দীপিকা এক্সেপ্রস
বৃষ্টিভেজা মুম্বইয়ের দুপুর। জানলার কাছে অবিশ্রান্ত ভাবে আছড়ে পড়ছে জল।
রাস্তা তুলনায় ফাঁকা। তখন অফিস টাইমের জ্যাম শুরু হয়নি। হাজি আলি, ওরলি সি লিঙ্ককে পিছনে ফেলে যখন গাড়িটা মহালক্ষ্মী রেস কোর্সে ঢুকল, তখন প্রায় সন্ধে নেমে এসেছে।
ঠিক ছিল দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে দেখা হবে ‘টোট অন দ্য টার্ফ’ বলে একটা রেস্তোরাঁতে।
বলিউড অভিনেত্রী। তিনি কি আর সময়ে আসবেন? আরাম করে সোফাতে বসতে না বসতেই দেখি দূরে এক তন্বী মহিলা ঢুকছেন। আশেপাশের সবার থেকে অন্তত ইঞ্চি তিনেক লম্বা। চোখে পড়ল পায়ে বেজ রঙের স্টিলেটো। গোড়ালির উপর দিয়ে বেয়ে উঠছে উল্কি।
ঘড়িতে তখন সবে ছ’টা বেজেছে। সময়ের আগেই উপস্থিত?
এটা কি তা হলে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’য়ের প্রভাব? স্টেশনে কাউকে অপেক্ষা করিয়ে রাখা যাবে না। একেবারে ঠিক সময়ে উপস্থিত।
একটু ফ্রেশ হয়েই তৈরি সাক্ষাৎকার দিতে। “কিছু খান না...” বলেই নিজের প্লেটটা এগিয়ে দিলেন সামনে।
কোনও পিআর নয়। বেশ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই বলা।
আচ্ছা, ধরুন যদি দীপিকা এক্সপ্রেস বেঙ্গালুরু থেকে ছেড়ে থাকে, তা হলে তার গন্তব্য স্টেশনটি কী? নিশ্চয়ই শুধুমাত্র বলিউড নয়? ওটা তো একটা বড় জংশন হতে পারে বড়জোর। জাতীয় পুরস্কার, আন্তর্জাতিক ফেস্টিভালের জুরি এ সব স্বপ্ন কি দেখতে শুরু করেছেন তিনি?
দীপিকা এক্সপ্রেস নামটা বলতেই একটু থামলেন। হেসে বললেন, “জানেন তো, আমি তো কোনও হিসেবনিকেশ করে ছবি করতে আসিনি। হঠাৎ করেই সিনেমায় নেমে পড়ি। কিন্তু যেটা আমাকে চিরকাল এগিয়ে যেতে সাহায্য করে, সেটা হল উষ্ণতা।”
মনে মনে ভাবনাটা দানা বাঁধছিল, আবার বোধহয় এক তারকার রিহার্সড বুলি শুনতে হবে। হয়তো সেটা বুঝতে পেরেই, নিজেই বললেন, “ব্যাপারটা আপনি ভেবে দেখুন। আমার প্রথম ছবিটি কী বড় মাপের ছিল! একেবারে হঠাৎ করে দেখি মগডালে উঠে গিয়েছি আমি। তার পরে তো অনেক সময় এসেছে যখন আমার কেরিয়ারটা ভাল যায়নি। স্লাম্প এসেছিল কেরিয়ারে। তবে আমার দর্শক আমাকে ত্যাগ করেননি। কেউ বলেননি যে ইন্ডাস্ট্রিতে একে জায়গা দেওয়ার দরকার নেই... ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে এগুলো অস্বীকার করব কী করে?” কথাটা যে একেবারে ভুল বলছেন তা নয়। ফ্লপ হয়েছে। ব্রেক-আপের পর নিজেই নিজেকে মলম লাগিয়েছেন। তবু মানুষের ভালবাসা কমেনি। আর এ বছর তো সোনায় সোহাগা। একের পর এক হিট। ‘ককটেল’ থেকে ‘রেস ২’ সব ছবি বেশ নজর কেড়েছে। ন’টি ব্র্যান্ড এনডোর্স করছেন তিনি। এমনকী প্রাক্তন প্রেমিক রণবীর কপূরের সঙ্গে অভিনয় করেও বক্স অফিস আর ক্রিটিকদের সমান ভাবে মাতিয়েছেন!
