|
|
|
|
নন্দীগ্রামের প্রার্থীদের চেনাতে চণ্ডীপুরে কর্মিসভা বামেদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
কেউ স্থানীয় বাসিন্দা নন, আবার কেউ এলাকার বাসিন্দা হলেও দীর্ঘ দিন গ্রামছাড়া। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে বামফ্রন্টের অনেক প্রার্থীকে চেনেনই না এলাকাবাসী। তাঁদের হয়ে দেওয়াল লিখন, পোস্টার-ব্যানার টাঙানোও হয়নি বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের পরিচিত করাতে নন্দীগ্রাম লাগোয়া চণ্ডীপুরে আজ, শনিবার কর্মিসভার আয়োজন করেছে জেলা বামফ্রন্ট।
এ বার অবশ্য নন্দীগ্রাম-১, ২ ব্লকের অধিকাংশ গ্রামপঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি বামেরা। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ১৪০টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে সিপিএম ৪টি ও সিপিআই ৫টি আসনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ২টি ও সিপিআই একটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ৯১টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে সিপিএম ৩০টি, সিপিআই ও আরএসপি ৫টি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ২০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৯টি , সিপিআই ২টি ও আরএসপি ১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তবে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তিনটি ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের দু’টি মিলিয়ে জেলা পরিষদের ৫টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে বামফ্রন্ট। সিপিএমের এক জেলা নেতৃত্বের কথায়, “নন্দীগ্রামের অধিকাংশ এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে আমাদের দলের প্রার্থীই নেই। তবে জেলা পরিষদের সব আসনে প্রার্থী থাকায় সেখানে আমাদের পক্ষে জনমতের একটা পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে।”
নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তিনটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে একটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন এলাকার সিপিআই নেতা কবীর মহম্মদ। আর বাকি দু’টি আসনে সিপিএমের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন মনোয়ারা বেগম ও হারাধন প্রামাণিক। মনোয়ারা বেগমের বাড়ি পাঁশকুড়ায় আর হারাধনবাবুর বাড়ি হলদিয়ার সুতাহাটায়। অন্য দিকে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের দু’টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে একটিতে প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য প্রশান্ত মাইতি, আর একটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন আরএসপি’র কল্পনা প্রধান।
সিপিএমের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকের বেশ কিছু প্রার্থীও দীর্ঘ দিন ঘরছাড়া রয়েছে। যেমন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভেকুটিয়া পঞ্চায়েতে একটি আসনে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সরোজ ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন নিতাই গিরি। নিতাইবাবু প্রায় গত প্রায় চার বছর ধরে ঘরছাড়া। নতুন ভোটারদের অনেকেই তাঁদের চেনেন না। আবার জেলা পরিষদের পাঁচ জন প্রার্থীর মধ্যে দু’জন নন্দীগ্রাম এলাকার বাইরের বাসিন্দা। নন্দীগ্রামের সাধারণ মানুষ তো বটেই, দলের কর্মী-সমর্থকরাও তাঁদের চেনেন না।
তাঁরা যে নিজেদের চেনাবেন, সে উপায়ও নেই। সিপিএমের নন্দীগ্রাম সাংগঠনিক জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক গুড়িয়া বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাস ও হুমকির কারণে নন্দীগ্রামের অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে আমারা প্রার্থী দিতে পারিনি। হুমকি ও ভীতি উপেক্ষা করে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা যাতে প্রচারে না বেরন, তার জন্য নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
এই পরিস্থিতিতে দলের প্রার্থী সহ কর্মী-সমর্থকদের গোপনে প্রচারে হাতিয়ার মোবাইল। এলাকায় পরিচিতদের ফোন করে বা ‘মেসেজ’ পাঠিয়ে যতটুকু সম্ভব প্রচার করছেন প্রার্থীরা। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “দেওয়াল লিখন, পোস্টার, ব্যানারের মাধ্যমে প্রচার প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে প্রচারের এই সব খাতে খরচ অনেকটাই কমেছে। তবে মোবাইলে প্রার্থীরা যাতে জনসংযোগটা করতে পারেন, তার জন্য ফোনের খরচ বাড়ানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|