কিস্তির টাকা না মেটানোয় এক ব্যক্তির ট্রাক আটক করার জন্য একটি ঋণদান সংস্থাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বর্ধমানের জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
বর্ধমানের খালেরবিলের মাঠ লেনের বাসিন্দা রাজারাম সাউ জানান, তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে ঋণ নিয়ে ট্রাক কিনেছিলেন। প্রথমে দু’লক্ষ ৯২ হাজার ২৫০ টাকা নগদে মেটান। বাকি টাকা ঋণ দেয় ওই সংস্থাটি। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে রাজারামবাবু অভিযোগ করেন, তিনটি কিস্তির টাকা সময়ে না মেটাতে পারায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁর ওই ট্রাকটি ঋণদাতা সংস্থা নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নিয়েছে। তাঁর আরও দাবি, ট্রাকটি যে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া হবে, এমন কোনও নোটিস দেয়নি সংস্থাটি, এ ব্যাপারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট নির্দেশও মানা হয়নি।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সভাপতি উদয়ন মুখোপাধ্যায় এবং দুই সদস্য শিল্পী মুখোপাধ্যায় ও দুর্গাশঙ্কর দাস মামলাটির বিচার করতে গিয়ে জানান, মাসিক ৫৫,৪৪৮ টাকা হিসেবে রাজারামবাবু ২০১১-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৩-এর ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ২১টি কিস্তির টাকা মিটিয়েছেন। তিনি মোট ১১,২৭,৭৪২ টাকা ঋণ শোধ করেছেন। কিন্তু ২০১২ সালের ১৯ মার্চ ওই ট্রাকটি দুর্ঘটনায় পড়ে। ফলে সেটি রাস্তায় নামতে পরেনি। তাই তিনটি মাসিক কিস্তির টাকাও দিতে পারেননি রাজারামবাবু। ওই দুর্ঘটনার কথা তিনি ওই গাড়ি কেনার ঋণদান সংস্থাটির দুর্গাপুর শাখায় মৌখিক ভাবে জানান। দুর্ঘটনার পরেও তিনি ৬টি মাসিক কিস্তি জমা দেন। কিন্তু ১০ ফেব্রুয়ারি আচমকাই ট্রাকটি আটক করে ঋণদাতা সংস্থা। ১৩ ফেব্রুয়ারি চিঠি দিয়ে সংস্থার তরফে বলা হয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রাপ্য দু’লক্ষ তিন হাজার ১০৮ টাকা মিটিয়ে না দিলে ট্রাকটি যে অবস্থায় রয়েছে, বিক্রি করে দেওয়া হবে।
এর বিরুদ্ধেই ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন রাজারামবাবু। আদালত রাজারামবাবুর হয়রানি ও মানসিক যন্ত্রণা দেওয়ার দায়ে ঋণদাতা সংস্থাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। মামলার খরচ হিসেবে রাজারামবাবুকে পাঁচ হাজার টাকা মিটিয়ে দিতেও নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। ওই ঋণদান সংস্থার দুর্গাপুর শাখার আধিকারিকেরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |