আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ পাটকাপাড়া গ্রামে জ্বরে প্রকোপ শুরু হওয়ায় স্বাস্থ্য দফতর উদ্বেগে। গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের বাসিন্দাই জ্বরে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু বাসিন্দা টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও স্বাস্থ্য দফতর জানায়। কত জন বাসিন্দা টাইফয়েডে আক্রান্ত হন তা খতিয়ে দেখা হবে বলে স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন। গ্রাম থেকে মহকুমা হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় প্রায় ২০ কিলোমিটার। গাড়ি ভাড়া করে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অনেক গ্রামবাসীদের। জলপাইগুড়ি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “দক্ষিণ পাটাকাপাড়া সহ সংলগ্ন এলাকায় প্রায় বাড়িতেই জ্বরের খবর শুনছি। মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। শুক্রবার জেলা থেকে মেডিক্যাল টিম গ্রামে যাবে। আক্রান্তর রক্তনমুনা সংগ্রহ করা হবে।” বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকে তপসিখাতা পঞ্চায়েতের দক্ষিণ পাটকাপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই জ্বরে আক্রান্ত। সঙ্গে সর্দিকাশিও। দিনমজুর আবুল মিঞা, তাঁর স্ত্রী হালিমা বিবি, তাদের দুই ছেলের পরিবার সহ বাড়ির ৮ জন জ্বরে আক্রান্ত। আবুল মিঞা বলেন, “রবিবার থেকে জ্বর। যিনি ওষুধ বিলি করেন, তাঁকেই দেখিয়েছি। টাকা ধার করে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি। রিপোর্টে টাইফয়েড হয়েছে বলে জানিয়েছে।” আরএসপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মতিউর রহমান বলেন, “দক্ষিণ পাটকাপাড়ার অধিকাংশ বাড়িতে জ্বর। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে টাইফয়েডের কথা জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের বাড়িতে নলকূপের জলের কারণে জ্বর হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।”
|
গ্রামে চিকিৎসক, বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব মেটাতে মেডিক্যাল পঠনপাঠনে কিছু শর্ত আরোপের পরিকল্পনা চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, এ বার থেকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে স্নাতকোত্তর, পোস্ট-ডক্টরাল স্তরের পাঠ শেষ করে চিকিৎসকদের গ্রামের হাসপাতালে এক বছর কাজ করা বাধ্যতামূলক। নয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলিতেও এ ভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্নাতকোত্তর এবং পোস্ট-ডক্টরাল পঠনপাঠনের পরে সব চিকিৎসককে গ্রামের মাল্টিস্পেশ্যালিটি, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, মহকুমা, জেলা ও স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বাধ্যতামূলক ভাবে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “সরকারি চিকিৎসক এবং বাইরে থেকে আসা যে-সব চিকিৎসক আমাদের সরকারি হাসপাতালে স্নাতক-পরবর্তী পঠনপাঠনের সুবিধা নেবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করার পরেই বন্ড সই করিয়ে নেওয়া হবে। যাঁরা পাশ করার পরে নিয়ম মানবেন না, তাঁরা সরকারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন।” এ বছর মেডিক্যালের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম চালু করা না-গেলেও পোর্স্ট-ডক্টরাল উত্তীর্ণদের ক্ষেত্রে নিয়ম চালু হবে বলে জানিয়েছেন সুশান্তবাবু। |