|
|
|
|
বৌদ্ধ সন্ন্যাসী
জিতলেও তিনি নির্বিকার। হারলেও তাঁর মুখে প্রশান্তি।
অসম্ভব চাপের মধ্যেও
অবিচল।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার এবং বন্ধু যুধাজিৎ দত্ত
জানাচ্ছেন
এই অসম্ভব
প্রেশারেও কী ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’। শুনলেন ইন্দ্রনীল রায় |
যোগীন্দর শর্মা তাঁর কয়েক ঘণ্টা আগে সেই ওভারটা শেষ করেছে।
ইন্ডিয়া টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপ তোলার পর সবাই মিলে নাচতে নাচতে হোটেলে ফিরছি।
আমরা যারা ধোনির বন্ধু, সবাই মিলে ঠিক করলাম আজ এমএসডি-র ঘরে আড্ডা মারব। সেই মতো আড্ডার নিয়মে আড্ডা চলছে। ম্যাচ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। ক্রিকেটাররা যে রকম ক্রিকেটীয় ইয়ার্কি মারে সেই রকম ইয়ার্কি ও হাসাহাসিও চলছে পুরোদমে। ঘরের এক কোণে ফাইনালের হাইলাইটস্ও চলছে। যার ঘরে এ রকম হচ্ছে, সে-ই দেখি নির্বিকার। কাউচে বসে বাকিদের কথায় হাসছে আর টিভি দেখছে।
অনেক ক্ষণ পর ওর পাশে গিয়ে বসলাম। তত ক্ষণে হাইলাইটস্ শেষ, বন্ধুরাও একে একে নিজেদের ঘরে ফিরে গিয়েছে।
আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম ‘ক্যাপ্টেন কুল’কে, “আচ্ছা, লাস্ট ওভারটায় যখন ওই রকম উত্তেজনা, তখন নার্ভাস লাগেনি তোমার?”
ও আমাকে যে কথাটা বলেছিল, সেটা শুনে আমি চমকে গিয়েছিলাম। আমি জানি না পৃথিবীর কোনও ক্রিকেটার এ রকম ভাবে কি না।
কথা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে বলছিল, “আমার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কোনও দিনই নার্ভাস লাগেনি। আজকে ফাইনালের লাস্ট ওভারেও লাগেনি। আমি তো শুধু ভাবছিলাম ম্যাচটা জিততে হবে। নার্ভাস লাগলে সেই চিন্তাটা মাথায় ভর করত, যার কাছে ম্যাচ জেতার চিন্তাটা হারিয়ে যেতে পারত। ইনফ্যাক্ট, আমার তো বেশি টেনশন আর নার্ভাস লাগছিল যখন হাইলাইটস্টা দেখছিলাম।”
ওর কথা শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। বলে কী লোকটা! যখন পুরো ইন্ডিয়া টেনশনে হার্ট ফেল করার অবস্থায়, তখন টিমের ক্যাপ্টেনের টেনশন হয়নি। আর যখন ম্যাচ জিতে সবাই বিয়ার হাতে হাইলাইটস্ দেখছে তখন সেই লোকটা টেনশন করছে?
কিন্তু এটাই এমএসডি।
যত ঝামেলাই হোক মাঠে, যত বিতর্কই দানা বাঁধুক মাঠের বাইরে, এমএসডি যেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মতো শান্ত।
উপরের ঘটনা থেকে যদি ধোনির মনের ভিতরটা একটুও দেখা যায়, তা হলে বোঝা যায় ও কী ব্রিলিয়ান্টলি এই পাহাড়প্রমাণ চাপটা হ্যান্ডেল করে।
কী করে করে বলুন তো?
