সম্পাদকীয় ২...
অতল
০১১-১২ সাল খুব বেশি দিন আগের কথা নহে। সেই বৎসর গড়ে এক ডলারের দাম ছিল ৪৭ টাকা ৯২ পয়সা। এখন তাহা প্রায় ৬০ টাকার সীমা পার হইয়া যাওয়ার মুখে। দুঃসংবাদের মাত্রাটি প্রবল। কারণ, এখন ভারতের বাণিজ্যখাতে ঘাটতির পরিমাণ এমনিতেই অস্বাভাবিক রকম বেশি। ডলারের দাম যতই বাড়ুক, কিছু অপরিহার্য পণ্য, যেমন পেট্রোলিয়াম, আমদানি না করিলে এই দেশের একটি দিনও চলিবে না। টাকার দাম পড়িলে সেই আমদানির খরচ বাড়িবে। ফলে বাণিজ্য খাতে ঘাটতির পরিমাণ আরও মারাত্মক হইবে। এই সপ্তাহের শেষে যে অবস্থা হইল, তাহা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী। বেন বার্নানকে তো আর প্রত্যহ ফেডারেল রিজার্ভ-এর আর্থিক উৎসাহ গুটাইয়া লইবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করিবেন না। বাজার এই সংবাদটি প্রত্যাশা করে নাই। ফলে, আকস্মিক ধাক্কায় প্রাতিষ্ঠানিক বিদেশি বিনিয়োগ চঞ্চল হইয়াছে। শুক্রবার, মাত্র এক দিনেই, ভারতের বাজার হইতে দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি এফ আই আই বাহির হইয়া গিয়াছে। আশা করা যায়, ফেডারেল রিজার্ভ-এর সিদ্ধান্তটি আত্মস্থ হইলে বাজার নিজেই খানিক সংযত হইবে। ডলারের দাম ৬০ টাকার সীমায় ঘুরিবে না।
কিন্তু তাহা স্বল্পমেয়াদি সমাধান। কোনও দেশের অর্থনীতি এফ আই আই-এর মুখাপেক্ষী থাকিতে পারে না। তাহা হইলে এই দোলাচলই একমাত্র সত্য হইবে। ভারতের কর্তব্যটি, প্রকৃত প্রস্তাবে, কাণ্ডজ্ঞানের শ্রেণিভুক্ত আমদানি কমাইতে হইবে এবং রফতানি বাড়াইতে হইবে। কিছু আমদানিতে রাশ টানা মুশকিল। কিন্তু সোনার ন্যায় পণ্যের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নাই। পালনিয়াপ্পন চিদম্বরমকে আরও কঠোর হইতে হইবে বইকী। রফতানির ক্ষেত্রে বৈচিত্র বৃদ্ধি প্রয়োজন পণ্যের, এবং সঙ্গী দেশের, উভয়েরই বৈচিত্র। ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের মানচিত্রে এশিয়ার একাধিপত্য। তাহা এক অর্থে স্বাভাবিক, কিন্তু লাতিন আমেরিকা বা আফ্রিকার ন্যায় অপেক্ষাকৃত নূতন এবং অপরিচিত বাজারে আরও জোরালো ভাবে প্রবেশ করা বিধেয়। কিন্তু তাহা এশিয়ার বাজার নষ্ট করিয়া নহে ভারতকে রফতানির পরিমাণ বাড়াইতে হইবে। বাণিজ্য খাতে ঘাটতি লইয়া অর্থমন্ত্রী যে উদ্বিগ্ন, তাহা তিনি বাজেটের সময়ই জানাইয়াছিলেন। তিন মাসে উদ্বেগ বাড়িয়াছে।
অর্থমন্ত্রী তিন দফা ব্যবস্থার কথাও বলিয়াছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিদেশি বিনিয়োগের উপর নির্ভরতা একটি দফা ছিল বটে, কিন্তু বাকি দুইটি ছিল বৈদেশিক বাণিজ্যিক ঋণ গ্রহণ এবং রফতানির পরিমাণ বৃ্দ্ধি। ভাবিয়া দেখিলে, অর্থমন্ত্রীর হাতে শেষ অস্ত্রটিই পড়িয়া আছে। কিন্তু কী ভাবে রফতানির পরিমাণ বাড়ানো যায়, তাহার কোনও স্পষ্ট দিক-নির্দেশ এখনও নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহিত ভারতের সুদের হার তুলনা করিলে বোঝা যায়, ভারত কী বিপুল একটি সম্ভাবনা হাতছাড়া করিতেছে। টাকার দাম যদি খানিক নিয়ন্ত্রণে থাকিত, ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করা মার্কিন পুঁজির পক্ষে নিতান্ত স্বাভাবিক সিদ্ধান্ত হইত। সুযোগটি হেলায় নষ্ট হইল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.