১৬ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি সব্জি সংরক্ষণ কেন্দ্রটি উদ্বোধনের পরে দু’বছর কেটে গেলেও চালু হল না।
চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের এক প্রান্তে ১ একর জমির উপরে হুগলি জেলা উদ্যান পালন দফতর এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল সব্জি সংরক্ষণ কেন্দ্রটি। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন জাঁকজমক করে সংরক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। সেই থেকে একই অবস্থায় পড়ে আছে সেটি। কেন্দ্রটি চালু করার ব্যাপারে নতুন সরকারের কোনও উদ্যোগও চোখে পড়ছে না।
কথা ছিল, বিশেষ আলোকরশ্মির সাহায্যে সংরক্ষণ কেন্দ্রে আলু, পেঁয়াজ-সহ বিভিন্ন সব্জির ভিতরের জীবাণু নষ্ট করে দেওয়া হবে। এর ফলে দীর্ঘ দিন সতেজ থাকবে সব্জি। কৃষকেরা খেত থেকে সব্জি তোলার পরে দ্রুত বাজারজাত করতে না পারলে তাতে পচন ধরে। সেই ভয়ে অনেকে কম টাকায় স্থানীয় বাজারে দ্রুত সব্জি বিক্রি করেন। অনেক সময়ে তাতে লাভের অঙ্ক কম থাকে চাষিদের। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলেও সব্জি চাষে ক্ষতি হয়। সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা হলে আখেরে চাষিদের আর্থিক উন্নতি হওয়ার কথা। |
পোলবার গোপাল হালদার বলেন, “আমার চার বিঘা জমির এক দিকে নির্দিষ্ট মরসুমে আলু চাষ হয়। বাকি অংশে পটল, বেগুন, টমেটো চাষ হয়। জমি থেকে সব্জি তুলে ফেলার পরে বিক্রি না হলে কয়েক দিনের মধ্যেই তাতে পচন ধরতে শুরু করে। ব্যাপক ক্ষতির সন্মুখীন হতে হয় আমাদের। সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা হলে এই পরিস্থিতি বদলাতো। আমরা আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলাম।” ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে সব্জি সংরক্ষণ কেন্দ্র চালু হওয়ার আশায় রয়েছেন দাদপুরের মাধব দাস, অবনী ভৌমিক-সহ আরও বহু চাষি।
জেলা উদ্যানপালন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মানস ভট্টাচার্য বলেন, “এই সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়তে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল, তাতে প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভাবে চালু করা সম্ভব নয়। বাকি টাকা না পাওয়া পর্যন্ত সব্জি সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করা যাচ্ছে না।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রদীপ ঘোষ বলেন, “বর্তমানে অর্থাভাবে সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করা যাচ্ছে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সাথে আলোচনা চলছে। চেষ্টা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই সমস্যা মিটিয়ে সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করার।” |