আমি যতটুকু দেখেছি ওকে, তা থেকে সাতটা প্রধান কারণ আমার মনে হয়েছে, যার ভিত্তিতে ও এ রকম শান্ত থাকতে পারে।
আমি অত ভাবি না
ওর সঙ্গে যখন ম্যাচ নিয়ে কথা হয়েছে, দেখেছি ওর আশেপাশের সবাই পেপার, পেনসিল বার করে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করছে। ইন্টারনেট থেকে অপোনেন্ট প্লেয়ারের শেষ পাঁচটা ম্যাচের স্ট্যাটিস্টিক্স বার করছে, কম্পিউটার অ্যানালিস্টের সঙ্গে বসে কোন স্পটে অপোনেন্টের ফাস্ট বোলার বল ফেলে সেই সব নিয়ে ডিসকাস করছে। এবং এই সবগুলো যখন হচ্ছে তখন ওর দিকে তাকিয়ে দেখছি ও অসম্ভব নির্বিকার মুখ নিয়ে বসে আছে। শুধু আমি কেন, বাকিরাও জিজ্ঞেস করেছে, ও কেন কোনও মতামত দিচ্ছে না? ও আমাদের সবাইকে একটাই কথা বলেছে, “খেলা তো হবে মাঠের ভিতরে। যখন চিন্তা করার দরকার পড়বে তখন চিন্তা করব। তার আগে আমি অত ভাবি না।” আজকে যখন দেখি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ওর ব্যাপারে যা তা বলছে, অনেকে বলছে ওর রিজাইন করা উচিত, চেন্নাই সুপার কিংস-এর গুরুনাথ মেইপ্পান-য়ের নাম স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার
সময়, তখন আমার শুধু মনে হয়েছে এগুলো ওকে অ্যাফেক্ট করেই না। কারণ ও এত ভাবেই না। কোনও নেগেটিভ চিন্তা ও নিজের সিস্টেমেই রাখে না। রাখলে এত ঠান্ডা ও থাকতেই পারত না। |
|
রাত দশটার পর মনের সুইচ অফ
এমএসডি যে লেভেলের সেলিব্রিটি প্রত্যেক দিন রাতে ওর অনারে পার্টি দেওয়ার জন্য লাখ লাখ মানুষ মুখিয়ে আছে। ওকে চিনি বলেই বলছি, এমএসডি নিজে সব চেয়ে খুশি হয় যদি ওর সব অ্যাপয়েন্টমেন্ট দশটার মধ্যে সেরে নেওয়া যায়। কারণ দশটার পর হি ডাজন্ট ওয়ান্ট টু বি ডিসটার্বড। দশটার পর ও ডিসটার্বড হতে চায় না। যখন ট্যুরে থাকে, ওর হোটেলের ঘরে দশটার পর সবার প্রবেশ নিষেধ। ও নিজে ভীষণ প্রাইভেট পারসন। একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম ও কী করে? আমায় বলেছিল, ওই সময়টা ও নিজে সুইচ অফ করে যায় সারা দিনের কাজের থেকে, মনটা ব্ল্যাঙ্ক করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এমনিতেই ওর মোবাইল ফোন না তোলার বাতিক আছে। তাই আমাদের, যাদের মোবাইল সারাদিন সারারাত বেজে চলে, সেই ঝামেলা ওর এমনিতেই নেই। আমার মনে হয়, রাত দশটার পর এই মনের সুইচটা অফ করে দেওয়া ওকে ভীষণ সাহায্য করে।
জিরোটাও ভুলে যাবে, সেঞ্চুরিটাও
