শোধরাতে হবে নিজেদের, মুখ খুললেন রাজ্যপাল
বারাসতের কামদুনি থেকে নদিয়ার গেদে রাজ্যে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন রাজ্যপাল। রবিবার দক্ষিণ কলকাতায় লেক ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা নিজেদের ভাল নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ। তাই এমন ঘটছে। নিজেদের শোধরাতে হবে।”
দিন কয়েক আগেই ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা গিয়েছে নারী নির্যাতনে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কেন রাজ্য প্রথম স্থানে উঠে এসেছে, তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরেই চাপানউতোর রয়েছে। এ দিন এনসিআরবি-র রিপোর্ট প্রসঙ্গে রাজ্যপালের মন্তব্য, “নির্যাতন বেশি হচ্ছে না কম, সেটা কথা নয়। আমরা চাই, এমন একটা পরিবেশ, যেখানে এই ধরনের ঘটনা একেবারেই না ঘটে।” তবে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান তিনি। রাজ্যপালের আশা, “শীঘ্রই এমন ঘটনাগুলি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব।”
কামদুনির মতো ঘটনা থেকে মুক্তির আশায়, প্রশাসনের সক্রিয়তার দাবিতে এ দিনও মিছিল হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। একটি মিছিল বেরোয় রাজারহাটের রেল ময়দান থেকে। তাতে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ছিলেন। ছিলেন শিক্ষক-সহ অন্য পেশার মানুষেরাও। রাজারহাট-খড়িবাড়ি রোড ঘুরে রেল ময়দানেই শেষ হয় মিছিল। নিহত কামদুনি-কন্যার স্মৃতিতে তৈরি বেদিতে জ্বালানো হয় মোমবাতি। ঘটনাচক্রে, ওই রাজারহাট-খড়িবাড়ি রোড দিয়েই রোজ কলেজ যেত মেয়েটি। যার ব্যতিক্রম হয়নি জীবনের শেষ দিনেও। মিছিল হয়েছে বারাসতেও। বিকেলে ডাকবাংলো মোড় থেকে শ’পাঁচেক স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মিছিল করেন। বারাসত থানায় বিক্ষোভ দেখিয়ে মিছিলকারীরা হাজির হন বারাসত আদালতের কাছে রাজীব দাস হত্যার স্থলে। ২০১১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিদির সম্মান বাঁচাতে গিয়ে খুন হতে হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীবকে। সেখানেই কামদুনির ঘটনার বিচার চেয়ে পোস্টার পড়ে। জ্বালানো হয় মোমবাতিও।
দু’টি মিছিলই সংগঠিত হয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বা এসএমএসের মাধ্যমে। বারাসতে মিছিলের ডাক দিয়ে ফেসবুকে কমিউনিটি পেজ খোলা হয়েছিল। রাজারহাটেও মিছিল সংগঠিত হয়েছে প্রায় একই কায়দায়। আন্দোলন সংগঠনকারীদের পক্ষে রক্তিম কর বলেন, “মিছিলের প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে এসএমএস-ও।” কেন মিছিল? শুধুই কি প্রতিবাদ? আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, ঘটনার প্রতিবাদ যেমন রয়েছে, তেমনই মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশাসনের টনক নাড়ানোর দরকার। বারাসতের মিছিলে ছিল অষ্টম শ্রেণির চৈতিশা মোদক। তার দাবি, “আমরা নিশ্চিন্তে পড়াশোনা, রাস্তায় চলাফেরা করতে চাই।” আর এক আন্দোলনকারী সৌমি রায়চৌধুরীর অভিযোগ, “৭ জুনের ঘটনার পর এখনও কামদুনিতে নিরাপত্তা নেই! ” রাজারহাটে মিছিলে ছিলেন রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের ছাত্রী মনস্বিনী চট্টোপাধ্যায়। বলেন, “কামদুনির প্রতিবাদ না করতে পারলে নিজেকে মানুষ ভাবতেই লজ্জা হত।”
কামদুনির নিহত কলেজ ছাত্রীর পরিবারকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করানো ও তার জন্য ট্রেনে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নেতা তাপস মজুমদার রবিবার কামদুনিতে গিয়ে ওই ছাত্রীর পরিবার ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাপসবাবু জানান, কারা দিল্লি যেতে আগ্রহী, তা আজ, সোমবার তাঁরা জানাবেন। তার পরেই তাঁদের দিল্লি যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হবে।

বিক্ষুব্ধ সামলাতে প্রাক্তনদের গুরুত্ব
পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জেলায় জেলায় অন্তর্দলীয় দ্বন্দ্ব সামাল দিতে বিক্ষুব্ধদের মান ভাঙানোরই কৌশল নিল তৃণমূল। এ বার টিকিট পাননি, জেলা পরিষদের এমন কোনও সদস্য যাতে দল থেকে বিচ্ছিন্ন না হন, তার জন্য তাঁদের কাছে গিয়ে প্রচারে সামিল হওয়ার অনুরোধ জানাতে হবে জেলা পরিষদে এ বারের প্রার্থীদের। দলীয় নেতৃত্ব তেমনই পরামর্শ দিয়েছেন জেলায় জেলায়। তৃতীয় দফার মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা প্রায় শেষ হওয়ার মুখে তপসিয়ার দলীয় কার্যালয়ে বর্ধমান, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো কয়েকটি জেলার জেলা পরিষদ প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। প্রার্থীদের স্পষ্ট বলা হয়েছে, দলের প্রবীণ কর্মী ও জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের বোঝাতে হবে যে, তাঁরাই ভোটের মূল কারিগর। বিক্ষুব্ধ কর্মীদের প্রচারের পুরো ভাগে রাখতেও বলা হয়েছে প্রার্থীদের। প্রচার থেকে ভোট নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই তাঁদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। লক্ষ্য একটাই, বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রাক্তনদের কাজকর্মে দলের ভোট যাতে ভাগাভাগি না হয়ে যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.