|
|
|
|
স্মরণ ১ |
আরডিএক্স |
রাহুল দেববর্মন। মধ্য ষাট থেকে আশির দশক পঞ্চম-সুরের সশব্দ বিস্ফোরণে বলিউড কেঁপেছে।
আজও কি তার অনুরণন? ২৭ জুন ছিল তাঁর পঁচাত্তরতম জন্মদিন। লিখছেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য |
দু’দিন আগে ৭৫ বছরে পড়েছেন রাহুলদেব বর্মন। আর আজ তাঁর মৃত্যু দিয়ে কথা শুরু করলে তাল কাটে কি?
অন্য কেউ হলে অন্য কথা। কিন্তু রাহুলদেবের ব্যাপারে তাল কাটার ভাবনাটার উদয়ই হয় না। তালকে এমনই কয়েদ করেছিলেন সুরে। মাদল বাদ্যে এমন অপরূপ এক তাল আদায় করেছিলেন রাহুল, ডাকনামে পঞ্চম, যা আগে শোনেনি কেউ। তাতে মুগ্ধ সলিল চৌধুরী সেটির নামকরণ করেছিলেন ‘পঞ্চম তাল’।
কিন্তু সে কথা থাক। আমরা শুরু করি ১৯৯৪য়ের ৩ জানুয়ারিতে। যেদিন ওঁর মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে নিঃসঙ্গ রাহুলদেব বুকে ব্যথা এবং এক গভীর আবেগ নিয়ে মারা গেলেন। শেষ দিকে ভালই অর্থকষ্টে ছিলেন। তবু একা একাই লন্ডনে গিয়ে হার্ট সার্জারি করিয়ে এসেছিলেন। একদিন স্ত্রী আশা ভোঁসলে দেখতে এসেছেন দেখে দিব্যি মেজাজে ফিরে বললেন, “জানতাম তুমি আসবে।” আর তাতে জানতে হল আশা আমেরিকায় শো করতে যাবার পথে ঢুঁ মেরেছেন মাত্র! সান্তাক্রুজের ওই বিষণ্ণ, একলা জীবনে কিন্তু একটা মস্ত আবেগ ওঁকে ভর করেছিল শেষ দিনগুলোয়। উনি স্বপ্ন দেখছিলেন ‘নাইন্টিন ফর্টি-টু: আ লভ স্টোরি’ দিয়ে এক দুর্ধর্ষ প্রত্যাবর্তন ঘটাবেন। যে ফেরার রাস্তা তৈরি করতে উনি ফিরে গিয়েছিলেন ওঁর ‘অমর প্রেম’, ‘কটি পতঙ্গ’য়ের করণকৌশলে, সেখানে সুরই ছিল রানি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তো বিবিধ ভারতীর অনুষ্ঠানে বলেই দিয়েছিলেন যে ‘অমর প্রেম’-এ কিশোরকুমারের গলায় বসানো ‘চিঙ্গারি কোই ভড়কে’ ওঁর প্রিয়তম হিন্দি সুরারোপ। রাহুলদেব কেন জানি না টের পাচ্ছিলেন ‘১৯৪২’ দিয়ে এক নতুন উচ্চারণে উনি পৌঁছচ্ছেন। আশেপাশের জনদের কাছে কিছুটা রেলা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীও করছিলেন, “দেখিস, এটা একটা মাস্টারপিস হবে।” |
|
১৯৯৪-এর ৩ জানুয়ারির ভোর ৩ টে ৪৫য়ের বুকের ব্যথা রাহুলদেবের স্বপ্ন দেখায় ইতি টেনে দিল। ‘১৯৪২...’ও ওঁর হলে বসে দেখা হল না। তবে ছবি মুক্তি পেতে ওঁর স্বপ্নটাই অবলীলায় সারা দেশবাসীর স্বপ্নে দাঁড়িয়ে গেল। যে মানুষটির কাজে আড়াই দশক ধরে রক, জ্যাজ, লাতিনো, ট্যুইস্ট ইত্যাদির চমৎকারি ও বনাবট দেখে দেখে মানুষ পাগল, তাঁরাই হঠাৎ হৃদয় উদ্বেল করা সান্ধ্য প্রেমগীতির মতো ‘কুছ না কহো’র ‘সময়কা ইয়ে পল, থমসা গয়া হ্যায়’-এ এসে থমকে পড়ে ভাবছেন, এ কি গান! নাকি সুরে বাঁধা নীরবতা! রাগ দেশ আর রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে ইঙ্গিত ও আবহ নিয়ে গড়া ‘দিল নে কহা চুপকে সে’ শুনে বিজ্ঞজনেরাও গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসলেন, ফিসফিস করে মনের কথা, প্রেমে পড়ার কথা এত চাপা স্বরে অথচ এত নাট্যময়তা দিয়ে হিন্দিতে এর আগে কখনও বলা হয়েছে কিনা! কিংবা অদ্ভুত এক নখরা ও ছন্দে বাঁধা ‘এক লড়কি কো দেখা’ গানটা শুনতে শুনতে এবং পরদায় তার চিত্রীকরণ দেখতে দেখতে দীর্ঘদিনের আর ডি ভক্তরাও চিন্তায় পড়লেন, রাহুলদেব এ কী বাঁক নিলেন সুরারোপে! কেউ ভেবে তল পান না। অনেকেই দেখেও দেখেন না যে ‘নাইন্টিন ফর্টি-টু: আ লভ স্টোরি’ দিয়ে রাহুলদেব বর্মনের সুরের কাজের একটা বৃত্তই যেন সম্পূর্ণ হতে চলেছে। ‘১৯৪২...’