কিন্তু এর পর কী? “দেখুন, কেউ তো আর ছবি এই ভেবে করে না যে, সে ওটার জন্য অ্যাওয়ার্ড পাবে। বা একদিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁকে জুরি হিসেবে ডাকা হবে। আমি আগেও ছবি করব ঠিক করতাম সহজাত ভাবে। যে স্ক্রিপ্টটা পড়ে ভাল লাগত, সেটায় রাজি হতাম। আজও সেই ধারাটা পালটায়নি। আমি কোনও হিসেবনিকেশের ধার ধারি না। শুধু নিজেকে প্রশ্ন করি আমার কাজটা করে ভাল লাগবে তো? যদি উত্তরটা হ্যাঁ হয়, তা হলে আমি রাজি হয়ে যাই।”
কিন্তু যদি নিজের কাছে সেই উত্তরটা ‘না’ হয়, তখন সেটা সব সময় কি পরিচালক/প্রযোজককে বলতে পারেন? ভয় হয় না সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে এই ভেবে? “একদমই না। ইটস ওকে টু সে নো। আমি তো সব প্রজেক্ট করতে পারব না। ফিজিক্যালি তা করা সম্ভব নয়। আমি যদি বিশ্বাস না করতে পারি যে ছবিতে আমার অভিনয়টা দরকারি বা সেই চরিত্রে আমাকে মানাবে, তা হলে আমি সেটা দর্শককে কী করে অভিনয় করে বিশ্বাস করাব?” ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবিটি তো পরিচালক লিখেইছিলেন রণবীর আর দীপিকাকে দেখে। তার পর অবশ্য প্রেমে ফাটল ধরে। ছবিটি অবশ্য তাঁরা করেন। প্রচারের সময়, নিজেদেরকে কী ‘অ্যাগনি অ্যান্ট’ বলে মনে হয়েছিল? “একদম ঠিক। কী যে অবস্থা ছিল। সবার কত কী প্রশ্ন...”
তা প্রশ্নগুলো তো ছবি দেখার পরেও রয়েছে। শ্যুটিংয়ের সময়, ওই যে যখন পা ডুবিয়ে জলের মধ্যে বসেছিলেন, যখন নয়না, বানিকে বলছেন ‘তুম সমঝতে কিউ নহি অগর ম্যয় তুমহারে সাথ দো মিনিট অউর রহি, তো মুঝে তুমসে পেয়ার হো যায়েগা... ফির সে’... একবারও কি কোনও ব্যক্তিগত অনুভূতি আসেনি? বিনোদনের খাতিরে সব কিছুই কি শুধুমাত্র প্রফেশনাল, প্রফেশনাল আর প্রফেশনাল? “একটা ইয়াং গ্রুপ একসঙ্গে কাজ করেছি। ছবিতে প্রীতমের একটা বড় কনট্রিবিউশন রয়েছে। অয়ন চেয়েছিল যেন ছবিতে একটা ‘ইনট্যানজিবল’ কোয়ালিটি থাকে। সেটাই আমরা আনার চেষ্টা করেছি। দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে পেরেছি, তাঁরা আমাদের কত ভালবাসেন। তাই হয়তো এই সব প্রশ্ন আসছে। যখন শু্যটিং করি, তখন...”

এরই নাম বন্ধুত্ব
বিশেষ বন্ধু হলে কি এই রকম হয়? পছন্দ মিলে যায় মাঝে মাঝে। এমনকী প্রশ্নের উত্তরও!