মনে আছে, ইংল্যান্ডের সঙ্গে তখন সিরিজ চলছে। ওর উইকেট কিপিং নিয়ে তখন সারাদেশে সমালোচনার বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ব্যাটিং ফর্মটাও ভাল নয়। সেই রকম বড় রান বেশ কিছু ইনিংসে পায়নি এমএসডি। টেস্ট ম্যাচ শুরু হবার আগের দিন গিয়েছি ওর ঘরে। দেখলাম নিজেও বেশ চুপচাপ। বন্ধুরা সেই সময় যে রকম করে, আমিও তাই করার চেষ্টা করলাম। বললাম, ও সব কে কী বলছে সেই সব কিছু ভেবো না। এই টেস্ট ম্যাচেই দেখবে রান পাবে। উইকেট কিপিং নিয়ে সমালোচনাটাও বন্ধ হয়ে যাবে। কিছু বলল না। পরের দিন ম্যাচ স্টার্ট, ইন্ডিয়ার ব্যাটিং। এমএসডি শূন্য করে আউট। অতএব রাতে ফের ওর হোটেলে। ভাবলাম আজকে বোধহয় একদম মুষড়ে পড়া, ভেঙে পড়া এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে। কিন্তু কোথায় কী? দেখলাম বেশ খোশ মেজাজে আছে। ওকে ও রকম দেখে আমি নিজেও বললাম, সেকেন্ড ইনিংস এখনও আছে তো। আমার দিকে তাকিয়ে কী বলেছিল তা আমার আজও কানে বাজে। খাটে আধশোয়া অবস্থায় আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “যারা সমালোচনা করছে তারা সেঞ্চুরিটাই যখন একদিন ভুলে যায়, তারা জিরো করাটাও কয়েক ঘণ্টায় ভুলে যাবে।” আমার মনে আছে সে দিন ওর ঘর থেকে বেরোতে বেরোতে ভাবছিলাম, এই যার জীবন সম্বন্ধে অ্যাটিটিউড, সে শান্ত থাকবে না তো কি আমরা থাকব? এই মানসিকতা যার রয়েছে, সেই তো শত ঝামেলার মধ্যেও আনরাফলড থাকতে পারে, তাকেই তো কোনও সমালোচনা স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়।
পরিবারের ওর ওপর ভরসা
অনেক সময় প্রফেশনাল লাইফ বিঘ্নিত হয় পার্সোনাল লাইফের নানা চাপের কারণে। আমি এটাতে মনে করি ধোনি অসম্ভব ভাগ্যবান। ওর নিজের পরিবার তাঁদের ছেলের ওপর কোনও রকম প্রেশার দেয় না। ওদের কাছে এমএসডি যেটা করে সেটাই ঠিক। কেউ কখনও কোনও বিরোধিতা করে না। ধোনিকে সেই স্পেসটা দেয়। ধোনির সিদ্ধান্তকে সম্মান করে। এই যে দিনের পর দিন এমএসডি ফোন তুলত না, এই নিয়ে অন্য কোনও পরিবার হলে নিশ্চয়ই অশান্তি করত। কিন্তু ধোনির পরিবারের সঙ্গে মিশে দেখেছি, ওর বাড়ির লোকেরা আমাদের বলেছে মাঝে মধ্যে ফোনে ওকে না পেয়ে ওরা কত অসহায় বোধ করেছেন। কিন্তু কেউ কোনও দিন ধোনিকে টু শব্দটি পর্যন্ত বলেননি। এই যে ওকে কোনও চাপ না দেওয়া, ওকে স্পেস দেওয়াএটা ধোনিকে এমন একটা স্টেট অব মাইন্ডে নিয়ে গিয়েছে যেখানে ওকে খেলা ছাড়া আর কোনও চিন্তা করতে হয় না। যেহেতু আমি সাক্ষীকেও চিনি, সাক্ষীও ধোনির কোনও ডিস্টারবেন্স হতে পারে এমন কিছু হতে দেয় না। এই পারিবারিক সাপোর্টটা যে ধোনিকে মাথা ঠান্ডা রাখতে কতটা সাহায্য করে, ও সেটা নিজেই স্বীকার করে।
|
ছবি: উৎপল সরকার |
মিডিয়া কী বলল সেটায় কান না দেওয়া
