মত্ত মাকনার আক্রমণের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বন কর্মীরা।
শনিবার রাত তখন ন’টা। জলদাপাড়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এক দাঁতাল সে সময় হলং গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। গ্রামের একের পর এক সুপারি গাছ উপড়ে ফেলে বাসিন্দাদের পিছু ধাওয়া করছে মত্ত মাকনাটি। গ্রামে হাতি ঢোকার পর লোকজন টিন, ক্যানেস্তারা পিটিয়ে, ভেঁপু বাজালেও হাতি বনে না ফেরায় লোকজন জলদাপাড়া বন দফতরের মাদারিহাট এলিফেন্ট স্কোয়াডে খবর দেন। এলিফেন্ট স্কোয়াড ও জলদাপাড়া উত্তর রেঞ্জের কয়েকজন বন কর্মী গ্রামে পৌঁছনোর পর তারা হাতিটির চোখে সার্চ লাইটের আলো ফেলতে বেজায় রেগে যায় মাকনাটি। হাতিটি যে আসলে মস্তিতে আছে, টের পেয়ে কিছুটা দূরে সরে আসেন বন কর্মীরা।
সাধারণত হাতি তাড়াতে বন কর্মীরা সার্চ লাইট দেখিয়ে ও সাইরেন বাজিয়ে থাকেন। তবে ওই মাকনার চোখে সার্চ লাইটের আলো পড়তেই ১২ জন বন কর্মীর দিকে ধাওয়া করতে শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে পর পর শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি করলেও হাতিটি পিছু হঠে নি। বন কর্মীদের হাতে মজুত অবশিষ্ট চার রাউন্ড গুলিও শেষ হয়ে যায়। পরে অবশ্য, মাকনাটি বস্তি পেরিয়ে বনের পথে চলে যায়। শেষ চার রাউন্ড গুলিতে কাজ না হলে গুলিহীন বন কর্মীদের হাতির আক্রমণে প্রাণ সংশয় হত বলে আশঙ্কা বন দফতরের। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে মাদারিহাট এলিফেন্ট স্কোয়াডের কর্মীদের মধ্যে। বন কর্মীদের প্রাণ রক্ষা করার জন্য দফতর থেকে বন্ধুক বা গুলির যোগান না মেলার অভিযোগ তুলেছেন বন কর্মীরা।
উত্তরবঙ্গের প্রধান বনপাল বিপিন সুদ অবশ্য বলেন, “পটকা বা গুলির যোগান যথেষ্ট রয়েছে। বন কর্মীদের কাছে কেন সে পরিমাণ গুলি ছিল তা অফিসারদের কাছে খোঁজ নেওয়া হবে। সে রকম কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়।” বন কর্মীদের আলো দেখে শুঁড় উঠিয়ে কর্মীদের ধাওয়া করতে শুরু করে হাতিটি গ্রামের পাশে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর উঠে পড়ে। হাতিটিকে রাস্তার উপরে দেখে দু’পাশে সমস্ত গাড়ি পিছিয়ে যায়। স্কোয়াডের এক কর্মী বিকাশ দাস বলেন, “শেষ গুলিটিতে হাতিটি পিছু না হটে গেলে কয়েক জনের প্রাণ যেতে পারত। আমাদের হাতে আর গুলি ছিল না।” অভিযোগ, স্কোয়াডকে পাঁচটি বন্ধুক দেওয়া হলেও, দীর্ঘদিন ধরে তিনটি বিকল। এক সঙ্গে সাত, আটির বেশি গুলি দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। প্রায় দেড় বছর ধরে অনেকে টিএ পান না। রাত জাগার জন্য টিফিনের খরচও দফতর দেয় না বলে অভিযোগ।
রাজ্যে শাসক দলের প্রভাবিত বন কর্মীদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক অমল সিংহ বলেন, “কর্মীদের দিকে খুব একটা নজর দেওয়া হচ্ছে না। ট্রেজারির মাধ্যমে টিএ বিল পেতে অনেক দেরি হচ্ছে। অথচ এই কর্মীরাই নিজেদের প্রাণ হাতে কাজ করেন।”
|
জলাভূমি সংরক্ষণ দিবস পালিত শহরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শহরে পালিত হল জলাভূমি সংরক্ষণ দিবস।—নিজস্ব চিত্র। |
আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে জলাভূমি সংরক্ষণ দিবস পালিত হল সল্টলেকের রবীন্দ্র নিকেতন ভবনে। রবিবার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ দত্ত-সহ মত্স দফতরের আধিকারিকেরা। সাধারণ মানুষও ওই অনুষ্ঠানে ভিড় করেন। এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রথমে বৃক্ষরোপণ করা হয়। এর পরে রবীন্দ্র নিকেতনের পিছনের ভেড়িতে মাছও ছাড়া হয়। জলাভূমি সংরক্ষণ কেন প্রয়োজন এবং তার জন্য কী কী আইন রয়েছে, তা নিয়ে বলেন পর্ষদের চেয়ারমান বিনয়কৃষ্ণ দত্ত। জলাভূমি সংরক্ষণ করলে এক দিকে যেমন মাছের পরিমাণ বাড়ে, তেমনই জলাভূমির জল পুনর্ব্যবহারে নানা প্রয়োজনও মেটে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। |