-কে এক অভিনব উচ্চারণ বলতে হল এই কারণেই যে, এর প্রায় সব গানেই সুর প্রাধান্য পেলেও এদের বড় আকর্ষণ এদের পেশকারিতে, সংলাপধর্মিতায়। গানকে আইটেমের চেহারা, এমনকী নিছক গানের থেকেও আলাদা করে সংলাপ ও মনস্তত্ত্বের বাহন করা যে-সে কাজ নয়। ঠিক যে ভাবে এক কালে নবীন প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষা, ব্যথা ও নৈরাশ্য বোঝাতে ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ ছবিতে রাহুলদেব এক বিস্ময়কর এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন ‘দম মারো দম’ গানটি কম্পোজ করে। নেশায় বুঁদ হওয়া অবসন্ন শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন ও ঝিম মেজাজ ঘেরা এই গান শুনে বেজায় দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলেন পরিচালক দেব আনন্দ। এবং পিতা শচীনদেব তো রীতিমতো হতোদ্যম হয়ে মাথা নিচু করে স্টুডিয়ো থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবং এটা একটা মস্ত বড় ‘কিন্তু’ এই নশেলি গানেই সে দিন নেচে উঠেছিল গোটা দেশ। জীবনের প্রথম পর্বের ছবি ‘ভূত বাংলা’তে বিলেতের ট্যুইস্ট সরাসরি চেলে ‘আও ট্যুইস্ট করে’ বেঁধেও যে-দেশকে নাচাতে পারেননি, তাকেই অনায়াসে মুঠোয় নিয়ে নিলেন এক নিজস্ব দেশোয়ালি ছন্দ নির্মাণে। বিলিতি একটা ঝোঁক আছে ঠিকই, কিন্তু গানের ‘শকল’ বা মুখ এবং প্রাণ হচ্ছে ভারতীয়। যেহেতু ‘১৯৪২...’-এর প্রসঙ্গক্রমে কথাটা এল, তাই বলে নেওয়া উচিত হবে যে, ‘দম মারো দম’-ও একটা যুগ, জীবন ও প্রজন্মের আবেগ ও উচ্চারণ চিনিয়ে দেয়। |
অমর প্রেম |
তিসরি মঞ্জিল |
|
আগেই বলেছি ‘নাইন্টিন ফর্টি-টু: আ লভ স্টোরি’-র মুক্তি দেখা হয়নি রাহুলদেবের। ছবিটির জন্য জীবনের তৃতীয় ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও পেলেন মরণোত্তর। কিন্তু ছবি ও মৃত্যু পাশাপাশি এসে এমন একটা পরিস্থিতি গড়ে দিল, যা জীবদ্দশায় উনি কল্পনায়ও আনতে পারেননি। তা হল একটা আর ডি যুগের প্রবর্তন করা। ওঁর মৃত্যুর পর দিন এই আমিই লিখেছিলাম আনন্দবাজারে: ‘না, রাহুলদেব তাঁর বাবার চেয়েও বড় সঙ্গীত পরিচালক হননি। আবার এও সত্য যে এস ডি বর্মন, নৌশাদ, সি রামচন্দ্র, ও পি নাইয়ার, রোশন ও মদন মোহনের পর এ রকম কোনও স্বতন্ত্র ধ্বনিও কেউ ভারতীয় ফিল্মে আনেননি। ...রাহুলের মতো পুত্র রেখে খুব নিশ্চিন্তে প্রয়াণ করেছিলেন শচীনদেব বর্মন। অকালপ্রয়াণে রাহুলদেব রেখে গেলেন একটা গোটা প্রজন্ম।’ আজ কুড়ি বছর পর সে দিনের কথাগুলোর বাস্তবতা দেখে আমি নিজেই হতচকিত হচ্ছি। যখন তথ্যসূত্র থেকে জানছি যে, তাঁর ফ্যানদের বহর, তাঁর সমস্ত সমসাময়িক সুরকারদের ফ্যানদের সম্মিলিত বহরকে ছাড়িয়ে যায় বহুগুণ!