কিছু দিন আগে মুম্বইয়ের এক অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল রণবীর সিংহকে। চোখে মোটা ফ্রেমের ‘গিক’ চশমা। এই সপ্তাহেই কলকাতায় ‘লুটেরা’-র প্রচারে ঝটিকা সফরে এসেছিলেন রণবীর। জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, শেষ কবে কাউকে বলেছেন, ‘আমি তোমাকে ভালবাসি?’ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর: “এই তো সে দিন মাকে বললাম, ‘আই লাভ ইউ মম!” শুনে মনে হল এ যেন রিপিট টেলিকাস্ট। কিছু দিন আগেই মুম্বইতে দেখা হয়েছিল দীপিকার সঙ্গে। তখন সদ্য ভোগ আইওয়্যারের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়েছেন তিনি। বড় পরদায় ফ্লার্টি, ফেমিনিন বা গিকি চরিত্রে অভিনয় করতে গেলে নাকি এই ব্র্যান্ডের চশমাই তাঁকে সাহায্য করেছে। সে দিন তাঁর চোখে কালো ‘নার্ডি’ চশমা! একেবারেই যেন ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’র চশমিশ ন্যায়না। সে দিন দীপিকাকেও অনেকটা একই ধরনের প্রশ্ন করা হয়েছিল।
আর দীপিকার উত্তর? “এই তো সে দিন বাবাকে বললাম, ‘আই লাভ ইউ ড্যাড!’ ফাদার্স ডে গেল তো, তাই বাবাকে সকাল বেলা উঠেই এটা বলেছিলাম!” দু’জনে মিলে ঠিক করে নিয়েছেন যে এই ধরনের গুগলি এ ভাবেই খেলবেন? উত্তরটা দু’জনেরই এক। রণবীর শুধু রেফারেন্স পয়েন্টের লিঙ্গ পরিবর্তন করে দিয়েছেন! আরও মিল আছে। দীপিকা তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে কাজ করে তো বক্স অফিস মাতিয়েছেন। কোনও দিন যদি পুরনো প্রেমিকার সঙ্গে কাজ করতে হয়, রণবীর কি তাতে রাজি? “হ্যাঁ, রাজি। বুঝতে পেরেছি যে, কাউকে ‘জাজ’ করা উচিত নয়। ক্ষমা করা দরকার। ক্ষমা করলে আমরা শত্রুকেও ক্ষমতাহীন করে দিতে পারি। আর প্রাক্তন প্রেমিকা? আমার তার সঙ্গে সুস্থভাবে কাজ করার ম্যাচিওরিটি আছে,” বলছেন রণবীর। চমকে গেলেন? বলছিলাম না, আজকাল ‘বিশেষ বন্ধু’ হলে চশমা থেকে প্রশ্নের উত্তর সবই যেন কেমন একই রকম লাগে!

হ্যাঁ, তখন? ব্যক্তিগত অনুভূতি ধুয়েমুছে সাফ? অয়নের ছবির সংলাপ দেওয়া আছে, সেটাই মুখস্ত করে বলে যাওয়া? “না, তা নয়...”
মানে?
“তখন আমরা একদম নয়না আর বানি। শুধু সংলাপ আউড়ে গেলে ওটা করা যায় না। আবেগ দরকার। নয়না আর বানির ইমোশন। ওটা ওদের মুহূর্ত। সেটা মাথায় রেখে পারফর্ম করতে হয়। আজ ভেবে ভাল লাগে যে ওই মুহূতর্গুলো আমরা ও ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি...”
কথা প্রসঙ্গে উঠে এল টলিউডেও কী ভাবে একটা ছবিতে (‘খোকা ৪২০’) দুই প্রাক্তন প্রেমিকরা (দেব আর শুভশ্রী) কাজ করেছেন। আর কী ভাবে সেই ছবিও দারুণ ভাল ব্যবসাও করছে। পরদায় তাঁদের রসায়ন নিয়েও কথা হচ্ছে আজকাল। “তাই নাকি? মানুষের জীবনে প্রেম আসে। তার পর কোনও কারণে সেটা নাও টিকতে পারে। খারাপ মুহূর্তগুলোকে ফেলে এগিয়ে যেতে হয়। রণবীর আর আমার সম্পর্কটা এখন এ সব পেরিয়ে গিয়েছে। বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড-এর সংজ্ঞাটা ছাপিয়ে গিয়ে আজ ও আমার ভাল বন্ধু।”