আমার মনে হয়, আজকে যখন ধোনিকে দেখি দাড়ি পাকতে শুরু করেছে, চুল অনেকটা পাতলা হয়ে গিয়েছে, তখন নিজেই মনে মনে ভাবি এত প্রেশার নিশ্চয়ই ওর ওপর একটা এফেক্ট ফেলেছে। কিন্তু এটা জানি ও এটাকে ওর কাজের অংশ ভেবেই গ্রহণ করেছে। “ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেনের চুল, দাড়ি পাকবে না তো কার পাকবে?” এক বার মস্করা করে আমায় বলেছিল। আজকে যখন দেখি ধোনি সব সিদ্ধান্ত ঠান্ডা মাথায় নেয়, তখন মনে হয় এর প্রধান কারণ মিডিয়া ওকে নিয়ে কী বলল সেটা নিয়ে ও ভাবে না বলেই হয়তো এটা পারে। ওর একটা ফিলজফি আছে মিডিয়া নিয়ে। ও মনে করে ভাল খেললে মিডিয়া ওকে নিয়ে ভাল লিখতে বাধ্য। আর খারাপ খেললেও সমালোচনা করতে বাধ্য। এই হিসেবটা ওর মাথায় ভীষণ পরিষ্কার। তাই হয়তো ও কোনও দিন অন্য অনেক প্লেয়ারের মতো চেনা সাংবাদিককে দিয়ে স্টোরি প্ল্যান্ট করায় না, খুশি রাখতে কাউকে ইন্টারভিউ দেয় না। এই যে মিডিয়ার প্রতি ওর মনোভাব এটা ওকে অসম্ভব ভাবে প্রায় বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মতো মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
সব জিতব নাকি, হারতেও তো হবে
আমার মনে আছে, একটা ম্যাচে ধোনি ব্রিলিয়ান্ট একটা সেঞ্চুরি করলেও ইন্ডিয়া ম্যাচটা হেরে যায়। সে দিন আমি ওকে একটা এসএমএস করেছিলাম। লিখেছিলাম, “হার্ড লাক।” মনে আছে, সঙ্গে সঙ্গে আমায় ফোন করেছিল। ফোন করে বলেছিল, “লাককে দোষ দেওয়ার কী আছে? এটা ক্রিকেট ম্যাচ। একদিন আমরা জিতব। আর এক দিন হেরেও যাব। কিন্তু হেরে যাওয়ার পর অত কান্নাকাটির কী আছে? আর নিজের ভাগ্যকেই বা কেন দোষ দেব? আমি ও সবে নেই। আরে সব জিতব নাকি? হারতেও তো হবে।” সে দিন ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে ও যখন এ কথা বলছে, বুঝতে পেরেছিলাম মানুষটার ‘থিঙ্কিং’টা কী ধরনের। ও নিজের সাফল্য নিয়েও এই রকমই নির্লিপ্ত থাকতে পারে অনায়াসে। আজকে যখন ভাবি ওর এই ধূমকেতুর মতো উত্থানটা কী ভাবে সম্ভব হয়েছিল, তখন মনে হয় এই রকম ক্যাজুয়াল মানসিকতাই ওকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। আর আজকে মাঠে হেরে যাওয়ার পর ওকে যখন ওই রকম বরফ-ঠান্ডা দেখি, তখন ওই কথাটাই কানে বাজে—“সব জিতব নাকি, হারতেও তো হবে।”
যা পেয়েছি সেটাই ক’জন পায়
এমএসডির জীবনটা যদি দেখেন, তা হলে দেখবেন ও কিন্তু অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছে। রাঁচির ধুলো-ওড়া মাঠে টেনিস বল ক্রিকেট থেকে টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন হওয়াটা একটা অসম্ভব ফ্যাসিনেটিং জার্নি। আর এই জার্নিটাতে ও মাথা কী ভাবে ঠান্ডা রাখে জানেন? প্রায়ই বলে, “ আই অ্যাম ভেরি লাকি। আমি যেখান থেকে উঠে এসেছি, যা পেয়েছি জীবনে সেটাই বা ক’জন পায়?”