কিন্তু আজ, রাহুলদেব বর্মনের ৭৫তম জন্মদিনের ছায়ায় দাঁড়িয়ে বলতেই হচ্ছে এহ বাহ্য। কারণ জনপ্রিয়তা রাহুলদেব বর্মনের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বিচারে নিতান্তই এক আংশিক মাপকাঠি। আজকের ফিল্ম রচয়িতাদের কাজের ডিএনএ টেস্ট করলে দেখা যাবে, সেখানে এক্স বা ওয়াই ক্রোমোজমে কোথাও না কোথাও লিপ্ত আছেন আরডি। রুশ কথাসাহিত্যের উত্তরাধিকার বোঝাতে দস্তয়েভস্কি একবার বলেছিলেন, “আমরা সবাই গোগোলের ওভারকোটের তলা থেকে বেরিয়ে এসেছি।” অর্থাৎ গোগোলের ‘দ্য ওভারকোট’ গল্পটা পড়েই আমরা সবাই লেখক হয়েছি। আজকের ফিল্ম সঙ্গীতকাররা পূর্বসূরির খোঁজে বেরলে অনতিকালে এসে জড়ো হবেন এমন মহীরুহর তলে জগৎ যাঁকে সংক্ষেপে, সমাদরে ডাকে আরডিবি। কেউ কেউ সমীহের ঠাট্টা করে আরডিএক্স!
বিলিতি সুর আমদানি করছেন বলে কম কথা শুনতে হয়নি রাহুলদেবকে এককালে। এর জবাবে উনি বলে বলে হয়রান হয়ে গিয়েছেন এক অতীব সরল সত্য: নিয়েছি ঠিকই, নেওয়ায় দোষটা কোথায়? |
হরে রাম হরে কৃষ্ণ |
১৯৪২: আ লভ স্টোরি |
|
শুধু খেয়াল করুন, কী নিয়েছি, কেন নিয়েছি, কতটুকু নিয়েছি, কী ভাবে নিয়েছি, আর তা দিয়ে কী করেছি, কোথায় মিশিয়ে কী দাঁড় করিয়েছি। একবার তো পাশ্চাত্য সুর ব্যবহার করা নিয়ে নিজের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, “কোনও গানের একটি বিশেষ লাইনের সুর যদি আমার ভাল লাগে, আমি সেই সুর নিয়ে ইমপ্রোভাইজ করে নতুন রূপ দিই।” রাহুলদেবের মিউজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট মনোহারি সিংহ এর সমর্থনে বলেছেন, “আমরা জানতাম কোন বিদেশি সুরে পঞ্চম অনুপ্রাণিত। সুরটা বাজাতে গিয়ে দেখতাম ভারতীয় হয়ে গিয়েছে। এমনই ইমপ্রোভাইজেশন।”
পাশ্চাত্যের গানবাজনায় রাহুলদেবের প্রিয় ছিলেন বিটলস, এলভিস এবং ড্রামার-পিয়ানিস্ট-গায়ক ফিল কলিন্স। পশ্চিমি পপের ছন্দ, আন্দোলন, আমাদের রাগধারার সুরের মূর্ছনা আর বাউল-ভাটিয়ালির ক্লান্তি, বিষণ্ণতা তিনি অনায়াসে একই গানে মেশাতে পারতেন। গর্ব করে জানাতেন যে, বাবা ছাড়াও শঙ্কর-জয়কিষেণ, সলিল চৌধুরী ও মদনমোহনের সঙ্গে সহকারী হিসেবে