সম্পর্ক ভাঙার দগদগে ঘা-গুলোর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বসে থাকার অভ্যেস তাঁর নেই। তাই তো এই সে দিন ‘ইয়ে জওয়ানি...’র সাকসেস পার্টিতে দুই রণবীর আর সিদ্ধার্থ মাল্যকেও ডেকে নিয়ে দারুণ ফুর্তি করেছেন তিনি।
করছেন নাকি রণবীরের সঙ্গে ইমতিয়াজ আলির একটি ছবি? “দু’জনেই আমার খুব প্রিয়। কিন্তু এখনও তো কিছু ঠিক হয়নি।”
আর তার পর কথা ওঠে শাহরুখ খানকে নিয়ে। প্রথম যে দিন শাহরুখের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মন্নত-এ, সারাটা মিটিংয়ে সোফার এক কোণে সিঁটিয়ে বসেছিলেন। আড়ষ্টতা কাটাতে সময় লেগেছিল। বলে চলেন শু্যটিং শেষে শাহরুখের সঙ্গে ‘ওম শান্তি ওম’-এর লন্ডনের প্রিমিয়ারের কথা। এম্পায়ার থিয়েটারে হয়েছিল ২০০৭-এ। তার এক বছর আগেই ওই একই জায়গাতে বেড়াতে গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। এম্পায়ার থিয়েটারের বিপরীতে একটা স্টেক হাউস ছিল। ওখানে নৈশভোজে গিয়ে বন্ধুরা মিলে অনেক গল্প করেছিলেন। এম্পায়ার থিয়েটারে রেড কার্পেট প্রিমিয়ার থেকে স্টারদের সেখানে আসার গল্প।
আর ঠিক তার পরের বছর দীপিকা ওই জায়গাতে। নিজের পোস্টার চারদিকে। মনে পড়ে যাচ্ছিল প্রিমিয়ারের ঠিক আগে শাহরুখ তাঁকে বলেছিলেন, টম ক্রুজ-এর রেকর্ড আছে ওই রেড কার্পেটে সব চেয়ে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অটোগ্রাফ দেওয়ার, ছবি তোলার। সেই রেকর্ডটাও ‘ওম শান্তি ওম’-এর সময় তাঁরা ভেঙেছিলেন। “সে দিন প্রথম নিজেকে স্টার মনে হয়েছিল। আমার লঞ্চটা ম্যাসিভ ছিল। এর মাঝে মুখ থুবড়ে পড়েছি। আবার ঝেড়েঝুড়ে উঠেছি। শিখেছি পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে। আজ যখন শাহরুখের সঙ্গে আবার কাজ করছি, মনে হচ্ছে যেন বৃত্তটা সম্পূর্ণ হল।”
‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবিটি মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ীকে নিয়ে, যিনি এক তামিল মহিলার প্রেমে পড়েন। অনেকেই বলছেন যে স্বয়ং রজনীকান্তের থেকেও উনি নাকি একটু-আধটু তামিল শিখেছেন যখন ‘কোচ্চাড্ডাইয়ান’ ছবিটির শু্যটিং চলছিল!
স্মৃতি ঘাঁটতে ঘাঁটতে খেয়াল হয় কী ভাবে একটা সময় নিজের উচ্চারণ নিয়ে কত কথা শুনতে হয়েছিল। অনেকের হয়তো মনে নেই যে দীপিকার ফিল্ম কেরিয়ার শুরু হয় এক কন্নড় ছবি দিয়ে। নাম ছিল ‘ঐশ্বর্যা’। ‘‘আমার প্রথম হিন্দি ছবি ‘ওম শান্তি ওম’। অনেকে বলেছিলেন যে, তাতে আমার দক্ষিণ ভারতীয় উচ্চারণ ধরা পড়ে। আর আমি চেষ্টা করতে থাকি যাতে ওই উচ্চারণটা আমার হিন্দি উচ্চারণের মধ্যে না আসে। আর এখন, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-য়ের জন্য, সেই উচ্চারণটাই ফিরিয়ে আনতে হয়েছে। তবে আমার ডিকশন নিয়ে চিন্তা হত না। আমি জানতাম, চরিত্র যা দাবি করবে, আমি তাই করব।”
আর তাই হয়তো ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-এর তামিল চরিত্রটি করেই আবার চলে গিয়েছেন সঞ্জয় লীলা বনশালীর ‘রাম লীলা’ করতে। ওখানে আবার চরিত্রটি গুজরাতি। নাম লীলা।
