এক নাবালিকার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মৃতার পরিবারের লোকজন ও হাউসস্টাফ একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন। দিনভর কর্মবিরতি পালন করলেন হাউসস্টাফরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বড়জোড়ার তাজপুরের বাসিন্দা আয়েষাণা খাতুনকে (১৬) শনিবার রাতে পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে করানো হয়েছিল। রবিবার রাতেই তার মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “ওই নাবালিকার কিডনিতে পাথর হয়েছিল। তাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন আমাদের আর কিছু করার ছিল না।” এর জন্য চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন মৃতার পরিবার।
মৃতার কাকা হায়দার মণ্ডলের অভিযোগ, “রবিবার দুপুর থেকেই ভাইঝির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। আমরা চিকিৎসকদের বার বার ডাকলেও তাঁরা দেখতে আসেননি। পরে এলেও ঠিক মতো চিকিৎসা করেননি। চিকিৎসকের গাফিলতিতেই মেয়েটি মারা গেল। আমরা হাউসস্টাফদের কাছে শুধু অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমাদের সঙ্গে বচসা শুরু করে দিলেন। পরে আমাদের মারধরও করেন। তাঁর দাবি, হাউসস্টাফদের মারে জখম হয়ে দাদা একতার মণ্ডল বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি। যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের অধ্যক্ষ দেবব্রত সর্বপল্লি। তাঁর দাবি, “হাউসস্টাফেরা রোগীর পরিবারের লোকেদের মারধর করেননি। রোগীর পরিবারের কেউ হাসপাতালে ভর্তি আছে কি না তাও জানি না।” তাঁর কথায়, “বাঁকুড়া মেডিক্যালে রোগীদের চাপ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। অথচ হাসপাতালের পরিকাঠামোর কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে রোগীদের পরিবারের লোকেরা যে ভাবে হাউসস্টাফদের উপরে চড়াও হচ্ছে তাতে আমরা ভয়ের মধ্যে আছি। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি জেলাশাসক যেন খতিয়ে দেখেন সে ব্যাপারে চিঠি দিয়ে আর্জি জানিয়েছি।”
এ দিকে, রবিবার রাত থেকেই হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করার দাবি তুলে কর্মবিরতি শুরু করেছেন হাউসস্টাফেরা। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই কর্মবিরতি চালুই ছিল। যদিও এই ঘটনার হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যহত হয়নি বলেই দাবি করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “আমাদের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ চিকিৎসক রয়েছে। রবিবার রাত থেকেই তাঁরা প্রত্যেক ওয়ার্ডে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাই হাউসস্টাফেরা কর্মবিরতি করলেও পরিষেবা সচলই আছে।” |