হলদিয়া বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করবে কোন সংস্থা তা আর বন্দর কর্তাদের খেয়াল-খুশির উপর নির্ভর করবে না। জাহাজ মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে নিলামের মাধ্যমে পণ্য খালাসকারী সংস্থা বেছে নেওয়া হবে। পাশাপাশি নির্বাচিত ওই সংস্থাগুলি আমদানি-রফতানিকারী সংস্থার থেকে যা খুশি খালাস-মূল্য নিতে পারবে না। হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষই বন্দর ব্যবহারকারীদের থেকে সর্বাধিক কী পরিমাণ খালাস-মূল্য নেওয়া হবে তা ঠিক করে দেবেন। জাহাজ মন্ত্রকের এই বার্তা বন্দরে আসার পর জাহাজি মহলে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে। তাঁদের মতে, কর্তৃপক্ষ মন্ত্রকের নির্দেশ যথাযথ কার্যকর করলে বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে মৌরসিপাট্টা চালানো কয়েকটি সংস্থার দাপট কমবে। তাতে আদতে লাভ হবে বন্দর ব্যবহারকারীদের।
জাহাজ মন্ত্রকের অধিকর্তা(বন্দর) সম্বিত ত্রিপাঠীর পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, পণ্য খালাসকারী সংস্থা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বন্দর কতৃর্র্পক্ষকে স্বচ্ছ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। বন্দর সে জন্য নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে পণ্য খালাসকারী সংস্থা নির্বাচন করতে পারে। শুধু খালাসের ক্ষেত্রে নিলাম করলেই হবে না। দেখতে হবে, যে সংস্থা পণ্য খালাসের বরাত পেল তারা যেন বন্দর ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে যথেচ্ছ টাকা আদায় করতে না পারে। তাতে পূর্ব ভারতে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষকেই বন্দর ব্যবহারকারীদের থেকে খালাস-মূল্য হিসাবে কত চার্জ নেওয়া যেতে পারে তা ঠিক করে দিতে বলা হয়েছে। এ সম্পর্কিত একটি নির্দিষ্ট নীতি তৈরির জন্যই হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে জাহাজ মন্ত্রক। বন্দরের কর্তারা জানান, হলদিয়া বন্দর এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মোটা টাকা রোজগার করতে পারে। কারণ, বছরে মাত্র ৫ হাজার টাকা লাইসেন্স ফি দিয়ে পণ্য খালাসকারী সংস্থাগুলি সারা বছর বন্দর থেকে কোটি কোটি টাকা রোজগার করে। অথচ বন্দরের তা থেকে আয় হয় না। অথচ ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে এবিজি আসার পর প্রতি টন পণ্য খালাসে বন্দরের প্রায় ১৫০ টাকা আয় হচ্ছিল। অন্য ১১টি বার্থে যদিও এই খাতে রোজগার ছিল না। উল্টে বন্দরকে রাজস্বের অংশ না দিয়ে যে সব সংস্থা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে তাদের চাপেই এবিজি-কে চলে যেতে হয়েছে বলে ওই সংস্থা বার বার দাবি করেছে। শেষ পর্যন্ত কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, এখন থেকে অন্যান্য বার্থে যে সব সংস্থা পণ্য খালাসের কাজ করে তাদের টন প্রতি ২৫ টাকা করে লেভি দিতে হবে। যদিও তা এখনও আদায় শুরু হয়নি। বন্দর কর্তৃপক্ষের এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেই জাহাজ মন্ত্রকের নয়া নির্দেশ। যাতে বলে দেওয়া হয়েছে, বন্দর খেয়াল-খুশি মতো নয়, বরং নিলামের মাধ্যমে পণ্য খালাসকারী সংস্থা নির্বাচন করুক।
|