উত্তর ২৪ পরগনা থেকেই প্রথম দফার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নামার পরিকল্পনা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সপ্তাহ থেকেই তাঁর প্রচার শুরু হয়ে যাবে বলে বৃহস্পতিবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় জানিয়েছেন। কবে থেকে মমতা প্রচার শুরু করবেন, তা আজ, শুক্রবার দলীয় বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, ১৭টি জেলায় অন্তত ২০টি সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে উত্তরবঙ্গে কতগুলি সভা করবেন, তা এখনও স্থির হয়নি।
পঞ্চায়েত ভোটে তৃতীয় দফার ভোটের মনোনয়নও নির্বিঘ্নে হয়েছে দাবি করে মুকুলবাবু বলেন, “বাংলায় একটা বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হয়েছিল যে কারওকে মনোনয়নই জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু এ দিন তৃতীয় দফার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব নির্বিঘ্নেই মিটেছে বলে খবর পেয়েছি।” কিন্তু বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের অভিযোগ, “তৃণমূলের বাইক বাহিনীর তাণ্ডবে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকে এ দিন বিরোধীরা মনোনয়নই দিতে পারেনি। পুলিশও সাহায্য করেনি।” তাঁদের দাবি, নির্বাচন কমিশন ভোটের নতুন নির্ঘণ্ট ঘোষণা করুক।
সিপিএমের কায়দাতেই তৃণমূল সন্ত্রাস করেছে বলে অভিযোগ মমতার প্রাক্তন জোটসঙ্গী এসইউসি-রও। দলের দাবি, সন্ত্রাসের জেরে তাদের ৩১২ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
প্রার্থী দিতে না পারার জন্য অবশ্য বিরোধীদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন মুকুলবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “জেলা পরিষদে প্রায় ৯৯% আসনে প্রার্থী মনোনয়ন হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, পঞ্চায়েত বা সমিতিতে মহিলা, তফসিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের কারণে বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পরিকাঠামোর অভাবেই এই অবস্থা!
উত্তর ২৪ পরগনার মহিষবাথানে এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে তৃণমূল। সেখানকার তারুলিয়ার মাঠে সভা করে গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে জনতার পরিচয় করিয়ে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সভায় ছিলেন শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। তাঁদের বক্তব্য, বাম জমানায় সিপিএমের সন্ত্রাসে তৃণমূল ওই এলাকায় প্রার্থী দিতে পারত না। কিন্তু এ বার শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হচ্ছে।
ন’টি জেলায় প্রথম দফার ভোটে মোট ৫ হাজার ২৫৬ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন বলে বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে। যা ওই ন’টি জেলার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মোট আসনের ১৪.৫ শতাংশ। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের ৯৮ শতাংশই শাসক দলের বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের হিসাবে, ওই ৯ জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৯ হাজার ৮১৬। তার মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন ৪ হাজার ৫১৬ জন। যার মধ্যে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতেছেন ৪ হাজার ৪৬৮টি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ৫ হাজার ৭৯২টি। তার মধ্যে ৭৩২টি আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছে ৭৩০টি আসনে। অন্য দুটি ১টি কংগ্রেস ১টি নির্দল। এ ক্ষেত্রে কমিশনের হিসাবে বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় জেতা আসন ১২.৬ শতাংশ। জেলা পরিষদে মোট আসন ৫৫১টি। সেখানে মাত্র ৮টি আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। সব ক’টিই জিতেছে তৃণমূল।
|
সরকারি ক্ষেত্রে ভাল কাজে পুরস্কার আর গাফিলতিতে তিরস্কারের কথা বারবার বলা হয়েছে। এ বার ক্ষতি কমাতে পারলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীদের জন্য আর্থিক পুরস্কারের ব্যবস্থা হচ্ছে। আজ, শুক্রবার সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব পেশ করার কথা। ওই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে চলতি আর্থিক বছর (২০১৩-’১৪) থেকেই কর্মীরা এই ‘উৎসাহ ভাতা’ পেতে শুরু করবেন। বণ্টন কতৃর্পক্ষ সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে সংস্থার সংবহনজনিত আর্থিক ক্ষতির বহর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ওই ক্ষতি কমাতে পারলে সেখান থেকে সংস্থার বাড়তি যে-আয় হবে, তার ২% অর্থ ভাগ করে দেওয়া হবে কর্মীদের মধ্যে। এ ছাড়াও বণ্টন সংস্থার বার্ষিক মুনাফার ২% টাকাও উৎসাহ ভাতা হিসেবে পাবেন কর্মীরা। |