বৃষ্টি সঙ্গী করে আষাঢ় হাজির হল। আজ, রবিবার আষাঢ়স্য প্রথম দিবস, মানে বর্ষা ঋতুর শুরু। কিন্তু গত বছর বর্ষার নিজের মেজাজে পৌঁছতে মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গিয়েছিল। এ বার তা নয়। জৈষ্ঠের শেষেই বর্ষা দিব্যি হাজির। আবহবিদেরা বলছেন, এ বার বর্ষার যা মতিগতি, তাতে বৃষ্টি নিয়েই চলা শুরু করছে আষাঢ়। শুক্রবার মৌসম ভবনের জারি করা দ্বিতীয় দফার বর্ষার পূর্বাভাসেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। এর ফলে এ বছর কৃষির পরিস্থিতিও ভাল হতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।
এ বছর বর্ষা-পরিস্থিতি যে অনূকূল হতে পারে, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন আবহবিদেরা। এপ্রিলে জারি করা প্রথম পূর্বাভাসেও তেমন ইঙ্গিত দেন মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, নিম্নচাপ অক্ষরেখা ও পরের পর কালবৈশাখীর জন্য গরমেও ভালই বৃষ্টি পেয়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলি। বঙ্গোপসাগরে অনুকূল বায়ুপ্রবাহের ফলে নিয়ম মেনে হাজির হয়েছে বর্ষাও। সাধারণত, নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখার মধ্যে যে কোনও একটি উপস্থিত থাকলে বর্ষা জোরালো হয়। ঘটনাচক্রে, মে মাসের শেষ ভাগ থেকেই দক্ষিণবঙ্গে একের পর এক সেই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
কী রকম? আবহবিজ্ঞানীরা জানান, গত কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হচ্ছিল দক্ষিণবঙ্গে। শুক্রবার সেটি ওড়িশা উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকে দুর্বল হতে শুরু করে। শনিবার তা মধ্যপ্রদেশের উপর রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। আবহাওয়া দফতরের এক কর্তার কথায়, “নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে পড়লেও একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা রাজস্থান থেকে মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।’’ এবং ওই অক্ষরেখার জেরেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে বলে আবহবিদদের দাবি।
শুক্রবারও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকে ফের একই পরিস্থিতি চলেছে। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিজ্ঞানীরা জানান, নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি ওড়িশার উপর দিয়ে থাকার ফলে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে জলীয় বাষ্প ঢুকছে। তা সম্পৃক্ত হয়ে মেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টি নামছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত দিঘা, ডায়মন্ড হারবারের মতো উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, বাঁকুড়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “আগামী কয়েক দিন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে।”
তবে আবহবিদদের একাংশের মতে, নিম্নচাপের প্রভাব কাটলে অক্ষরেখাটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়বে। যার ফলে বৃষ্টির দাপটে কয়েক দিনের জন্য কিছুটা কমতে পারে। সাধারণত, বর্ষার বৃষ্টি দফায় দফায় হয়। এক দফা জোরালো বৃষ্টি হয়ে গেলে কিছু দিন বৃষ্টির পরিমাণ কমে। একই কথা জানিয়েছেন গোকুলবাবুও। তিনি বলেন, “জোরালো বৃষ্টির জন্য কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।”
|
নতুন ভাষা সন্ধানের পরামর্শ বুদ্ধদেবের |
দলের প্রচারের জন্য ছাত্রনেতাদের যুগোপযোগী নতুন ভাষা আয়ত্ত করার পরামর্শ দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এসএফআইয়ের এক অনুষ্ঠানে শনিবার বুদ্ধবাবু বলেন, “আপনারা অনেকেই ভাল বক্তৃতা করেন। প্রচারের ধার বাড়াতে নতুন ভাষা আয়ত্ত করতে হবে।” সে ভাষায় কী থাকবে, তারও কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন বুদ্ধবাবু। তিনি বলেন, “দুনিয়ায় জ্ঞানের শেষ নেই। নিত্যনতুন জ্ঞানের ভাণ্ডার খুলে যাচ্ছে। তরুণ সমাজ জ্ঞানের ভাষা খুঁজছে। তার মনকে টানতে সেই ভাষা ব্যবহার করতে হবে।” লোকসভা ভোটের আগে সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসুর ভাষা ব্যবহার নিয়ে দল বিড়ম্বনায় পড়েছিল। প্রবীণ নেতা বিনয় কোঙারও ভাষা ব্যবহার নিয়ে একাধিক বার সমস্যায় ফেলেছেন সিপিএমকে। বুদ্ধবাবু অবশ্য এ সব প্রসঙ্গের ধারেকাছেও যাননি। তিনি বলেন, “বক্তব্যের ক্ষেত্রে অতি ব্যবহারে জীর্ণ ভাষা চলবে না। নতুন ভাষা ব্যবহার করতে হবে। অতি ব্যবহারে যে ভাষার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে, সে ভাষা আর মানুষকে টানতে পারবে না, তা ছাত্রনেতাদের বুঝতে হবে।” |