এর থেকেই বোঝা যায় ও ভেতর থেকে কতটা সন্তুষ্ট। নিজেই স্বীকার করে এটাই ওকে জীবনের জার্নিতে শান্ত থাকতে সাহায্য করে।
এবং এই যাত্রাটা যে এক দিন শেষ হবে সেটা এমএসডির থেকে ভাল কেউ জানে না। আর জীবন থেকে এই সন্তুষ্টির জন্যই কেন জানি না আমার গাট ফিলিং বলে, ধোনি অবসরটাও এমন সময় নেবে যে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যাবে।
|
বস যখন বকছেন, তখন ডিপ ব্রিদিং হয় নাকি!
দৈনন্দিন জীবনে আমি-আপনি চাপের মধ্যেও কী করে ধোনি-র মতো অবিচল থাকতে পারি,
তার টিপস দিচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রিমা মুখোপাধ্যায়
|
ধোনির মতো মানুষ, যাঁরা সুপার অ্যাচিভার, তাঁরা জীবনে অসম্ভব স্ট্রাগলের মধ্যে দিয়ে আজকের এই জায়গায় পৌঁছেছেন। কিন্তু আমি আর আপনি? আমাদের তো ধোনির মতো খ্যাতি নেই। কিন্তু নিজেদের মতো করে আমাদের জীবনেও চাপ প্রচুর। সেটা সামলাব কী ভাবে?
প্রথমেই বলি, চাপ কমাতে অনেকেই বলে ডিপ ব্রিদিং করুন। সেটা অবশ্যই ভীষণ উপকারী একটা এক্সারসাইজ। কিন্তু বলুন তো একটা ব্যাপার, আপনার বস আপনাকে ডেকে কিউবিকলে অসম্ভব বকছেন। তখন কি আপনার ডিপ ব্রিদিং-এর কথা মনে পড়বে? কখনওই না। সেটা অবাস্তব। তার থেকে বস যখন আপনাকে বকছেন, সেই সময় মনে মনে বলুন এটাও কেটে যাবে। দিজ টু শ্যাল পাস। দেখবেন মাথা ঠান্ডা থাকছে।
রাত্রিবেলা বাড়ি ফিরে দরজাটা বন্ধ করে চেষ্টা করুন একদম কাজ থেকে সুইচ অফ করে ফেলতে। জানি মিডিয়া, ডাক্তার বা বিনোদন জগতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের পক্ষে এটা করা অসম্ভব। তাও বলব, দিনে কোনও সময় অন্তত কুড়ি মিনিটের জন্য মনটা সুইচ অফ করুন। আর মনটা সুইচ অফ করার আগে ফোনটাও সুইচ অফ করা দরকার। তাই ফোন সুইচ অফ করলেই দেখবেন মনটাও সুইচ অফ হয়ে গিয়েছে।
ধোনির ব্যাপারে পড়তে গিয়ে জানলাম উনি প্ল্যানিং যা করার, মাঠে করেন। আগে থেকে নিজের মনটা ক্লাউড করেন না, ভীষণ ক্যাজুয়ালি জীবনটাকে দেখেন। আমার মতে ধোনির মাথা ঠান্ডা রাখার পিছনে এটা একটা প্রধান কারণ। নিজেকে নিয়ে সেল্ফ ইমপর্টেন্সে না ভোগা। অনেকেই আমরা অযথা নিজেকে নিয়ে ভাবি। যখন কেউ আমাদের দেখছে না তখন ভাবি পুরো দুনিয়া আমাদের দেখছে।
এগুলো সেল্ফ ইমপর্টেন্সের লক্ষণ। এগুলো কাটিয়ে ফেললেই জীবনটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। শান্তি আসবে জীবনে। |
|
|
|
|
|
|
|