এক জন সদ্য মেয়েকে হারিয়েছেন। মেয়ের মৃত্যুর জন্য মেয়ের ‘চিতচোর’কে দায়ী করেছেন। জিয়া খানের মা রাবিয়ার অভিযোগ পেয়ে সুরজ পাঞ্চোলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সুরজের মা, ‘চিতচোর’-এর নায়িকা জারিনা ওয়াহাব। দমবন্ধ এই পরিস্থিতিতে ছুটে গিয়েছেন রাবিয়ার কাছে।
মঙ্গলবার রাবিয়াদের জুহুর ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন জারিনা। রাবিয়ার কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতেই কি? নাকি কোনও সমঝোতাসূত্র নিয়ে আলোচনা করতে? জারিনা নিজে অবশ্য সে কথা বলছেন না। ‘মাই নেম ইজ খান’-এ শাহরুখের মায়ের ভূমিকায় বহু হিতোপদেশ দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এখনও সেই সুরেই বলছেন, “রাবিয়ার যন্ত্রণা এক জন মা হিসেবে আমি বুঝি। তাই ওঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কোনও সমঝোতা করতে যাইনি। আমার ছেলে যদি সত্যিই ভুল করে থাকে, তা হলে শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে।” সুরজের বিরুদ্ধে জিয়াকে ধর্ষণ, নির্যাতন, জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু সাক্ষাৎ-পর্বটা খুব মসৃণ হল কি? জারিনার সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর মেয়ে এবং এক সাংবাদিক বন্ধু। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, জারিনার এই আচমকা আসাটাকে একদম ভাল চোখে নেননি জিয়ার মা। বস্তুত জারিনার কোনও কথাই শুনতে চাননি তিনি। উল্টে জারিনার উপর চোটপাট করে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে বসার ঘর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। সে সময় টম টমাস নামে রাবিয়ার এক বিদেশি বন্ধু উপস্থিত ছিলেন। তিনি জারিনাদের চলে যেতে বলেন। জারিনারা আর অপেক্ষা করেননি। মিনিট দুয়েকের মধ্যে গোটা পর্বটা মিটে যায়। |
এবং জারিনা তার পরে যতই সহমর্মিতা প্রকাশ করুন, রাবিয়াকে এক হাত নিতেও ছাড়েননি। তাঁর বক্তব্য, গত ১৮ মে রাবিয়ার সঙ্গে দেখা করে জিয়ার মানসিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে অনেক কথাই বলে এসেছিলেন সুরজ। জিয়ার কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। রাবিয়া কেন তা করেননি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন জারিনা। তিনি আরও বলেছেন, “কিছু দিন আগে জিয়া হঠাৎ আমাদের বাড়ি এসে বলল, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে এসেছে। ওকে খুব বিচলিত দেখাচ্ছিল। সুরজের তখন ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা ছিল। ও কিন্তু বাড়ির প্রত্যেককে বলে দিয়েছিল, কেউ যেন এক মুহূর্তের জন্য জিয়াকে একা না ছাড়ে।” অর্থাৎ জারিনা প্রমাণ করতে চেয়েছেন, সুরজ জিয়ার যথেষ্ট খেয়াল রাখতেন। জিয়ার সুইসাইড নোট এবং রাবিয়ার কথা থেকে একতরফা নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠে আসছে, তা সত্য নয় বলেই তাঁর দাবি। বরং জারিনার বক্তব্য, প্রেমিক হয়ে সুরজ কিন্তু জিয়ার মানসিক অবস্থার কথা অনেকটাই জানতেন। জানতেন না বরং জিয়ার মা রাবিয়া নিজেই। ক্ষুব্ধ গলায় জারিনা বলেছেন, “জিয়া নিজের ক্ষতি করতে পারে, তা জানত সুরজ। অথচ রাবিয়া নিজের মেয়ের মানসিক অবস্থাটা কোনও দিনই বুঝতে পারেননি।”
ঘটনার দিন সম্পর্ক শেষ করার জন্যই সুরজ ফুলের তোড়া পাঠিয়েছিলেন, এ কথাও মানতে চাননি জারিনা। তাঁর বক্তব্য, নতুন ছবির ‘অফার’ পাওয়ার জন্য জিয়াকে অভিনন্দন জানিয়েই ফুল পাঠিয়েছিলেন সুরজ। আদৌ তা সম্পর্ক শেষের সঙ্কেত ছিল না। জারিনা আরও বলেছেন, “রাবিয়াজি আমায় বলেছেন আমার ছেলে ওঁর মেয়ের উপযুক্ত ছিল না। আমি মেনে নিচ্ছি। জিয়ার দরকার ছিল আরও পরিণত কাউকে। আমার ছেলের বয়স কম। ও হয়তো নিজের মতো করে জিয়ার যত্ন করতে চেয়েছিল।”
আজ সুরজকে আগামী ২৭ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এখন জামিনের আর্জি জানাতে পারবেন তিনি। পুলিশ সুরজকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইলেও বিচারক সেই আর্জি মঞ্জুর করেননি। মুম্বই পুলিশেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, সুরজদের বাড়ির পরিচারকের কাছ থেকে আরও দু’টি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি কে কাকে লিখেছিলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুরজের বাড়ি থেকে মিলেছে জিয়ার গর্ভপাতের রিপোর্টটিও। |
বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে মান্না দে-র শারীরিক অবস্থার আংশিক উন্নতি হয়েছে। যাঁর অধীনে তিনি ভর্তি আছেন, সেই চিকিৎসক থিমাপ্পা হেগড়ে বৃহস্পতিবার এ কথা জানান। তিন সপ্তাহ ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ৯৪ বছরের প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পীর অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। তবে চিকিৎসায় তিনি সাড়া দিচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন কার্যত অচেতন অবস্থায় থাকার পরে সাড় ফিরছে মান্নাবাবুর। তবে নল দিয়ে পথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা চালু থাকায় তাঁর পক্ষে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। |