তিনি কাজ করেছেন, এঁরা সবাই তাঁর প্রিয় সুরকার। কিন্তু ‘ছোটে নবাব’, ‘ভূত বাংলা’ দিয়ে পরিচালনার কাজ শুরু করে শেষ অবধি এমনই এক জায়গায় তিনি পৌঁছলেন, যেখানে তিনি একেবারেই এক ও একক। যখন জীবনের সেরা সময় কাটাচ্ছেন রাহুলদেব তখনও অবলীলায় আন্দোলিত হচ্ছেন গানের সুর, চলন ও ছন্দের এ-মেরু থেকে ও-মেরু। এক দিকে ‘দম মারো দম’, তো অন্য দিকে ‘মেহবুবা’ ছবির ‘মেরে নায়না সাওন ভাদো’। দুই ভিন্ন মেরুর গান। কিন্তু ওদের সৌন্দর্য নিয়ে দুটি ভিন্ন মত হবার নয়। চিন্তা ও কল্পনার রেঞ্জটাই ষাট দশকের মাঝামাঝি থেকে নব্বই দশকের গোড়া অবধি ওঁকে এত অমলিন রেখে গেল। খুব একটা যে বদলাতে হল ধ্যানধ্যারণার দিক দিয়ে তাও নয়, সিচুয়েশন থেকে, ছবির নাটক থেকে গানের চেহারা ও নাটক তৈরি করে নেওয়ার বিরল ক্ষমতা তো ছিলই। শেষ জীবনে কেরিয়ারের খাদের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য নতুন এক উচ্চারণে ভর করলেন ‘১৯৪২...’য়ে। সুর, ছন্দ ও কথাকে মুখের বুলির পাশাপাশি আনতে রচনার সমস্ত স্তরগুলোকে সহজ ও সরল করে ফেললেন।
এখানে একটা গানের কথা মনে আসছে রাহুলদেবের। ‘তিসরি মঞ্জিল’ ছবিতে একটা নেপালি পল্লি সুর লাগাবেন শুনে নাক সিঁটকেছিলেন ছবির নায়ক, চমৎকার গান-বোদ্ধা শাম্মী কপূর। পরে সুরটা যখন চেহারা নিল ‘দিওয়ানা মুঝসে নহি ইস অম্বরকে নীচে’ গানে, তখন নায়ক তো স্তম্ভিত। আসলে মাথায় ঝাঁক ঝাঁক সুর ঘুরত রাহুলদেবের, অপেক্ষা শুধু একটা যথার্থ পরিস্থিতি আর বাণীর। যেহেতু ছবির জন্য সুর, তাই আরও সরল করে বলতে হবে, একটা ছবির মুহূর্ত। কোন রাজ্যের লোকসঙ্গীতকে কী কায়দায় কোন আধুনিক চেহারায় পেশ করবেন রাহুলদেব, তা আন্দাজ করা ওঁর অনুরাগী ও অনুসারীদের কাছে ছিল রুবিকস্ কিউব মেলানোর মতো সমস্যা। |
আর ডি, গুলজার ও আশা ভোঁসলে |
দেব আনন্দ ও পঞ্চম |
|
রাহুলদেব সৃষ্ট সুরকার প্রজন্ম আজও মজে ওঁর রেখে যাওয়া গানের ভুবনে। বাবা শচীনদেব তিরিশ বছর মুম্বইতে থেকে সঙ্গীত করেছেন ৮৯টি ছবিতে। সেখানে ছেলে রাহুল বত্রিশ বছরে করে ফেলেছিলেন ২৯২টি হিন্দি ছবি। এর পাশে বাংলা, তেলেগু, তামিল, ওড়িয়া ও মরাঠি ছবি ধরলে ৩৭২টি!