উচ্চারণ যাই হোক, আজকাল যে বলা হয় তিনি নাকি পলিটিক্যালি কারেক্ট থাকার চেষ্টা করছেন? “না, না, ওটা ঠিক নয়। আমি দায়িত্ব নিয়ে কথা বলি। ক্যালকুলেট করে নয়। এই যে এই কথাগুলো বললাম আপনাকে, এটা পলিটিক্যালি ঠিক না বেঠিক তা ভেবে বলিনি।” পুরনো কোনও মন্তব্য নিয়ে কি কোনও অনুশোচনা আছে তাঁর? ‘‘না। আমি যা বলি বা বলেছি, কাউকে দুঃখ বা অপমান করার জন্য বলিনি।”
ইতিমধ্যে তাঁর পরিচালকেরা তাঁর সম্বন্ধে বেশ চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এই তো সে দিন ইমতিয়াজ আলি বলেছেন যে দীপিকার ‘সাইলেন্স’-টা তাঁর বেশ ‘ইন্টারেস্টিং’ লাগে। অয়ন মুখোপাধ্যায় বলেছেন তাঁর পছন্দ ডিপি-র ‘হোলসামনেস’/‘সামগ্রিকতা’। “এই ব্যাখ্যাগুলো আজ মিডিয়াতে আসছে। তবে ব্যক্তিগত জীবনে এঁরা অনেক আগেই আমাকে তা বলেছে,” তিনি বলছেন। অনির্বাণ দাস ব্লাহ্, (ক্যোন সংস্থার কর্ণধার, যারা দীপিকার কাজ দেখাশুনো করেন), মনে করেন যে দীপিকা এখন দেশের ‘সিঙ্গল বিগেস্ট ফিমেল স্টার’। বলছেন, “ন’টি হাই এন্ড ব্র্যান্ড এনডোর্স করছেন উনি। এ বছরে যা ছবি করেছেন সেখানে ওঁর চরিত্রগুলো যেমন জোরালো তেমনই প্রাসঙ্গিক। তার সঙ্গে আবার বক্স অফিসেও সফল। ‘রেস ২’ ও ‘ইয়ে জওয়ানি...’র বক্স অফিস কালেকশন তিনশো কোটি টাকা। এর পর আসছে শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ আর রজনীকান্তের সঙ্গে ‘কোচ্চাডাইয়ন’। এই দু’টো ছবি খুব কম করেও একশো কোটি করে ব্যবসা করবেই। এ ছাড়াও আছে সঞ্জয়লীলা বনশালীর ‘রামলীলা’। তা হলে এ বছর ওঁর ছবির মোট ব্যবসার পরিমাণ হবে ছ’শো থেকে আটশো কোটি টাকা। এর আগে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে একজন অভিনেত্রীর ছবি এই রকম অঙ্কের ব্যবসা করেনি। আর একটা কথা সবাই বলে থাকেন। তাঁর ওই ‘এক্সপ্রেসিভ’ চোখের জাদু। ‘ওম শান্তি ওম’-এর সময় থেকে তো শাহরুখ, ফারহা খান আর মণীশ মলহোত্র বলতেন সে কথা। ‘আখোঁ মে তেরি অজব অজব সি’ গানটি অন্য কোনও একটি মাত্রা এনে দেয় ওই দু’টো আবেগপ্রবণ চোখ। “হ্যাঁ, আজও আমার চোখ কথা বলে। এটার ভাল দিক যেমন আছে, খারাপ দিকও রয়েছে। যখন মন খারাপ হয়... হোয়েন অ্যাম লোনলি...তখন চোখে তা ফুটে ওঠে। লুকোতে শিখিনি আমি...”
যাক, থাক সে কথা, বলে এ বার উঠে দাঁড়ালেন ছবি তুলতে। আশেপাশে ততক্ষণে ফ্যানেদের ভিড়। মিষ্টি হেসে তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে রাজি। নিজে চশমা কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। টেবিলের উপর অনেকগুলো ফ্রেম রাখা। উঠে গিয়ে ফ্যানদের মধ্যে কাউকে কাউকে আবার নিজে হাতে চশমার ফ্রেমও পছন্দ করে দিলেন। আর তার পর সোফার হাতলের উপর গিয়ে বসলেন। ছবি তুললেন তাঁদের সঙ্গে।
এমনিতেই লম্বা তিনি। সাফল্যের পর একটু উঁচুতে ঠেলে দিয়েছে ইন্ডাস্ট্রি। হয়তো বা ছবির ফ্রেম ভাল হওয়ার তাগিদেই ও ভাবে সোফার হাতলে বসলেন তিনি। নাকি ও ভাবেই বুঝিয়ে দিলেন যে সাফল্য যতই আসুক, বেশি উপরে ওঠা ভাল নয়? যে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রত্যেক শুক্রবার ভাগ্য পালটে যায়, সেখানে মাটির কাছাকাছি থাকাটাই বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.