|
|
|
|
|
এক ঝলকে... |
পৃথিবী
২৩ জুন - ২৯ জুন |
|
নামটা যে ভুল ছিল! |
• হংকং • নামে তবে অনেক কিছুই এসে যায়! ভাগ্যিস এসে যায়, নয়তো এতক্ষণে জেলেই ঢুকতে হত এডওয়ার্ড ‘জোসেফ’ স্নোডেনকে। মার্কিন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের গোপন কুকর্ম ফাঁস করে তিনি পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন হংকং-এ, তার পর হংকং থেকে বেরিয়ে রওনা হয়েছিলেন মস্কো-র দিকে। এ দিকে আমেরিকা যেহেতু তাঁর পলায়নের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা বার করে, তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়, এবং হংকং-কে জানিয়ে দেয় যে এই নামের লোকটিকে সেখানকার বাইরে না বেরোতে দেওয়ার জন্য, স্নোডেন-এর পালানোর খবর পেয়ে তো ওয়াশিংটন ডি সি চটে লাল: এত সাহস হয় কী করে? মার্কিন অনুরোধ (আদেশ?) অমান্য? হংকং স্বভাবতই ঈষৎ বিপন্ন, হাজার হোক সুপারপাওয়ারের গোঁসা! তাই তাদের চটপট আত্মপক্ষ-সমর্থন: কী করে তারা জানবে এই সে-ই লোক? মার্কিন অনুরোধে পাঠানো নাম তো অন্য ছিল! এডওয়ার্ড ‘জোসেফ’ স্নোডেন-কে তো ‘ডিটেন’ করতে বলা হয়নি, বলা হয়েছিল এডওয়ার্ড ‘জেমস’ স্নোডেন-কে আটকাতে? ওঃহো, ওটা নেহাত ছাপার ভুল? তা, সেটা হংকং জানবে কী করে, শুনি? স্নোডেন নিশ্চয়ই ভাবছেন, হুঁ হুঁ, রাখে টাইপো মারে কে! |
|
মস্কোরও একই জ্বালা। আমেরিকার অনুরোধ মেনে কেন স্নোডেনকে এয়ারপোর্টেই ধরা হল না? রাশিয়ার যুক্তিটা অন্য: আরে, ধরবে কী করে, স্নোডেন তো রাশিয়ার মাটিতে পা-ই রাখেননি, তাঁর রুশ ভিসা নেই বলে তিনি তো ট্রানজিট লবি-তেই আটকে আছেন, কোন অধিকারে রাশিয়া তাঁকে ধরবে? প্রেসিডেন্ট পুতিন আবার কৈফিয়তের ভাঁজে ভাঁজে আক্রমণও জুড়ে দিয়েছেন, রাশিয়ার সব কথা আমেরিকা শোনে বুঝি? মোদ্দা কথা, এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে, কিন্তু রুশ বিমানবন্দরের কন্দরে যে স্নোডেন লুকিয়ে আছেন, এখনও তার হদিশ পাননি সাংবাদিকরা। কোথায় যাচ্ছেন তিনি, সেটাও পরিষ্কার নয়। ইকুয়েডর? ভেনেজুয়েলা? কিউবা? এই দেশগুলিই সম্ভাব্য গন্তব্য, কিন্তু প্রতিটি দেশেই অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন চলছে স্নোডেনকে ঢুকতে দেওয়ার ভাল-মন্দ নিয়ে। জনতার মিছিল-মিটিংও শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর মুখচ্ছবি-সহ ব্যানার নিয়ে।
|
মুর্সির মুণ্ডুপাত |
• দোহা • মিশরে প্রেসিডেন্ট মুর্সি ক্ষমতায় আসার পর বছর পুরোল। কী অবস্থা তাঁর ও তাঁর দেশের, এই সপ্তাহে অগ্নিদগ্ধ কায়রোর দিকে তাকালেই বোঝা সম্ভব। আবার রাতের পর রাত ব্যাপী উত্তাল তহরির স্কোয়ার। মুর্সি-র সরকারের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘাত ক্রমশই রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে। |
|
বিরোধী সমাবেশ তাণ্ডবে পরিণত হচ্ছে, মুসলিম ব্রাদারহুড-এর অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা নাকি দেশের সব সম্পদ লুঠ করে নিচ্ছে এই অভিযোগে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুলিশি অত্যাচার। আমেরিকা ও রাষ্ট্রপুঞ্জ কিন্তু মুর্সি-র পক্ষেই রায় দিয়েছে। বলে দিয়েছে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপ চললে সেটা বন্ধ করার দায় ও অধিকার প্রশাসনেরই।
|
নজরবন্দি |
ব্রাজিলের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, দেশ এখন যেখানে আছে, সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে তাঁরা রাজি নন। আমাদের দেশ এগিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি। এ বার এগোতেই হবে।’ বক্তার নাম ডিলমা রুসেফ। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। কয়েক মাস আগেও সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল পছন্দের ছিলেন তিনি। আর এখন, দশ লক্ষেরও বেশি বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নামার পর, তাঁর বামপন্থী ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’র ভিতটাই নড়ে গিয়েছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন। ফলে, পরিস্থিতি সামাল দিতে মরিয়া রুসেফ। দেশের ২৭টি প্রদেশের গভর্নর এবং ২৬টি শহরের মেয়রের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। তাতে কাজের কাজ খুব যে কিছু হয়েছে, তা নয় তবে রুসেফ বলছেন, আলোচনা চলবে।
অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রুসেফ। যেমন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করবেনই, এবং মূল্যস্ফীতির হারকেও নিয়ন্ত্রণে রাখবেন; যে কোনও মূল্যে দুর্নীতি ঠেকাবেন (ইতিমধ্যেই জেলে গিয়েছেন এক রাজনীতিক। ১৯৮৮ সালে গণতান্ত্রিক সংবিধান চালু হওয়ার পর এই প্রথম); স্বাস্থ্য পরিষেবায় খরচ বাড়াবেন, কিউবা থেকে চিকিৎসক আনবেন (যদিও সে প্রস্তাব ইতিমধ্যেই নাকচ হয়ে গিয়েছে); তেল রফতানি করে যে আয় হবে, তার সম্পূর্ণটা খরচ করবেন শিক্ষা খাতে; গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতিসাধনে খরচ করবেন ২৪০০ কোটি ডলার। এবং সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি, তিনি দেশে রাজনৈতিক সংস্কার করবেন। তার জন্য গণভোটের কথাও বলেছেন রুসেফ। মোট কথা, দেশবাসীর বিক্ষোভে ইতিবাচক সুরেই সাড়া দিয়েছে সরকার।
কিন্তু, তাতে প্রশ্ন ফুরোচ্ছে না। যে সব সংস্কারের কথা রুসেফ বলেছেন, সেগুলো কী ভাবে হবে, তার বিশদ ব্যাখ্যা করেননি তিনি। অনেকেই বলছেন, রুসেফ যতটা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তার অনেকখানিই করা সম্ভব হবে না সংবিধানে আটকে যাবে। আপাতত জনরোষ সামাল দেওয়ার জন্যই ভাল ভাল কথা বলছেন তিনি। আসলে বলটা ঠেলে দিচ্ছেন কংগ্রেসের কোর্টে। নির্বাচন বড় বালাই, ভুললে চলবে কেন? |
|
|
|
|
|