অদম্য সঙ্গীত স্পৃহা ছাড়া এবং শুধু টাকার জন্য এভাবে কাজ করে যাওয়া যায় না, তা বলাই বাহুল্য। কাজের এই গতির জন্যই তিনি একটা সময় ফুরিয়ে গিয়েছিলেন বলে আঙুল তুলবেন কেউ কেউ, তুলেছিলেনও। কিন্তু মধ্যজীবনের সেই পরিণতি বাদ দিলে ওঁর শেষ জীবনের ওই সরলতা আবিষ্কার সম্ভব ছিল বলে মনে হয় না। ‘নাইন্টিন ফর্টি-টু : আ লভ্ স্টোরি’ করে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠা, ফিরে আসা এবং হিন্দি ফিল্ম গানের ইতিহাসকে দুই পর্বে ভেঙে ফেলা প্রাক-আরডি ও উত্তর-আরডি এও কি সম্ভব ছিল?
শুধু হিন্দি ছবি কেন, ভারতের যে-কোনও ভাষার ছবি ও বেসিক গানে একটা রাহুলদেব জমানা বহাল আছে। রাগ সুর, আঞ্চলিক সুর, বিলিতি সুর, ধ্বনিতত্ত্ব, কণ্ঠধ্বনি, যন্ত্রধ্বনি, পরিবেশ ধ্বনি, দেশি ছন্দ, বিদেশি ছন্দ, ছন্দ ভাঙা ছন্দ, যতি, মিল, সর্বোপরি নীরবতা সুর রচনার তাবৎ বিভাগে এমন চতুর, ব্যাপক প্রভাব ওঁর যে, ফিল্ম মিউজিকে আরডি হলেন গিয়ে স্বয়ম্ভূ ঘরানার মতো। যেহেতু পঁচাত্তরে পড়লেন সবে তাই আহ্লাদ করে একটু বলেই ফেলি না হয় ফিল্ম মিউজিকের সেনী ঘরানা। যার প্রভাব মানতে কারও কোনও দ্বিধা নেই।
|
বদ্তমিজ দিল-এও পঞ্চম আছেন কীভাবে? জানালেন প্রীতম |
আর ডি প্রত্যেক সঙ্গীতপ্রেমীর অবচেতন মনে সব সময় রয়েছেন। ব্যক্তিগত ভাবে আর ডি তো আমার সেই ছোট থেকেই পছন্দের। ভাল লাগার গানের নাম বলে শেষ করতে পারব না। ‘কভি পলকো পে আঁসু হ্যায়’, ‘আজকাল পাও নেহি পরতে জমি পে’, ‘তুমি কত যে দূরে’।
স্কুলে আমাদের বন্ধুদের এক আর ডি ফ্যান ক্লাব ছিল। সঞ্জয় আমার স্কুলের বেস্ট ফ্রেন্ড। আর ডি-র এল পি রেকর্ড যে দিন বের হত, সে দিনই কিনত। তার পর শুরু হত আমাদের উৎসব। আর ডি-র অ্যারেঞ্জার থেকে মিউজিশিয়ান সবার নাম আমাদের মুখস্থ ছিল। আমাদের জীবনের একটা অংশ ছিল আর ডি।
এখনও তো অনেকে হিন্দি গানে আর ডি-র গলা ব্যবহার করে শুধুমাত্র গানের মধ্যে একটা স্বাতন্ত্র্য আনার জন্য। |
|
এই যে লোকে ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ থেকে ‘বদ্তমিজ দিল’ শুনে এত মাতামাতি করছে, ক’জন জানে যে এই গানের মধ্যেও আছেন পঞ্চম। ওই যে গানটা শুরু হয় একটা ট্রাম্পেট দিয়ে ওটা তো একদম আর ডি স্টাইল। আর তা বাজিয়েছেন কে জানেন? আর ডি-রই মিউজিশিয়ান কিশোর সোডা। যিনি আর ডি-র সঙ্গেই বাজাতেন।
আমার মনে হয়, ইন্ডিয়ান ফিল্ম মিউজিশিয়ানের ডিএনএ-তেই রয়েছেন পঞ্চম। বলিউডে ওল্ড স্কুল আর নিউ স্কুলের যে ব্রিজটা রয়েছে, তার আরেক নাম নিঃসন্দেহে আর ডি। |
|
|
|
|
|
|