেই দলবল নিয়ে অধ্যক্ষের ঘরে হাজির হন সুমন। ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ ও ছাত্রনেতাকে মারধরে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। অধ্যক্ষের অভিযোগ, কয়েক জন তাঁর ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে। বাধা দিতে গেলে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এর পরে কলেজের আরও নানা জায়গায় টিএমসিপি-র ওই গোষ্ঠী চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ভাঙচুর করে। পুলিশ পৌঁছলে তারা পালায়। সুমনের অনুগামী হিসেবে পরিচিত সাত ছাত্রের বিরুদ্ধে কলেজে গণ্ডগোল ও তাঁকে নিগ্রহের অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ শিবপ্রসাদবাবু।
অধ্যক্ষ বলেন, “প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। কলেজের গর্ভনিং বডির বৈঠকে ঠিক হয়, বিশৃঙ্খলা এড়াতে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে শুধু সাধারণ সম্পাদককেই ভর্তি প্রক্রিয়ার সময়ে থাকতে দেওয়া হবে। কিন্তু এ দিন আমার ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায় কয়েক জন।” তিনি জানান, আপাতত কলেজ বন্ধ থাকছে। পাস পাঠ্যক্রমে ভর্তিও হবে না। শুধু অনার্সের ভর্তি চলবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজাবাটী চত্বরে। সাধারণ সম্পাদক প্রদীপের দাবি, “ছাত্র ভর্তি ঠিক মতোই চলছিল। হঠাৎ সুমনরা গোলমাল পাকাল।” সুমন যদিও কলেজে ভাঙচুরে বা অধ্যক্ষ নিগ্রহে তাঁদের জড়িত থাকার কথা মানেননি। |