পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে জঙ্গলমহলে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী মঙ্গলবার জেলায় এসে তিনি দু’টি সভা করবেন। দু’টিই জঙ্গলমহল এলাকায়। একটি সভা হবে জামবনির গিধনিতে। অন্যটি, গোপীবল্লভপুর-১ এর ছাতিনাশোলে। সেই মতোই প্রস্তুতি শুরু করেছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য সভাস্থল হিসেবে নেতৃত্বের কাছে বেশ কিছু জায়গার নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রস্তাব করেছিলেন ব্লক নেতৃত্বই। শেষমেশ এই দু’টি জায়গা চূড়ান্ত হয়। শুক্রবার এলাকা পরিদর্শন করে জেলা তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ প্রমুখ। মুখ্যমন্ত্রীর সভার সমর্থনে আজ, শনিবার থেকেই প্রচার শুরু করবেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা।
জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎবাবু বলেন, “নেত্রী দু’টি সভা করবেন। আপাতত, তাই ঠিক রয়েছে। সভা হবে আগামী মঙ্গলবার। প্রথমটি জামবনির গিধনিতে। দ্বিতীয়টি গোপীবল্লভপুরের ছাতিনাশোলে।” দলীয় সূত্রে খবর, সভ া শেষে ওই দিন রাতে মেদিনীপুরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। থাকতে পারেন সার্কিট হাউসে। তবে, এই বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
রাজ্যে পালাবদলের পর বেশ কয়েকবার এ জেলার জঙ্গলমহলে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষ এসেছেন গত মার্চে, বিনপুরে। তবে সেই সভার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। কারণ, সভায় তেমন লোক হয়নি। বিনপুরের সভাটি ছিল সরকারি সভা। সভা যেখানে হয়, সেখানে প্রায় প্রায় ২৫ হাজার লোকের জমায়েত হতে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় জমায়েত হয়েছিল খুব বেশি হলে ৫ হাজার। এত কম জমায়েত,
ওই প্রথম।
ফলে, এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের অন্দরেও। সামনে আসে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ। একাংশ নেতৃত্বের মতে, জঙ্গলমহলে দলের কাণ্ডারী শুভেন্দু অধিকারী। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সভার আয়োজনে শুভেন্দুকে সে ভাবে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাই ওই অবস্থা হয়েছিল। তাঁর সভা নিয়ে আলোচনা চলবে, তা বুঝতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী ওই সভা থেকেই বলছিলেন, “এটা গরমকাল। এত রোদে বেলা বারোটার সময় সভা হয় না। মাথার উপর ছাউনি দিলে ভাল হত। এটা আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সে জন্য আর কেউ বক্তৃতা দেবে না। আমি বক্তৃতা দিয়ে সভা শেষ করে দেব।” পরদিন বাঁকুড়ার এক সভায় তাঁর বক্তব্য ছিল, “বিনপুরের সভা দু’ঘণ্টা আগে হওয়ায় মানুষ আসতে পারেননি। তাতেই কিছু মিডিয়া বলে দিল, জঙ্গলমহলের মানুষ পাশে নেই।”
যে কারণেই হোক না কেন, এ বার যাতে ওই পরিস্থিতি তৈরি না-হয়, তার জন্য বাড়তি তৎপর হচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, গিধনির সভাটি হবে গিধনি রেলওয়ে স্টেশনের পাশের মাঠে। বেলা একটায়। ছাতিনাশোলের সভাটি হবে স্থানীয় তরুণ সঙ্ঘ ক্লাবের পাশের মাঠে। বেলা তিনটায়। দু’টি সভাস্থলেই প্রচুর মানুষের জমায়েত হবে বলে দাবি দলের জেলা নেতৃত্বের। |